মিজান রহমান

  ২৫ জুন, ২০২২

স্বপ্নের বন্ধনে পদ্মার দুপাড়

অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে আজ এসেছে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। দীর্ঘ প্রতীক্ষিত স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন আজ। এর মধ্য দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে সারা দেশের সরাসরি সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা হচ্ছে আজ থেকে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল সাড়ে ১০টায় মুন্সীগঞ্জ প্রান্তে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর গাড়িতে করে সেতুর ওপর দিয়ে গিয়ে সেতুর ওপারে আরেকটি ফলক উন্মোচন করবেন।

দেশের দীর্ঘতম পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে কাঁঠালবাড়ীতে আয়োজিত সমাবেশে তিনি উদ্বোধনী ভাষণ দেবেন। মাদারীপুর জেলার শিবচরের কাঁঠালবাড়ীতে উদ্বোধনী জনসভার মঞ্চটি করা হয়েছে পদ্মা সেতুর আদলে। মঞ্চে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে পদ্মা সেতুর প্রতীকী উপস্থাপনা। দেখানো হয়েছে সেতুর পিলার, নিচে প্রবল স্রোত। পিলারের নিচ দিয়ে বয়ে চলছে পালতোলা নৌকা। অধিকাংশ নৌকায় আওয়ামী লীগের দলীয় পতাকা। রয়েছে মাছ ধরার ট্রলার। দেখতে ঠিক যেন পদ্মা নদী ও পদ্মা সেতু। রাজধানী ঢাকা ও পদ্মার দুই পাড়ের জেলাগুলোর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উদ্বোধন অনুষ্ঠানের সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন। জনসভায় ১৫ থেকে ২০ লক্ষাধিক লোকের উপস্থিতি প্রত্যাশা করছে আওয়ামী লীগ। পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠান হবে খুবই জমকালো। মূল উদ্বোধন অনুষ্ঠান ৬৪টি জেলাতেও দেখানোর ব্যবস্থা থাকবে। অর্থাৎ দেশজুড়ে উৎসব পালন করা হবে।

পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুত। নির্মাণকাজ শেষ করে সেতুটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড (এমবিইসি)। পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান মো. আবদুল কাদের বলেছেন, ঠিকাদার তার কাজ শেষ করে সেতু বুঝিয়ে দিয়েছে। তবে যে কোনো অবকাঠামোর ক্ষেত্রে ছোটোখাটো কাজ থাকবে। আগামী এক বছর ধরে তারা সে কাজ ‘ডিফেক্ট লায়াবিলিটি পিরিয়ড’ করবে।

সেতুর উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে কিছুদিন ধরেই উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে মুন্সীগঞ্জের পদ্মাপাড়ে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মীরা শেষ মুহূর্তের কাজে ব্যস্ত সময় কাটান। পদ্মা সেতু উত্তর থানাসংলগ্ন অনুষ্ঠানস্থল ও ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে সাজানো হয়েছে মনোরম সাজে। জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা। সেতুর উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে দেশের সব এলাকাতেই উৎসব অনুষ্ঠানের আয়োজন রয়েছে। দেশের গণমাধ্যমগুলো কিছুদিন ধরেই ক্ষণগণনা করে সেতু নিয়ে নিবন্ধ ও সংবাদ ফলাও করে প্রকাশ ও সম্প্রচার করেছে। রেডিও ও টেলিভিশনে অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করা হয়েছে। অনলাইন ও কাগজের পত্রিকা প্রতিদিনই সংবাদ ফিচার ও নিবন্ধ প্রকাশ করেছে।

সরকারের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সেতুতে ১৩ ধরনের যানবাহন চলাচল করতে পারবে। তবে নসিমন, করিমন, ভটভটি ও অটোরিকশা চলাচল করতে পারবে না। এমনকি হেঁটেও মানুষ যাতায়াত করতে পারবে না এবং সেতুর ছবি তুলতে পারবে না। এরই মধ্যে পদ্মা সেতুতে গাড়ির টোল নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। কি ধরনের যানবাহন চলাচল করতে পারবে তা নির্দিষ্ট করে দিয়েছে।

জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উদ্বোধনী সমাবেশে ১০ লক্ষাধিক মানুষের অংশগ্রহণের আয়োজন করা হয়েছে। প্রায় ১৫ একর জায়গাজুড়ে নেওয়া হয়েছে প্রস্তুতি। প্রস্তুতির শতভাগ কাজ গতকালই সম্পন্ন হয়েছে। জনসভার জন্য তৈরি করা হয়েছে ১৫০ ফুট দৈর্ঘ্যরে একটি মঞ্চ। স্থাপন করা হয়েছে অস্থায়ী ৫০০ টয়লেট, ভিআইপিদের জন্য থাকছে ২২টি আলাদা টয়লেট। রয়েছে পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা। সুপেয় পানির জন্য থাকছে বিপুল সংখ্যক পানির ট্যাপ। নারীদের জন্য আলাদা বসার জায়গা, তিনটি ভ্রাম্যমাণ হাসপাতাল, সভাস্থল থেকে দুই কিলোমিটার দূরবর্তী স্থানের দর্শকদের জন্য থাকছে ২৬টি এলইডি মনিটর, ৫০০ মাইকসহ অত্যাধুনিক সাউন্ডসিস্টেম।

