ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ০৬ আগস্ট, ২০২১

আজই সিরিজ জয়ের প্রত্যয়

পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে প্রথম দুই ম্যাচ জিতে এরই মধ্যে ২-০ তে সিরিজে এগিয়ে স্বাগতিক বাংলাদেশ। এখন সিরিজে ফিরতে মরিয়া সফরকারী অস্ট্রেলিয়া। মিরপুরে মন্থর-টার্নিং উইকেট হলেও একাদশে তিন পেসার খেলাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। পেসারদের দিয়েই করাচ্ছে বেশির ভাগ ওভার। তবে প্রথম দুই ম্যাচ হারের পর এই ভাবনায় আসতে পারে বদল। উইকেটের কন্ডিশন বুঝে স্পিনারদের দিয়ে আরো বেশি ওভার বল করানোর ভাবনা কাজ করছে তাদের মাথায়।

মিরপুরের উইকেটে ধীর গতির বোলাররাই বরাবর পান সাফল্য। পেসারদেরও এখানে সাফল্য পাওয়ার মূল মন্ত্র গতি বৈচিত্র্য।

অ্যান্ড্রু টাই নাকাল বল আর স্লোয়ারে চেষ্টা করছেন। জশ হ্যাজেলউডও গতি বৈচিত্র্য আনছেন। কিন্তু মিচেল স্টার্কের মূল স্কিলই গতি, সুইং আর লেন্থ নির্ভর। দুই ম্যাচে গতি দিয়ে ৩ উইকেট পেলেও দলের সবচেয়ে খরুচে বোলার তিনিই। প্রথম ম্যাচে তার ইকোনমি রেট ছিল ৮.২৫, দ্বিতীয় ম্যাচে ৯.৩৩। লো স্কোরিং ম্যাচে যা বেশ খরুচে।

মূল পাঁচ বোলারের বাইরে এখন পর্যন্ত কেবল মিচেল মার্শকে ১ ওভার করিয়েছেন ম্যাথু ওয়েড। তবে মার্শও মিডিয়াম পেসার। দলে থাকা অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার অ্যাস্টন টার্নারকে দিয়ে এখনো বল করানো হয়নি। বাংলাদেশ একাদশে প্রচুর বাঁহাতি থাকলেও অজিরা সে পথে হাঁটেনি।

গতকাল ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বাঁহাতি স্পিনার অ্যাস্টন অ্যাগার আভাস দিলেন, পরের খেলাগুলোতে স্পিনারদের দায়িত্ব বাড়ানোর দিকে যেতে পারে তাদের দল, ‘অবশ্যই এটা একটা বিকল্প। আমাদের কিছু স্পিনার বেঞ্চে বসে আছে। মিচেল সোয়েপসন আর তানভীর সাঙ্ঘা আছে। অবশ্যই অ্যাস্টন টার্নার ওয়েস্ট ইন্ডিজে বেশ ভালো বল করেছে, সেও বল করতে পারে। আমরা উইকেট দেখে যা বুঝলাম স্লো বোলাররাই এখানে মূল ভূমিকা নিচ্ছে। এটা অবশ্যই হতে পারে। এটা নির্ভর করবে দলের ওপর।’

বোলিং তবু জুতসই হচ্ছে। ব্যাটিং নিয়েই যত ভোগান্তি সফরকারীদের। সিরিজে ফিরতে হলে আজ বাংলাদেশকে হারাতেই হবে। সে লক্ষ্যে সতর্ক পথে হাঁটাকে বড় উপায় ভাবছেন অ্যাগার, ‘খেলাটা যত গভীরে নিয়ে যাওয়া যায় সেটা দেখতে হবে। উইকেট টিকিয়ে রেখে শেষ পর্যন্ত যেতে হবে, আমার মনে হয় এটা সেরা একটা পথ হতে পারে। ঝুঁকি নেওয়ার জন্য খুবই কঠিন উইকেট। আমরা যদি পাওয়ার প্লেতে ভালো শুরু পাই তাহলে সেটা সম্ভব। আগের দিন শুরুটা ভালো ছিল আলেক্স ক্যারি রিভার্স সুইপে রান এনেছিল। পরে মার্শ কিছু রান বের করেছি। কিন্তু আমরা শেষ দিকে ভালো করতে পারিনি।’

