ক্রীড়া ডেস্ক

  ২১ জুন, ২০২১

হতাশার ড্রয়ে শঙ্কায় স্পেন

পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ জেরার্ড মোরেনোর ব্যাপারে ‘ফুটবল এক্সট্রা’ অনুষ্ঠানের সঞ্চালক মানস সিং প্রশ্ন করতেই মাঠে থাকা সাংবাদিক অ্যান্ডি মিটেন বললেন, ‘মোরেনো কেন, এই পেনাল্টি কিক তো রামোসের নেওয়ার কথা। রামোস নিশ্চয় এ রকম সুযোগ হাতছাড়া করতেন না।’

নেতৃত্বে-নিবেদনে সার্জিও রামোস নিজেকে এমন একপর্যায়ে নিয়ে গেছেন যে, ঘুরেফিরে তার নাম আসছেই। উয়েফা ইউরোয় না থেকেও তিনি আছেন ম্যাচের প্রতিটি পরতে, প্রতিটি বাঁকে। রিয়াল মাদ্রিদবিদ্বেষী স্প্যানিশ কোচ লুইস এনরিকের প্রতিহিংসার শিকারে পরিণত হওয়া রামোসের অনুপস্থিতি হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে তারা। আসরে নিজেদের প্রথম ম্যাচে সুইডেনের বিপক্ষে ড্রয়ের পর আবার পয়েন্ট হারিয়েছে স্পেন। ঘরের মাঠ স্তাদিও লা কার্তুহায় এবার পোল্যান্ডের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করেছে এনরিকের শিষ্যরা।

পরশু রাতে আক্রমণভাগের দুই তারকা আলভারো মোরাতা ও জেরার্ড মোরেনোর বোঝাপড়ায় প্রথমার্ধে এগিয়ে গিয়েছিল স্পেনই। তবে বিরতির পর রবার্ট লেভানডফস্কির লক্ষ্যভেদে সমতায় ফেরে পোল্যান্ড। টানা দুই ড্রয়ে শেষ ষোলোয় ওঠা নিয়ে শঙ্কায় পড়ে গেছে স্প্যানিশরা। ২ পয়েন্ট নিয়ে ‘ই’ গ্রুপের পয়েন্ট তালিকার তিনে নেমে গেছে তারা। নক-আউটের আশা বাঁচিয়ে রাখা পোলিশদের অর্জন ১ পয়েন্ট। তারা আছে তলানিতে। ৪ পয়েন্ট নিয়ে সুইডেন শীর্ষে ও ৩ পয়েন্ট নিয়ে স্লোভাকিয়া দুইয়ে রয়েছে।

আগামী বুধবার বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় একই ভেন্যুতে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে স্লোভাকিয়ার মুখোমুখি হবে স্পেন। একই সময় সেন্ট পিটার্সবার্গে সুইডেনকে মোকাবিলা করবে পোল্যান্ড।

বরাবরের মতো স্পেন ম্যাচ জুড়ে বল দখলে আধিপত্য করলেও গোলমুখে প্রথম শটটি নেয় পোলিশরা। চতুর্থ মিনিটে ২০ গজ দূর থেকে নেওয়া মাতেয়াস ক্লিচের শট ক্রসবারের ওপর দিয়ে চলে যায়। ছয় মিনিট পর স্প্যানিশরা ভীতি ছড়ায় প্রতিপক্ষের রক্ষণে।

বাঁ প্রান্ত দিয়ে আক্রমণে ওঠা আরবি লাইপজিগের মিডফিল্ডার দানি ওলমোর কোনাকুনি শট সহজেই লুফে নেন ভোইচেখ সেজনি। দুই মিনিট পর ৩৫ গজ দূর থেকে পাউ তোরসের উচ্চাভিলাষী শটও ভাবনায় ফেলতে পারেনি জুভেন্টাসের এই গোলরক্ষককে।

