রানীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি

  ০৬ ডিসেম্বর, ২০১৯

ফলের দোকানে পোস্ট অফিস

নওগাঁর রানীনগর উপজেলার আবাদপুকুর হাট শাখা পোস্ট অফিস

ঝড়ে পোস্ট অফিসের মাটির ঘর ভেঙে পড়ায় ৩ মাস ধরে ফলের দোকানে চলছে নওগাঁর রানীনগর উপজেলার সদরের পোস্ট কার্যক্রম। প্রতিমাসে এ অফিস থেকে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা রাজস্ব আয় হলেও সংস্কারের কাজে আগ্রহ দেখাচ্ছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ফলে গ্রাহক সেবা ব্যহতসহ নানা বেগ পোহাতে হচ্ছে কর্মকর্তাদের।

উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার পূর্বে বাণিজ্যিক এলাকা হিসেবে পরিচিত আবাদপুকুর হাটে এ পোস্ট অফিস অবস্থিত। সরেজমিনে দেখা যায়, গ্রাম থেকে সেবা নেওয়ার জন্য আসা গ্রাহকরা প্রথমেই ভাঙ্গাচুড়া মাটির ঘরের পোস্ট অফিস দেখে হোঁচট খান। পরে স্থানীয় দোকানীদের সহযোগীতায় পোস্ট আফিস খুঁজে পায় একটি ফলের দোকানে। ঘরটি ভেঙ্গে পড়ার কারণে নির্ধারিত ভাড়ায় কোন ঘর না পাওয়ায় এক অফিস স্টাফের ফলের দোকানে চলছে এর কার্যক্রম।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্বাধীনতা পূর্ব সরকারের আমলে রাণীনগর উপজেলার পূর্বাঞ্চলের বিশাল জনগোষ্ঠীর ডাক সেবার আওতায় আনার লক্ষ্যে আবাদপুকুর একটি সাব-পোস্ট অফিস স্থাপন করা হয়। অফিসের পার্শ্ববর্তী এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের প্রচেষ্টায় কালীগ্রাম মৌজায় দুই শতক জমির উপর বাঁশের বেড়া দিয়ে তৈরি হয় ছোট্ট ঘর। পরে ওই জমি পোস্ট অফিসের নামেই রেকর্ড ভূক্ত হয়ে যায়। বিভিন্ন সময় প্রাকৃতিক দূর্যোগে এই ঘর ভেঙ্গে গেলে স্থাণীয় কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের প্রচেষ্টায় কয়েক দফায় আর্থিক সহযোগীতায় মাটির দেওয়াল দিয়ে ঘর তৈরি করা হয়।

জানা যায়, পোস্ট মাস্টার, পোস্ট ম্যান ও এক জন রানারের নিরলস প্রচেষ্টায় প্রতি মাসে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা রাজস্ব আয় হয়। কিন্তু ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় নিজস্ব পাকা ভবন তৈরি না হওয়ায় রুগ্ন দশা থেকে মুক্ত পাচ্ছে না পোস্ট অফিসটি।

পোস্ট অফিস সূত্র জানায়, উপজেলার কালীগ্রাম, একডালা ইউনিয়ন, বগুড়া জেলার আদমদিঘী উপজেলার চাপাপুর ইউনিয়নের আংশিকসহ প্রায় ৬০টি গ্রামের বাসিন্দাদের জরুরি ডাক সেবা প্রদান করে যাচ্ছে এই অফিসটি। ইতিমধ্যেই শাখাটি ডিজিটাল করণের লক্ষ্যে একটি ল্যাপটপ, পিন্টারসহ বিভিন্ন উপকরণ সরবরাহ করা হয়েছে। নিরাপত্তার কারণে তথ্যপ্রযুক্তির যুগে আধুনিক জিনিসপত্র ব্যবহার করা যাচ্ছে না। তবে ব্যবহারের সহজলব্য হওয়ায় ইলেকট্রোনিক ম্যানি অর্ডার (ইএমও) সার্ভিস গ্রহদের টাকা-পয়সা লেনদেনের সুবিধার্থে চালু হওয়ায় ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে।

আবাদপুকুর পোস্ট অফিস মাস্টারের দায়িত্ব পালন করছেন এমদাদুল আলম। ফলের দোকানে ডাক কার্যক্রম চালানোর কথা স্বীকার করে প্রতিদিনের সংবাদকে তিনি বলেন, পোস্ট অফিসের নিজস্ব পাকা ভবনের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলমের সুপারিশসহ ২০১২ সালে নিঃকণ্টক জমির জন্য জেলা প্রশাসকের বরাবরে আবেদন করা হয়। জেলা প্রশাসক এই প্রতিষ্ঠানের অনুকুলে আর্থিক বরাদ্দের প্রযোজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য আদেশ দিলে ফাইলটি আমি নিজে ডেপুটি পোস্ট মাস্টার জেনারেল বগুড়া ডিভিশনে জমা দিই। কিন্তু সেখান থেকে পোস্ট মাস্টার জেনারেল উত্তর অঞ্চল রাজশাহীতে প্রেরণ করলে ফাইলটি এখন পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close