বিবিসি

  ০৫ মার্চ, ২০২১

অপরাধী চিনতে এবার র‌্যাবের নতুন প্রযুক্তি

পুলিশের বিশেষ বাহিনী র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বা র‌্যাব দ্রুততম সময়ে এক ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করার জন্য অনসাইট আইডেন্টিফিকেশন অ্যান্ড ভেরিফিকেশন সিস্টেম বা ওআইভিএস নামের একটি নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করতে শুরু করেছে। মূলত বহনযোগ্য একটি ডিভাইসের মাধ্যমে যেকোনো জায়গায় থাকা কোনো ব্যক্তির আঙুলের ছাপ, জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম্বার বা জন্ম তারিখের মাধ্যমে ওই ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করা যাবে এই সিস্টেমের মাধ্যমে।

র‌্যাবের কমিউনিকেশন্স ও এমআইএস উইংয়ের পরিচালক এবং এই সিস্টেমের একজন ডেভেলপার কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন যে অপরাধী শনাক্ত করার জন্য এই প্রযুক্তি আইনশৃঙ্খলা

বাহিনীকে সাহায্য করবে।

‘আগে কোনো অপরাধীকে ধরলে তাকে র‌্যাবের একটি অফিসে নিয়ে গিয়ে তার ফিঙ্গারপ্রিন্ট, এনআইডি নম্বর ও জন্ম তারিখের মাধ্যমে তার পরিচয় নিশ্চিত হতে হতো। কিন্তু এই ডিভাইসের মাধ্যমে যেকোনো স্পটে এক ব্যক্তির পরিচয় শনাক্তের কাজ করা সম্ভব।’

বর্তমানে এই সিস্টেমের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র ডেটাবেইজ, অপরাধীদের ডেটাবেইজ এবং কারাগারের ডেটাবেইজে প্রবেশ করা সম্ভব বলে জানান কমান্ডার মঈন।

অর্থাৎ বহনযোগ্য ডিভাইসে কোনো ব্যক্তির আঙুলের ছাপ, এনআইডি নম্বর ও জন্ম তারিখ প্রবেশ করালে উপরোক্ত ডেটাবেইজগুলোতে ওই ব্যক্তি সম্পর্কে থাকা তথ্য দেখতে পাওয়া যাবে। ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে এই ডিভাইসটি কাজ করবে।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা আশা প্রকাশ করেন যে শিগগিরই সরকারি নির্দেশনা ক্রমে পাসপোর্ট, বিআরটিএ ও পুলিশের কাছে থাকা অপরাধীদের ডেটাবেইজেও এই সিস্টেমের মাধ্যমে প্রবেশ করা সম্ভব হবে।

তবে এই সিস্টেম অপরাধী শনাক্তকরণ বাদেও

বিভিন্ন জরুরি প্রয়োজনে ব্যক্তির পরিচয় নির্ধারণ করার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে বলে জানান তিনি।

যেভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে এই প্রযুক্তি : র‌্যাবের এই নতুন ব্যবস্থা তালিকাভুক্ত থাকা অপরাধীকে শনাক্ত করার পাশাপাশি সন্দেহভাজনদের তালিকায় থাকা ব্যক্তি বা অচেনা ব্যক্তির লাশ শনাক্তেও ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানান কমান্ডার মঈন।

তিনি বলেন, ‘কিছুদিন আগে গাজীপুরে একজন প্রকৌশলীকে হত্যা করা হয়েছিল, যার লাশ পাওয়া যায় সাভারে। ওই লাশ শনাক্ত করার ক্ষেত্রে আমরা এই ডিভাইসটি ব্যবহার করি।’

মৃত্যুর ২৪ ঘণ্টা পর সাধারণত লাশের হাতের আঙুলের ছাপ অক্ষত থাকে না এবং তখন ওই লাশ শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই লাশের পরিচয় শনাক্তের ক্ষেত্রে এই ডিভাইসটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করেন তিনি। এই সিস্টেম ব্যবহার করে কিছুদিন আগে হারিয়ে যাওয়া একজন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির ঠিকানা খুঁজে পাওয়ার কথাও জানান র‌্যাব কর্মকর্তা খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, ‘কিছুদিন আগে কুমিল্লায় একজন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি তার নিজের পরিচয় বলতে পারছিলেন না। পরে এই ডিভাইসের মাধ্যমে তার পরিচয় নিশ্চিত করা হয়।’ এই ডিভাইসের মাধ্যমে অপরাধীদের দ্রুত শনাক্ত করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদী র‌্যাব। মঈন বলেন ‘অনেক সময় অপরাধীরা মিথ্যা পরিচয় দেয়। সে রকম ক্ষেত্রে এই ডিভাইস ও সিস্টেমের মাধ্যমে অপরাধীর আসল পরিচয় জানা সম্ভব হবে।’ এ ছাড়া সন্দেহভাজন অপরাধী বা ব্যক্তির তথ্য এই সিস্টেমে এন্ট্রি করে রাখা যাবে।

কমান্ডার মঈন আশা প্রকাশ করেন যে, ফিঙ্গারপ্রিন্ট, এনআইডি ও জন্ম তারিখের পাশাপাশি ছবির মাধ্যমে যেন ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়, সেই কাজ চলছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close