ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সবখানেই শেখার আছে : সুজন

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) অনাপত্তি পত্রের শর্তানুযায়ী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত আইপিএলে থাকার কথা ছিল মুস্তাফিজুর রহমানের। অর্থাৎ ২৮ এপ্রিল সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিপক্ষে ম্যাচ খেলেই বাংলাদেশের বিমান ধরতে হতো বাঁহাতি এই পেসারকে। তবে চেন্নাই সুপার কিংসের জার্সিতে আরো এক ম্যাচ বেশি খেলার সুযোগ পাচ্ছেন কাটার মাস্টার। ১ মে আরেকটি ম্যাচ বেশি খেলে বাংলাদেশে ফিরবেন মুস্তাফিজ। এ নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। যদিও জালাল ইউনুসের মতে, মুস্তাফিজের আইপিএলে কিছুই শেখার নেই। উল্টো তার কাছ থেকে শিখবে আইপিএলের ক্রিকেটাররা! এই মতামতের ‘সঠিক ব্যাখ্যা’ দেওয়ার চেষ্টা করেছেন খালেদ মাহমুদ সুজন। ক্রিকেট অপারেশন্সের ভাইস-চেয়ারম্যানের মতে, জালাল ইউনুস ভুলভাবে কিছু বলেননি।

জিম্বাবুয়ে সিরিজের জন্য বাংলাদেশে ফেরার আগে ১ মে পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে খেলবেন মুস্তাফিজ। ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত অনাপত্তি পত্র দেওয়া হলেও পাঞ্জাবের বিপক্ষে খেলার জন্য মুস্তাফিজকে এক দিন ছুটি বাড়িয়ে দেয় বিসিবি। পাঞ্জাবের বিপক্ষে ম্যাচ খেলে পরদিন বাংলাদেশে আসবেন মুস্তাফিজ। এরপর ৩ মে থেকে শুরু হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি সিরিজের দলে যোগ দেবেন বাঁহাতি এই পেসার। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ শেষে কয়েক দিন বিরতি থাকলেও তাকে আইপিএল খেলতে পাঠাবে না বিসিবি। যদিও সাবেক ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান ও বিসিবি পরিচালক আকরাম খানের মতে, মুস্তাফিজ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে না খেলে আইপিএলে খেললেই বেশি শিখতে পারতেন তিনি। এ নিয়ে গণমাধ্যমের কাছে কয়েক দিন আগেই বিবৃতি দেন আকরাম। তারপর ক্রিকেট অপারেশন্সের বর্তমান চেয়ারম্যান জালাল জানান, শুধু জিম্বাবুয়ে সিরিজে খেলা নয়, দীর্ঘস্থায়ী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মুস্তাফিজকে ফিরিয়ে আনছেন তারা। এদিকে সুজনও মনে করছেন দেশ আগে, তবে শেখার সুযোগ সব সময়ই আছে বলে জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমকে সুজন বলেন, ‘দেশ তো সবার আগে। এটা আমি সব সময়ই বলি। দেশকে প্রতিনিধিত্ব করার চেয়ে আনন্দ কিছুতেই নেই। তবে সিচুয়েশন যেভাবে ডিমান্ড করে, তারা যেভাবে চিন্তা করেছেন... আমি আসলে জাতীয় দলের সঙ্গে ওভাবে নেই আসলে। অপারেশন্সের ভাইস চেয়ারম্যান হলেও আমি আবাহনীর খেলার কারণে সেভাবে যাচ্ছি না মিটিংগুলোয়। আমি জানিই না আসলে। অবশ্যই জালাল ভাইরা চিন্তা করেই বক্তব্যটা দিয়েছেন। তিনি ক্রিকেট অপারেশন্সের অভিভাবক। তিনি যেটা বলেছেন আমাকে ওটাই বলে নিতে হবে যে, তার কথাই ঠিক। এটাই আমার ধরে নিয়ে যেতে হবে।’

