বিশেষ প্রতিবেদক, রাজশাহী

  ২৫ জানুয়ারি, ২০২০

বদলে যাচ্ছে রাজশাহীর সোনাদীঘির দৃশ্যপট

বদলে যাচ্ছে রাজশাহী নগরীর ঐতিহ্যবাহী সোনাদীঘির দৃশ্যপট। ১৬-তলার সিটি সেন্টার ছাড়াও গড়ে তোলা হচ্ছে বিনোদন কেন্দ্র। তিন বছরের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও ইতোমধ্যে দশ বছর পেরিয়ে গেছে। তবে ফের শুরু হয়েছে এর কাজ। এ বছর বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বছরে কাজটি শেষ হবে বলে জানা গেছে। তাহলে পালটে যাবে রাজশাহী নগরীর ঐতিহ্যবাহী ‘সোনাদীঘি’র দৃশ্যপট।

জানা গেছে, ২০০৯ সালে রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক), আওয়ামী লীগ সরকারদলীয় একজন এমপির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ‘এনা প্রপার্টিজ’-এর সঙ্গে পুরোনো এই নগর ভবনের জায়গায় ১৬-তলার ‘সিটি সেন্টার’ নির্মাণের চুক্তি করে। সেই চুক্তির আওতায় দিঘিকে নতুন করে সাজানোর কথা ছিল। তিন বছরে এই কাজ শেষ করার কথা থাকলেও বাস্তবায়ন হয়নি।

রাজশাহী মহানগরীর ‘সোনাদীঘি’ মোড় অতিপরিচিত এলাকা। আশির দশকে সোনাদীঘির চারপাশ ঘিরে গড়ে উঠতে শুরু করে নানা স্থাপনা। একপর্যায়ে ঢাকা পড়ে যায় ঐতিহ্যবাহী সোনাদীঘি। প্রায় এক যুগ আগে এই সোনাদীঘি দৃশ্যমান করার উদ্যোগ শুরু হয়। এরই অংশ হিসেবে সম্প্রতি সোনাদীঘির চারপাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু হয়েছে।

রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) কর্তৃপক্ষ বলছে, সোনাদীঘিকে এখন অন্তত তিন দিক থেকে দেখা যাবে। এই দিঘিকে কেন্দ্র করে গড়ে তোলা হবে হাঁটার পথসহ মসজিদ, এমফি থিয়েটার (উন্মুক্ত মঞ্চ) ও তথ্যপ্রযুক্তি পাঠাগার।

এ বিষয়ে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হক প্রতিদিনের সংবাদকে জানান, গত শনিবার থেকে সিটি করপোরেশনের বুলডোজার দিয়ে দিঘির পাড়ের অবৈধ দোকানপাট ভাঙা শুরু করেছে। চলতি বছরেই সোনাদীঘি সংস্কারের কাজ শুরু হবে। সংস্কার শেষ হলে দিঘির পূর্ব, উত্তর ও পশ্চিমদিক থেকে সোনাদীঘিকে দেখা যাবে। তখন এটি আগের মতোই নগরীর একটি বিনোদন কেন্দ্রে পরিণত হবে।

হেরিটেজ রাজশাহীর প্রতিষ্ঠাতা মাহবুব সিদ্দিকী বলেন, একসময় সোনাদীঘির চারপাশ উন্মুক্ত ছিল। এর পানি এতটাই স্বচ্ছ ছিল যে, তা দিয়ে এলাকাবাসীর রান্নার কাজও চলত। পানিতে যাতে কেউ ময়লা ফেলতে না পারে, তা তদারকির দায়িত্বে থাকতেন রাজশাহী পৌরসভার কর্মচারীরা। এই দীঘিটি পদ্মা নদীর সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত ছিল। ফলে এ দিঘিতে ভরা বর্ষা মৌসুমে পদ্মার পানি ঢুকত। নদীর ঘোলা পানি থিতিয়ে যাওয়ার পর দেখা মিলত স্বচ্ছ পানির। শুধু তা-ই নয়, একসময় নগরবাসীর বিনোদনের কেন্দ্রও ছিল এই দিঘি। এর পাশ দিয়ে ছিল পামগাছ ও বসার জন্য বেঞ্চ। সে সময় সোনাদীঘির পাড়ের বেঞ্চে বসে প্রকৃতির নির্যাস নিয়েছে নগরবাসী। বিকেল হলেই দিঘির পাড়ে বিনোদনপ্রেমীদের আসর বসত। দিঘির পাড়টি ছিল একটা বাগানের মতো। দিঘির পানিও ছিল টলটলে। তবে সংস্কার করলে ওই রূপে ফিরবে কি না জানি না।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close