গাজী শাহনেওয়াজ

  ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২

ইভিএমের পক্ষে ব্যাপক প্রচার চালাবে ইসি

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ সংসদীয় আসনের অর্ধেকটিতে ভোট হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)। অর্থাৎ ১৫০ আসনে ইভিএমে এবং বাকি অর্ধেক আসনে কাগজে মুদ্রিত স্বচ্ছ ব্যালটে ভোট হবে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছে কমিশন সচিবালয়।

ইভিএমে যাতে সহজে ও ঝামেলামুক্তভাবে ভোট দিতে পারেন; সে বিষয়ে ভোটারদের ধারণা দিতে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ হাতে নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ লক্ষ্যে কৌশল নির্ধারণের জন্য সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) কমিশন সভা আহ্বান করা হয়েছে। বেলা ১১টায় নির্বাচন ভবনে এ সভা বসবে। এতে সিদ্ধান্ত আসবে কীভাবে প্রচারের কর্মপরিকল্পনা বা পথনকশা অনুযায়ী এগোবে সাংবিধানিক এ সংস্থা।

তবে এ যন্ত্রে ভোটদানে কারচুপি, ভোট ডাকাতি-ছিনতাই ও কেন্দ্র দখলের সুযোগ নেই- এমন নানা ইতিবাচক অনুষঙ্গ যুক্ত করে ইভিএমের স্বপক্ষে ব্যাপক প্রচার চালাবে কমিশন। এজন্য বিভিন্ন নাট্যব্যক্তিত্বসহ গণমাধ্যমকে যুক্ত করে ইভিএমের পক্ষে প্রচার চালানোর বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে। খবর ইসির দায়িত্বশীল সূত্রের।

এ প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে রাজি হননি নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবিব খান। তবে তিনি জানান, সোমবার এ-সংক্রান্ত বিষয়ে সভা হবে; এর পর কথা বলা যেতে পারে।

তবে ইসির এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, ইভিএমে ভোটদান হবে ১৫০ আসনে। এসব বিবেচনা করেই ক্রয় প্রক্রিয়াসহ সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এ সংখ্যায় দু-একটি কমবেশি হতে পারে। কেউ ১৫০ আসনে ইভিএমে ভোটের কথা বলছেন, কেউ একশর নিচে যন্ত্রে ভোট নেওয়ার কথা বলছেন। এ প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, ‘১৫০ আসনে ইভিএমে ভোট হবে। এ নিয়ে সংশয় থাকার কথা নেই। সচিবালয় এ ধরনের বিভ্রান্তিমূলক কথা বলতে পারে না। ঘোষিত ১৫০ আসন ধরেই চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি।’

ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, ইভিএম বিষয়ে ব্যাপক প্রচার চালানোর জন্য কমিশন সভা হবে। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর প্রচার শুরু হবে ইভিএম বিষয়ে। মক ভোটিং চালানোসহ ভোটারদের ইভিএমে ভোটদান সহজ করার জন্য প্রচেষ্টা চালানো হবে।

ইসির কর্মকর্তারা জানান, স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন স্তরে ইভিএমে ভোট নিয়ে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মধ্যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব নেই। বিভাজনও নেই। তবে জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচনে এ যন্ত্রে ভোট নিয়ে বিরোধিতা ও ভোট কারচুপির বাক্স আখ্যা দিয়ে তা বর্জনে একট্টা একটি পক্ষ। আরেকটি পক্ষ ইভিএমের পক্ষে বরাবরই সোচ্চার। এ নিয়ে সংলাপ আয়োজন করেছিল কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন। এতে বিরোধিতা কমেনি; বরং বেড়েছে। তবে সংলাপের এজেন্ডায় ৩৯ নিবন্ধিত দলের মধ্যে অংশ নেওয়া ২৯ দলের মতামত উপস্থাপনে কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে কমিশন। একটি রাজনৈতিক পক্ষের মতো ইসিও সুকৌশলে জনমত ইভিএমের পক্ষে দেখিয়েছে। বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ঘোষিত রোডম্যাপে দেখা যাবে, সরাসরি আওয়ামী লীগসহ ১২টি রাজনৈতিক দল ইভিএমের পক্ষে, সরাসরি এর বিপক্ষে ৬টি দল এবং শর্তসাপেক্ষে যন্ত্রের পক্ষে মত দিয়েছে ১১টি দল। এ ধরনের তথ্য উপস্থাপন করা হয় পথনকশায়। ইভিএমের পক্ষে ভোটদানে দুই ধরনের শর্তের কথা বলা হয়েছে- ইভিএমে ভিভিপ্যাট বা এ-জাতীয় কিছু সংযোজন যাতে ভোটাররা বুঝতে পারেন, তারা কোন মার্কায় ভোট দিয়েছেন। এ ছাড়া ভোটারদের মাঝে এটিকে পরিচিত করা, কোনো ম্যানিপুলেশনের সুযোগ না থাকলে ব্যবহার করা।

এসব সমীকরণ ধরে ইসির কাছে প্রতীয়মান হয়, বেশির ভাগ রাজনৈতিক দলের মত যন্ত্রের পক্ষে থাকায় এটা ব্যবহার না করা যুক্তিসংগত হবে না। তবে ইভিএম ব্যবহার বেশি হবে ঢাকা বিভাগে, সিটি করপোরেশন, জেলা সদরের আসনগুলোতে।

সূত্রমতে, সাধারণ ভোটারদের সচেতন করার উদ্দেশ্যে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিভিন্ন ধরনের প্রচারমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করবে ইসি। নির্বাচনে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের জন্য বহুমুখী কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। এ কার্যক্রমে দেশের জনপ্রিয় সাংস্কৃতিক কর্মী, নাট্যকার, অভিনেতা, ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, গণমাধ্যমকে ব্যবহার করা হবে। সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ইভিএম প্রচার সংক্রান্ত সভায় পুরো বিষয়টির খোলাসা হবে।

জানতে চাইলে ইভিএম প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) কর্নেল সৈয়দ রাকিবুল হাসান প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করার জন্য ব্যাপক প্রচার কর্মযজ্ঞ হাতে নেওয়া হবে। এটার একটা পরিকল্পনা রয়েছে, যা অল্প কথায় ব্যাখ্যা করা কঠিন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close