‘শেখার সবখানেই আছে। প্রিমিয়ার লিগেও শেখার আছে। আজকে একটা সিনারিও থেকেও শেখার থাকতে পারে। সেটা কোনো সমস্যা নেই। হয়তোবা তিনি এটাকে ওইভাবে মিন করেননি। তিনি বলেছেন, মুস্তাফিজ এত বছর ধরে ওখানে খেলছে। মুস্তাফিজ তো এখন আর তানজিম সাকিবের মতো না। ও এখন মুস্তাফিজ। মুস্তাফিজ এখন বিশ্ব ক্রিকেটে অনেক বড় নাম। জালাল ভাই এই এঙ্গেল থেকেই কথাটা বলেছেন যে, মুস্তাফিজ অভিজ্ঞ অনেক। ইন্ডিয়ার অনেক তরুণ বোলাররা ওর থেকে কাটার বা কিছু শিখতে পারে। এভাবেই কথাটা বলেছে। এটাকে অন্য কোনো মিন করাটা আমার মনে হয় না ঠিক হবে। তবে আমি মনে করি, দেশ সবার আগে। এটা মাথায় নিতে হবে। মুস্তাফিজ যদি (পুরো আসর) আইপিএল খেলতে পারত আমিও খুশি হতাম। দেশের খেলা না থাকলে আর সমস্যা হতো না। অনেকেই বলবে, নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটাররাও আইপিএল খেলছে...ওরা তো (পাকিস্তানে খেলছে)। আমাদের দেশে তো দশটা মুস্তাফিজ নেই আসলে। সবচেয়ে বড় কথা এটাই। এটাও চিন্তা করতে হবে।’

এর আগের দিন জালাল ইউনুস জানান, যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাওয়ার আগে মুস্তাফিজকে বিশ্রাম দিতে চায় তারা। যাতে করে সতেজ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে এবং টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলতে পারেন। এ কারণেই তাকে ভারত থেকে উড়িয়ে আনছে বিসিবি। মুস্তাফিজের আইপিএলে কিছু শেখার নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

জালাল বলেছিলেন, ‘মুস্তাফিজের আইপিএলে শেখার কিছু নাই। মুস্তাফিজের শেখার সময় পার হয়ে গেছে। বরং মুস্তাফিজের থেকে শিখতে পারে আইপিএল খেলোয়াড়রা। এতে বাংলাদেশের কোনো লাভ হবে না। মুস্তাফিজের কাছে পেলে অন্যদের সুবিধা হবে। আইপিএল আপনাদের কাছে মনে হয় শুধু ৪ ওভারের খেলা। কিন্তু এটা কি জানেন কতটা ধকল নিতে হয়? খেলা শেষে রাত ১টায় এয়ারপোর্টে ঘুমিয়ে থেকে তাদের ট্রাভেল করতে হয়। এটা অনেক কষ্ট। তারা চাইবে মুস্তাফিজ থেকে শতভাগ নেওয়ার জন্য। মুস্তাফিজের ফিটনেস, স্বাস্থ্য এসব নিয়ে তাদের মাথা ব্যথা নেই, কিন্তু আমাদের আছে।’ মুস্তাফিজকে এখানে ফেরানোর কারণ শুধু জিম্বাবুয়ে সিরিজের জন্য নয়। জিম্বাবুয়ে সিরিজে আমরা তাকে ওয়ার্ক লোড ঠিক রেখে খেলাব। আইপিএলে থাকলে সেই পরিকল্পনা হবে না। সুতরাং মুস্তাফিজের শেখার অধ্যায় শেষ। মুস্তাফিজকে শেখানোর আর কোনো দরকার নেই। সে সাত-আট বছর ধরে ক্রিকেট খেলে। আইপিএলে খেলে। তো লাভবান তারা হবে, আমরা হবো না। মুস্তাফিজকে দেশে ফিরিয়ে আনা মানেই যে আমরা তাকে জিম্বাবুয়ে সিরিজে খেলাব তা নয়। আমরা তাকে ওয়ার্ক লোড দেব, চাপ কমাব, দলের সঙ্গে থাকবে, বোঝাপড়া বাড়বে। বিশ্বকাপের মতো একটা বড় ইভেন্টে যাচ্ছে, যাওয়ার আগে তো অ্যাডজাস্ট করতে হবে। ফিট থাকতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close