বাংলাদেশে এসে মন্থর আর টার্নিং উইকেট পাওয়ার প্রত্যাশা ছিল অস্ট্রেলিয়ার। তবে বাস্তবে যা পেয়েছে তা নাকি তাদের ধারণাতেও ছিল না। উইকেটের পরিস্থিতি বুঝে আদর্শ ক্রিকেট খেলে অজিদের কাবু করেছে বাংলাদেশ। মোজেজ হেনরিকস বলছেন, বাংলাদেশ ক্রিকেট বুদ্ধিমত্তাতেও তাদের হারিয়েছে।

প্রথম ম্যাচে আগে ব্যাট করে মাত্র ১৩১ রান করেছিল বাংলাদেশ। অজিদের ধারণা ছিল রান তাড়া হবে সহজ। কিন্তু ব্যাট করতে গিয়ে ১০৮ রানেই আটকে যায় তারা। পরের ম্যাচে আগে ব্যাটিং বেছেও লাভ হয়নি। পুরো ২০ ওভার ব্যাট তুলতে পারে মাত্র ১২১ রান।

৮ বল আগে ওই রান পেরিয়ে ৫ উইকেটে জিতে যায় বাংলাদেশ। ম্যাচ শেষে এই দলটির অভিজ্ঞ তারকা হেনরিকস বলছেন পরিস্থিতি বিচারে স্মার্ট ক্রিকেট খেলেছে বাংলাদেশ, ‘আসলে আমার মনে হয় ওরা আজ আমাদের চেয়ে অনেক বেশি স্মার্ট ছিল। ওদের ক্রিকেট বুদ্ধিমত্তা বেশি ছিল। বর্ষার সময়ে ওরা এরকম উইকেটে বেশি খেলেছে। সেই অভিজ্ঞতা তাদের কাজে লেগেছে।’

আইপিএলে খেলার কারণে উপমহাদেশের উইকেটে বেশ পরিচিত হেনরিকস। তবে ভারতের সেসব উইকেটের সঙ্গেও যেন মিলছে না মিরপুরের বাইশ গজ। তার মতে এমন প্রতিকূল কন্ডিশন আর তারা পাননি, ‘আইপিএলে আমি ৬০ ম্যাচ খেলেছি। কিন্তু এই উইকেটে খেলে মনে হচ্ছে এটাই সবচেয়ে কঠিন, প্রতিকূল।’

‘তরুণদের নিয়ে আমরা এসেছে, অনেকেই অস্ট্রেলিয়ার হয়ে আগামীতে অনেক খেলবে। আমার মনে হয় না এর চেয়ে কঠিন কন্ডিশন তারা পাবে।’

‘এখানে দ্রুত মানিয়ে নিতে হবে, অজুহাতের কিছু নেই। তবে এই পরীক্ষায় পড়াটা আমাদের জন্য দারুণ। আমার মনে হয় না দেশের বাইরে এর চেয়ে কঠিন কন্ডিশন আমরা পাব।’

মন্থর উইকেটে স্লো বোলারদের ওপরই বেশি আস্থা রেখেছে বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়া যেখানে তিন পেসার খেলিয়েছে বাংলাদেশ রেখেছে দুজন। তাও মোস্তাফিজ বেশির ভাগ বলই করেছেন ধীরগতির। এই জায়গায় স্বাগতিকরা এগিয়ে গেছে বলে ধারণা হেনরিকসের, ‘ওরা পাওয়ার প্লেতে ৬ ওভারই স্পিন করিয়েছে। উইকেটের আচরণ তারা জানত, সেই সুবিধা পেয়েছে। আমরা ভাবতেই পারিনি, উইকেট এমন হবে।’

দুই ম্যাচের ধাক্কায় উইকেট নিয়ে একটা ধারণা পেয়েছে সফরকারীরা। সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচে তা কাজে লাগিয়ে ফিরতে মরিয়া তারা, ‘তবে এখন উইকেট জানা হলো। আমাদের পারফরম্যান্স পর্যালোচনা করা দরকার। এমন পরিকল্পনা নিতে হবে যাতে লক্ষ্যটা ছুঁতে পারি।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close