জীবনযাপন ডেস্ক

  ১৬ জানুয়ারি, ২০২১

যোগ ব্যায়ামেই ভালো থাকবে হৃদ্যন্ত্র

যোগ ব্যায়ামে মন শান্ত থাকে, নমনীয়তা বাড়ে শরীরের, এটুকুই জানা ছিল শুধু। সাম্প্রতিক গবেষণা থেকে জানা গেল আরো কিছু তথ্য। বিজ্ঞানীরা জানালেন, দিনে মিনিট ২০ যোগ ব্যায়াম ও ধ্যান করলে হার্টও ভালো থাকে। নিয়ন্ত্রণে থাকে ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ। কাজেই এই কোভিডের বাড়াবাড়ির সময় নিয়মিত যোগ ব্যায়াম করলে সে সমস্যাও বশে থাকার কথা। কারণ হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, সবই কোভিডের কোমর্বিডিটি। এসব সমস্যা থাকলে কোভিড জটিল রূপ ধরতে পারে। বিভিন্ন গবেষণাপত্রে এর সপক্ষে যুক্তিও পাওয়া গেছে। সেগুলো কী, আসুন দেখে নেওয়া যাক।

* ইউরোপিয়ান জার্নাল অব কার্ডিওভ্যাসকুলার নার্সিংয়ে প্রকাশিত এক প্রবন্ধে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন বা অ্যারিদমিয়ার রোগীরা বিশেষজ্ঞের পরামর্শমতো সপ্তাহে মাত্র ৩০ মিনিট হালকা যোগ ব্যায়াম করলে ১২ সপ্তাহের মাথায় তাদের হৃৎস্পন্দন ও রক্তচাপ অনেক স্থিতিশীল হয়। মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। উন্নত হয় জীবনযাপনের মান।

* হৃদরোগের এক বড় কারণ হলো শুয়ে-বসে থাকা। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন যোগ ব্যায়াম করলে সে সপ্তাহে দুদিন হলেও, ১০ সপ্তাহের মধ্যে অধিকাংশ মানুষ আগের চেয়ে বেশি নিয়মনিষ্ঠ ও কর্মক্ষম হন। হৃদরোগের আশঙ্কা কমে।

* যোগা ও প্রাণায়ামে মানসিক চাপ কমে। তার হাত ধরে কমে হার্টের ওপর চাপ।

* আমেরিকান জার্নাল অব হাইপারটেনশনে প্রকাশিত এক প্রবন্ধে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মোটামুটি আট সপ্তাহ যোগ ব্যায়াম করার পরই উচ্চ রক্তচাপের প্রকোপ কমতে শুরু করে। শারীরিক সক্ষমতা বাড়া ও মানসিক চাপ কমাই এর অন্যতম কারণ।

* ৪০ জন হার্ট ফেলিওরের রোগীকে যথাযথ চিকিৎসার পাশাপাশি ৮ থেকে ১০ সপ্তাহের মধ্যে ১৬ বার যোগ ব্যায়াম করিয়ে বিজ্ঞানীরা দেখেন, অন্যান্য উন্নতি হওয়ার পাশাপাশি তাদের শ্বাসকষ্ট প্রায় ২২ শতাংশ কমে গেছে।

* জার্নাল অব আমেরিকান কলেজ অব কার্ডিওলজিতে প্রকাশিত প্রবন্ধ থেকে জানা গেছে, এট্রিয়াল ফিব্রিলেশন নামে দ্রুত ও অনিয়মিত হৃৎস্পন্দনের যে মারাত্মক অসুখ আছে, যা থেকে স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাক হতে পারে, তার প্রকোপও কিছুটা কমতে পারে নিয়মিত যোগ ব্যায়াম করলে।

* যদিও এই তত্ত্বকে দৃঢ় ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত করতে আরো গবেষণার দরকার, কিন্তু কিছুটা যে উন্নতি হয়, তা নিয়ে বিজ্ঞানীদের মনে সন্দেহ নেই। ৪৯ জন এট্রিয়াল ফিব্রিলেশনের রোগীকে যোগা করানোর পর দেখা যায়, তাদের রক্তচাপ ও হার্টরেট খানিকটা কমেছে। ও বেশ কিছুদিন নিয়মিত করার পর বিপদের আশঙ্কা আগের তুলনায় প্রায় অর্ধেক হয়ে গেছে।

* কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট, হার্ট অ্যাটাক, বাইপাস সার্জারি ইত্যাদির পর দ্রুত সেরে ওঠার পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় উদ্বেগ, স্ট্রেস, টেনশন। বিভিন্ন গবেষণা থেকে দেখা গেছে, কার্ডিয়াক রিহ্যাবিলিটেশনের (রোগের চিকিৎসা শেষ হওয়ার পর যেভাবে ধাপে ধাপে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা হয় রোগীকে) পর্যায়ে অল্পস্বল্প করে যোগা ও প্রাণায়াম করালে রোগী অনেক তাড়াতাড়ি সুস্থ ও কর্মক্ষম হয়ে ওঠেন।

সূত্র : আনন্দবাজার

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close