নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৭ জানুয়ারি, ২০২৪

ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোই লক্ষ্য

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মূল লক্ষ্য। এ নির্বাচনে তারা ৫০ শতাংশের বেশি ভোটার উপস্থিতি দেখাতে চায়। এজন্য দলটির কিছু কর্মকৌশলও আছে।

আওয়ামী লীগের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপিসহ বেশকিছু দল এ নির্বাচন বর্জন করেছে। তারা জনগণকে ভোট দিতে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে ১০ দিন ধরে সারা দেশে গণসংযোগ কর্মসূচি চালিয়েছে। দলটি ভোটের দিন হরতাল কর্মসূচি দিয়ে রেখেছে। এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ ভোটাররা কতটা ভোটমুখী হবেন, তা নিয়ে সংশয় আছে। এছাড়া ঢাকা, চট্টগ্রামের মতো বড় শহরগুলোয় এমনিতেই ভোটার উপস্থিতি কম থাকে। তাছাড়া টানা তিন দিনের ছুটিতে শহরের অনেক ভোটার গ্রামের বাড়ি চলে যেতে পারেন। ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছিল বিএনপি। সে নির্বাচনে ৪০ শতাংশ ভোট পড়ে বলে জানিয়েছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপিসহ নিবন্ধিত সব দল অংশ নিলেও এ নির্বাচন নিয়ে বড় ধরনের বিতর্ক ছিল। সেবার ৮০ শতাংশ ভোট পড়েছিল বলে জানায় ইসি।

এর আগে ১৯৯৬ সালের সপ্তম, ২০০১ সালের অষ্টম ও ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনের ফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, নির্বাচনগুলোয় সারা দেশে মোট ভোটের ২৫-৩০ শতাংশের সমর্থন পেয়েছিল বিএনপি। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ পেয়েছিল ২৮-৪১ শতাংশ। সে হিসাবে বিএনপির অন্তত ২৫-৩০ শতাংশ ভোটার আছে বলে ধরে নেওয়া যায়। রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সাধারণ ভোটারদের অনেকে এবার ভোটে আগ্রহী না-ও হতে পারেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনেও বিএনপির বর্জনের ফলে ১৫৩টি আসনে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেয়েছিল আওয়ামী লীগ ও তাদের মিত্ররা। এবার যাতে সে ধরনের পরিস্থিতি না হয়, সেদিকে শুরু থেকেই সতর্ক ছিল আওয়ামী লীগ।

আওয়ামী লীগের সূত্র জানায়, এ কৌশলের বাইরে ক্ষমতাসীনরা ভোটার বাড়াতে আরো কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন। ভোটার উপস্থিতি নিশ্চিত করতে ভোটকেন্দ্রভিত্তিক কমিটি কাজ করবে। কেন্দ্রে ভোটার আনতে প্রশিক্ষণ দিয়ে কয়েক লাখ কর্মী তৈরি করেছে আওয়ামী লীগ। এর বাইরে গত সেপ্টেম্বরে সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের নিয়ে সারা দেশের জন্য ১২টি দল গঠন করা হয়। প্রতিটি দল গড়ে ৫ থেকে ৭টি সাংগঠনিক জেলার দায়িত্ব পায়। এসব জেলা থেকে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের থেকে বাছাই করে প্রচারকর্মীর তালিকা তৈরি করা হয়। এরপর তাদের ধারাবাহিকভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

আওয়ামী লীগের একজন জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, সারা দেশে নির্বাচন ঘিরে এবার উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। ভোটারদের যে উৎসাহ ও আগ্রহ দেখা যাচ্ছে, তাতে বোঝা যায় ভোটার উপস্থিতি বেশ ভালো হবে। আওয়ামী লীগের দলীয় কৌশলের বাইরেও ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে আরো কিছু উদ্যোগ আছে। গত ২৫ ডিসেম্বর ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত মতবিনিময় করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, ভোটারদের কেন্দ্রে আনতে কাজ করবেন কাউন্সিলররা। ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন পুলিশ সদস্যরা। ভোটারদের ভোট দিতে কেউ বাধা দিলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নির্বাচন কমিশনও ভোটারদের উৎসাহিত করে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন প্রচার চালিয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close