১৯ মিনিটে এগিয়ে যেতে পারত স্পেন। পেদ্রির কাছ থেকে বল পেয়ে গোলমুখে ফেলেন মোরাতা। পোল্যান্ডের রক্ষণভাগ তা বিপন্মুক্ত করতে ব্যর্থ হলে ফাঁকায় থাকা রদ্রির সামনে আসে সুযোগ। কিন্তু ম্যানচেস্টার সিটির এই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার শট নেন হাওয়ায়।

স্বাগতিকদের আফসোসে অবশ্য স্থায়ী হয়নি বেশিক্ষণ। ২৫ মিনিটে ডি বক্সের প্রান্ত থেকে মোরেনোর গড়ানো পাসে সঙ্গে লেগে থাকা ডিফেন্ডারকে এড়িয়ে খুব কাছ থেকে জাল খুঁজে নেন মোরাতা। শুরুতে অফসাইডের পতাকা তুলেছিলেন লাইন্সম্যান। পরে রেফারি ভিএআরের সাহায্য নিয়ে গোলের সিদ্ধান্ত দিলে উল্লাসে মাতে স্পেন।

সাম্প্রতিক ম্যাচগুলোতে গোলের দেখা না পাওয়ায় চাপে ছিলেন মোরাতা। একাদশে তার জায়গা নিয়ে উঠছিল প্রশ্ন। তার পরও এই ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে এনরিকে তাকে খেলানোর নিশ্চয়তা দিয়েছিলেন। আস্থার প্রতিদান দিয়ে গোল উদ্যাপনের সময় কোচের সঙ্গে আলিঙ্গন করেন জুভেন্টাসের এই ফরোয়ার্ড।

৩৪ মিনিটে বিপজ্জনক জায়গা থেকে মোরেনোর ফ্রি কিক লক্ষ্যে থাকেনি। পরের মিনিটে পাল্টা আক্রমণে লেভানডফস্কির ক্রসে ক্যারল সুইডারেস্কির ভলি ঠিকানা খুঁজে পায়নি। অথচ হেড করার মতো উচ্চতায় ছিল বল।

৪৩ মিনিটে সমতায় ফেরার খুব কাছে পৌঁছে গিয়েছিল পোল্যান্ড। আলবার কাছ থেকে বল কেড়ে নিয়ে কামিল জোজিয়াক বাড়ান সুইডারেস্কিকে। তার বাঁকানো শট বাধা পায় পোস্টে। এরপর আলগা বলে লেভার প্রচেষ্টা অসাধারণ দক্ষতায় রুখে দেন গোলরক্ষক উনাই সিমোন।

দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়ায় অতিথিরা। জোজিয়াকের অসাধারণ ক্রসে হাওয়ায় ভেসে হেড করেন ফিফার বর্ষসেরা ফুটবলার লেভানডফস্কি। চার মিনিট পরই ফের পিছিয়ে পড়তে পারত তারা। কিন্তু ভিএআরের সহায়তায় পাওয়া পেনাল্টি পোস্টে লাগান ভিয়ারিয়ালের হয়ে ইউরোপা লিগ জেতা মোরেনো। ফিরতি শটে মোরাতাও পারেননি ফাঁকা জালে বল পাঠাতে।

বাকিটা সময় রক্ষণ জমাট রেখে খেলে পোলিশরা। তাদের প্রাচীর ভাঙার বেশ কিছু সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারেনি স্বাগতিকরা। ৬৫ মিনিটে দুরূহ কোণ থেকে মোরাতার শট ঠেকান তার ক্লাব সতীর্থ সেজনি।

৭৩ মিনিটে ডি বক্সে ফাঁকায় থাকলেও বদলি ফেরান তোরেসের হেড হয় লক্ষ্যভ্রষ্ট। এরপর রদ্রির শট সোজা গিয়ে জমা পড়ে পোলিশ গোলরক্ষকের গ্লাভসে। তিন মিনিট পর ফের দলকে বাঁচান তিনি। পাবলো সারাবিয়ার নিজে শট না নিয়ে গোলমুখে পাস দেন মোরাতাকে। তার শট এগিয়ে এসে বুক পেতে রক্ষা করেন সেজনি।

স্পেন ১

পোল্যান্ড ১

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close