নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

আইনি জটিলতায় আনা যাচ্ছে না পি কে হালদারকে

আলোচিত অর্থ পাচারকারী প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত মামলা হয়েছে ৩৮টি। সর্বশেষ গত ৪ এপ্রিল দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ আরেকটি মামলা করা হয় ৪১ কোটি টাকা আত্মাসাৎ ও পাচারের অভিযোগে। কয়েকটি মামলায় চার্জশিট দিয়েছে দুদক। আদালতে বিচারাধীন দুটি মামলার একটিতে গত বছর ৮ অক্টোবর পি কে হালদারসহ ১৪ জনকে ২২ বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০। একইসঙ্গে জরিমানা করা হয় ১ হাজার ৫২২ কোটি ৫৫ লাখ ১৯ হাজার ৩৫৫ টাকা। যদিও পি কে হালদারের অনুপস্থিতিতেই এসব মামলা, চার্জশিট ও সাজা দেওয়া হয়েছে। আইনি জটিলতার কারণে তাকে ফেরত আনার বিষয়টিও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

দুদক উপপরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম জানান, গত ৪ এপ্রিল করা মামলার বাদী হয়েছেন দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. নাজমুল হুসাইন। মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেছেন, অবৈধভাবে ভুয়া কাগুজে প্রতিষ্ঠান কনিকা এন্টারপ্রাইজের নামে ভুয়া রেকর্ডপত্র তৈরি করে সঠিক হিসেবে উপস্থাপন ও ব্যবহার করেন পি কে হালদার। পরে এ কাগুজে প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ৪৫ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর করে ৪১ কোটি ৩১ লাখ ৯৪ হাজার ৪৫৭ টাকা আত্মসাৎ করে দেশের বাইরে পাচার করেন তিনি। এ মামলায় পি কে হালদারসহ আসামি করা হয়েছে ২০ জনকে। এদের সবাই এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, সিইও, পরিচালক ও বিভিন্ন পদবির কর্মকর্তা। ঘটনার সময়কাল দেখানো হয়েছে ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

২০১৯ সালের অক্টোবরে দুদকের তদন্তে অর্থ কেলেঙ্কারির বিষয়টি উঠে আসার গোপন সংবাদ পেয়েই পি কে হালদার পালিয়ে যান ভারতে। সেখানে শিবশঙ্কর হালদার নামে জালিয়াতি করে নাগরিকত্ব নেন। কিন্তু ২০২২ সালের ১৪ মে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনার অশোকনগরের একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ভারতের কেন্দ্রীয় আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা ডিরেক্টরেট অব এনফোর্সমেন্ট (ইডি)। এরপর থেকেই ভারতের কারাগারে আছেন বাংলাদেশের আর্থিক কেলেঙ্কারির এ খলনায়ক। তখন দুদকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈউদ্দীন আবদুল্লাহ সাংবাদিকদের জানান, যত দ্রুত সম্ভব আন্তর্জাতিক আইন ও বন্দিবিনিময় চুক্তির আলোকে পি কে হালদারকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে।

পি কে হালদারকে ফেরানো ও তার পাচার করা অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে দুদক কমিশনার জহুরুল হক বলেন, পি কে হালদারকে ফেরত আনার বিষয়টি তাদের একক এখতিয়ারে নেই। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন জায়গায় এ বিষয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিছুদিন পরপর তাগাদাও দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে আরো যাদের এখতিয়ার আছে, তাদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছে দুদক। উল্লেখ্য, পলাতক পি কে হালদারকে দেশে ফিরিয়ে আনতে পুলিশের আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারপোল (ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশন) থেকে রেড নোটিস জারি করা আছে। বাংলাদেশ পুলিশের অনুরোধের পর ২০২১ সালের ৮ জানুয়ারি পি কে হালদারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোল রেড নোটিন জারি করে। কিন্তু তার বিরুদ্ধে ভারতের আদালতে বিচার প্রক্রিয়া চলমান থাকায় তাকে ফেরত আনা যাচ্ছে না বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close