ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ১৪ জুলাই, ২০২০

ক্রিকেটের দুয়ার খোলার প্রক্রিয়া শুরু

এক, দুই, তিন করে চার মাস কেটে গেছে। আর কত? আর সব ক্রীড়াবিদের মতো প্রশ্নটা এখন ক্রিকেটারদের মুখে মুখে। করোনা মহামারির মধ্যেও সবকিছু যখন খুলে দেওয়া হয়েছে, তখন ক্রিকেটের দুয়ার খুলতে সমস্যা কোথায়?

আইসিসি অনেক আগেই ক্রিকেট বোর্ডগুলোকে তাদের গাইডলাইন ঠিক করে দিয়েছে। সেই গাইডলাইন মেনেই পরশু সফলভাবে শেষ হয়েছে ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার প্রত্যাবর্তন ম্যাচ। চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তানের ক্রিকেটাররা আবাসিক ট্রেনিং ক্যাম্প করছেন গত মাস থেকে। ইংল্যান্ড সফরে থাকা পাকিস্তান দলও কোয়ারেন্টাইনের ফাঁকে অনুশীলন করছে হোটেলের পার্শ্ববর্তী মাঠে।

সবাই যখন ফিরছে, তখন তামিম ইকবাল-মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা আরো কিছুদিন ঘরবন্দি থাকা মানে তো দেশের ক্রিকেট কয়েক ধাপ পিছিয়ে পড়া! ব্যাপারটা ভালোভাবেই আঁচ করতে পেরেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বাফুফে)। সে কারণেই হোম অব ক্রিকেট মিরপুর শেরেবাংলার বদ্ধ দুয়ার খুলতে তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছেন বোর্ড কর্তারা। সামনের সপ্তাহ থেকে ব্যক্তিগত ফিটনেস অনুশীলনের জন্য শেরেবাংলায় আসতে পারবেন মুশফিকুর রহিম-মুস্তাফিজুর রহমানরা। তাতে স্বাভাবিক চিত্র না ফিরলেও কিছুটা হলেও ভাঙবে ক্রিকেট পাড়ার নিস্তব্ধতা। করোনাভাইরাসের ধাক্কা সামলে জাতীয় ক্রিকেট দলের মাঠে ফেরার প্রক্রিয়াও তাই ধীরে ধীরে বাস্তবে পরিণত হবে।

এরই মধ্যে নির্বাচকদের বিবেচনায় থাকা পুলের খেলোয়াড়দের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগ। মিরপুরে ফিটনেস অনুশীলন করতে আগ্রহীদের তালিকাও তৈরি করা হচ্ছে। ফিটনেস অনুশীলনের জন্য জিমনেসিয়াম ছাড়াও প্রয়োজনীয় সবকিছুই ব্যবহার করতে পারবেন ক্রিকেটাররা। রানিং করা যাবে বিসিবির একাডেমি মাঠ ও শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে। করোনার কারণে ১৬ মার্চের পর ক্রিকেট না হওয়ায় মাঠ দুটি পেয়েছে নতুন প্রাণশক্তি। বিসিবির মাঠকর্মীদের নিয়মিত পরিচর্যার ফলে ফিরে এসেছে গাঢ় সবুজ রূপ।

করোনাকালে ক্রিকেটারদের অনুশীলনের রোডম্যাপ তৈরির দায়িত্ব ন্যস্ত হয়েছে বিসিবির মেডিকেল বিভাগের ওপর। প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী জানিয়েছেন, তারা সরেজমিনে ক্রিকেটারদের অনুশীলন ব্যবস্থাপনার খুঁটিনাটি পর্যবেক্ষণ করেছেন। স্বাভাবিকভাবেই এ সময়ে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি, ‘ফিটনেসের কাজ করার জন্য যে সব প্রস্তুত রাখা দরকার, সেটি আমরা করছি। আজ (গতকাল) আমরা সরেজমিনে ঘুরে দেখেছি। আগামী সপ্তাহ থেকে কাজ শুরু করতে পারবেন ক্রিকেটাররা। সুনির্দিষ্ট তারিখ বলতে পারছি না, কেননা দুই-এক দিন এদিক-সেদিক হতে পারে।’

দেবাশীষ চৌধুরী আরো বলেন, ‘অনুশীলনে আগ্রহীদের সংখ্যা জানতে পারলে আমরা সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করতে পারব। এক দিনে কতজন কাজ করবে সেটি নির্ভর করছে প্রকৃত সংখ্যার ওপর। কাজটা হবে শুধু ফিটনেস নিয়ে। এজন্য যা যা প্রয়োজন সব ব্যবহার করতে পারবেন খেলোয়াড়রা।’

ব্যক্তিগত চাওয়ায় মিরপুরে ফিটনেস অনুশীলন আগামী সপ্তাহ থেকে চালু হলেও স্কিল নিয়ে কাজ করতে অপেক্ষা করতে হবে আরো কিছুটা সময়। যদিও মুশফিক, সাইফউদ্দিন, ইবাদতরা নিজ উদ্যোগে ব্যাটিং-বোলিং শুরু করে দিয়েছেন। তবে সরকারের তরফ থেকে সবুজ সংকেত না পাওয়া পর্যন্ত বিসিবি আনুষ্ঠানিকভাবে খেলোয়াড়দের অনুশীলনে ডাকবে না।

এ ব্যাপারে বোর্ডের প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরীর ভাষ্য, ‘আমরা খেলোয়াড়দের এখনো ঘরে বসেই ফিটনেসের কাজ করতে বলছি। মাঠে নামতে অনুৎসাহিত করছি। করোনা পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি আমরা। সরকারের ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছি। সবুজ সংকেত মিললেই ক্রিকেট ফিরবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরাও চাইছি যত দ্রুত সম্ভব ক্রিকেট শুরু হোক। যদি কোনো খেলোয়াড় ব্যক্তিগত উদ্যোগে শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে অনুশীলন করতে চায়, তাহলে করতে পারবে। সে ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close