অলিয়ার মীর, দেওয়ানগঞ্জ (জামালপুর)

  ১৫ জানুয়ারি, ২০২৪

দেওয়ানগঞ্জে যমুনা

অসময়ে ভাঙনে বসত হারানোর শঙ্কায় মানুষ

সানন্দবাড়ী এলাকার বৃহৎ হাটবাজার, স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনা বিলীনের শঙ্কা

জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জের সানন্দবাড়ীতে অসময়ে যমুনার ভাঙনে ক্ষতির কবলে পড়ছে নদী পাড়ের আবাদী জমি ও বসতভিটা হারানোর স্থানীয় বাসিন্দারা। দীর্ঘ দিন থেকে ওই অঞ্চলে ভাঙন অব্যহত থাকলেও প্রতিকারের ব্যবস্থা নেই বলে অভিযোগ ওই এলাকার বাসিন্দাদের।

জানা গেছে, সানন্দবাড়ী উত্তর দেওয়ানগঞ্জের একটি প্রসিদ্ধ জনপদ। এ অঞ্চলে রয়েছে বৃহৎ হাট-বাজার, স্কুল-কলেজ, মাদরাসাসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনা। উপজেলা সদর থেকে অন্তত ৩০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত সানন্দবাড়ী হাট-বাজার জামালপুর জেলার বৃহৎ হাট-বাজার। সরকার প্রতি বছর এ হাট-বাজার থেকে সর্বাধিক রাজস্ব পেয়ে থাকেন। যমুনা নদীর ভাঙনে এখন সে হাট-বাজার অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, যমুনা নদীর পূর্বপাড় ঘেঁষে তুমুল ¯্রােত। মাঝখানে বালিয়াড়ী। পানি কমে যাওয়ায় নদীর বুকে জেগে ওঠেছে ছোট বড় বালুচর। পূর্বপাড়ে তীব্র ¯্রােত থাকায় ভাঙছে অবিরত। বিগত কয়েক বছরের ভাঙনে ইতোমধ্যে নদীর গর্ভে সানন্দবাড়ী সদরের পশ্চিমের কয়েকটি গ্রাম ভাঙনের কবলে পড়ে বিলীন হয়ে গেছে। তার মধ্যে মন্ডলপাড়া, মৌলভীরচর মুন্সিপাড়া, চুনালীপাড়া, চিথুলীয়া, বাহির পশ্চিমপাড়া, পাটাধোয়াপাড়া, খোলাবাড়ীসহ কয়েকটি গ্রাম যমুনার ভাঙনে বিগত সময় বিলীন হয়ে গেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানায় বিলীন হয়েছে অন্তত ২ হাজার পরিবার এবং কয়েক হাজার বিঘা ফসলি জমি। ফসলি জমি ও ভিটামাটি সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে কয়েক হাজার পরিবার।

সানন্দবাড়ী পশ্চিমপাড়ার ময়নাল হক বলেন, ‘পাটাধোয়াপাড়া গ্রামটি ইতোমধ্যে নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বিলীন হয়ে গেছে মন্ডলপাড়া, মৌলভীরচর মুন্সিপাড়া, চুনালীপাড়া, চিথুলীয়া, বাহির পশ্চিমপাড়া, পাটাধোয়াপাড়া, খোলাবাড়ীসহ কয়েকটি গ্রাম।’

চরআমখাওয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম জানান, এ বছর অসময়ে যমুনা যেমন ভাঙনে এলাকার মানুষজন শঙ্কায় পড়েছেন। দুইএক বছরের মধ্যে সানন্দবাড়ী বিলীন হয়ে যাবে নদীর গর্ভে। বিলীন হবে বৃহৎ হাট-বাজার, স্কুল-কলেজ, মাদরাসা, পুলিশ তদন্তকেন্দ্র, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনা।

চরআমখাওয়া ইউপির চেয়ারম্যান মো. জিয়াউল ইসলাম বলেন, তীব্র ভাঙনের ফলে কয়েক বছরেই যমুনা নদীতে সানন্দবাড়ী অঞ্চলের কয়েকটি বির্ধত গ্রাম বিলীন হয়ে গেছে। নদীর পাড়ে এখন দাঁড়িয়ে আছে পাটাধোয়াপাড়া, মন্ডলপাড়া ও মৌলভীরচরের একাংশ। ভাঙন রোধ না করা হলে ভাঙনের কবলে পড়বে সানন্দবাড়ী সদর।

জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম জানান, সানন্দবাড়ীর নদী ভাঙন স্থানে রোধে ৯০০ মিটার বালি ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে প্রাক প্রতিরক্ষামূলক কাজের জন্য প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। পাশাপাশি ওই স্থানে স্থায়ীভাবে নদী ভাঙন রোধে প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এ কাজের জন্য একটি প্রকল্প পাঠিয়েছি। স্থায়ী ভাঙন রোধের এ প্রকল্পটিতে ইটের ব্লক করে স্থায়ী ভাবে ভাঙন রোধ করা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close