বালিয়াডাঙ্গী (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি
নিজের বাল্যবিয়ে ঠেকাল নবম শ্রেণির ছাত্রী তসলিমা
বাবা বিয়ে ঠিক করে ফেলেছেন মেয়ে তসলিমার মতামত না নিয়েই। আড়াল থেকে সে কথা শুনে ফেলে ১৪ বছরের মেধাবী ছাত্রী তসলিমা আক্তার। বান্ধবী আর স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সহযোগিতায় অভিযোগ করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে। অভিযোগ শুনে বাবাকে ডেকে মুচলেকা নিয়ে বিয়ে বন্ধ করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। গতকাল মঙ্গলবার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী তসলিমা আক্তার। তার ক্লাস রোল ১। জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় (জেএসসি) জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে।
জানা গেছে, গত রোববার রাতে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও বিদ্যালীপাড়া গ্রামের আবুল কাশেমের মেয়ে তসলিমা আক্তারের বিয়ে ঠিক করা নিয়ে মোবাইল ফোনে কথা বলছিলেন। বিয়ের জন্য একরকম দিন ধার্য করা হয় গত সোমবার। এ সময় পাশের ঘর থেকে কথাগুলো শোনেন তসলিমা।
পরদিন তসলিমা বিদ্যালয়ে আসার পর তার বান্ধবী সুমনা ও নীলাকে বাল্যবিয়ের কথা বিস্তারিত খুলে বলে এবং সোমবার রাতে সুমনাদের বাড়িতেই থাকে।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে দুওসুও উচ্চ বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশীদকে ঘটনার কথা জানালে তিনি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুর রহমানকে মুঠোফোনে বিষয়টি জানান। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আ. মান্নানকে জানালে সঙ্গে সঙ্গে ছুটে যান দুওসুও উচ্চ বিদ্যালয়ে এবং তসলিমার বাবা-মাকে ডেকে এনে ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজে মেয়েকে বাধ্য করবেন না মর্মে মুচলেকা নেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আ. মান্নান বলেন, উপজেলার ৬০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় সাড়ে আট ছাত্রছাত্রীকে বাল্যবিয়েসহ আরও ১১টি সমস্যা মোকাবেলার করার জন্য বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে নিজ নিজ বিদ্যালয়ে পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ছাত্রছাত্রীরা ভবিষ্যৎ জীবনে তা কাজে লাগিয়ে খুব সহজেই তাদের নিজ নিজ সমস্যা সমাধান করতে সক্ষম হবে। তারই ফল হিসেবে তসলিমা আজ নিজের বাল্যবিয়ে ঠেকাতে সক্ষম হয়েছে। এ অঞ্চলে বাল্যবিয়ে রোধে তসলিমা উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
"