জনসভার মঞ্চ তৈরির দায়িত্বে থাকা ক্যানভাস বাংলাদেশ ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের উন্নয়নকর্মী কবির হোসেন বলেন, দৃষ্টিনন্দন এবং ইউনিক এই মঞ্চ তৈরির কাজ শেষের পথে। কর্মীরা দিনরাত পরিশ্রম করে মঞ্চটি তৈরির কাজ করছে। মঞ্চের সামনে পানি থাকবে। পানির ওপর ছোট-বড় বেশ কয়েকটি নৌকা ভাসতে থাকবে। আসলে পুরো মঞ্চটি পদ্মা সেতুর আদলে করা হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, জনসভাস্থলের তিন বর্গকিলোমিটার জায়গাজুড়ে আলোকসজ্জার কাজ চলমান। বেশির ভাগ কাজ শেষ হয়েছে এরই মধ্যে। পুরো এলাকার নিরাপত্তার জন্য রয়েছে সেনাবাহিনী, র‌্যাব, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদেরও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জনসাধারণের জন্য ২০ শয্যার একটি এবং ১০ শয্যার দুটি ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসাকেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে।

গতকালই জনসভাস্থলের পুরো কাজ শেষ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন জনসভাস্থল নির্মাণ কাজের দায়িত্বে থাকা পিয়ারু সরদার অ্যান্ড সন্সের ব্যবস্থাপক মো. মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, স্মরণকালের সেরা জনসভা হবে এটি। সেভাবেই সব প্রস্তুত করা হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস ফরিদপুর অঞ্চলের সহকারী পরিচালক নজরুল ইসলাম জানান, জনসভাস্থল এবং নৌপথে আমাদের শতাধিক ফায়ারম্যান অগ্নি ও দুর্ঘটনারোধক নিরাপত্তা নিশ্চিত কারার জন্য নিয়োজিত থাকছে। এছাড়া নির্দেশনা অনুযায়ী যে কোনো কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে আমাদের ফায়ারম্যানরা।

শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, স্বপ্নের এই পদ্মা সেতুকে ঘিরে অপেক্ষার শেষ নেই। পদ্মাপাড়ে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। মানুষের মনে বইছে উৎসবের আমেজ।

মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী জনসভায় কমপক্ষে ১০ লাখ লোকের সমাগম হবে বলে আশা করা হচ্ছে। অনুষ্ঠানে আসা এই বিপুল সংখ্যক মানুষের জন্য আমরা সব ধরনের সুবিধা দিতে প্রস্তুত রয়েছি। পানি থেকে শুরু করে চিকিৎসাসহ সব ব্যবস্থা থাকছে। জনসভাস্থলে ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসাকেন্দ্রে সব ধরনের ব্যবস্থা থাকবে। আর সর্বোচ্চ নিরাপত্তা তো থাকছেই।

সেতু বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের দিন দুই পাড়ে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা থাকবে। জরুরি স্বাস্থ্যসেবার প্রয়োজন হলে দুই পাড়েই পদ্মা সেতু প্রকল্পের অধীন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের জন্য তৈরি করা পুনর্বাসন এলাকার পাঁচটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ব্যবহার করা হবে।

দলীয় সূত্রমতে, প্রথমে নৌকার আদলে জনসভার মঞ্চ করার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুর আদলে মঞ্চ তৈরির নির্দেশনা দিয়েছেন। ফলে শুধু পদ্মা সেতু উদ্বোধনই নয়, মঞ্চেও চমক থাকবে পদ্মার। মঞ্চের সামনে থেকে দেখে মনে হবে অবিকল পদ্মা সেতুর ওপর মূল জনসভা করা হচ্ছে। পদ্মা সেতু যে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সাহসের প্রতীক তা প্রমাণ করতেই এ উদ্যোগ বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায়ের নেতারা। জনসভার পর ফানুস ওড়ানো থেকে শুরু করে জমকালো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। সেতুর পাশাপাশি সাজানো হচ্ছে দুই পাড়ের পুরো এলাকা। এদিন নদীতেও থাকবে সুসজ্জিত নৌকা। ক্ষমতাসীনদের প্রত্যাশা, শুধু পদ্মা সেতুর দুই পাড়ের মানুষই নয়, উদ্বোধনের দিন সারা দেশের মানুষ এই আনন্দ উৎসবে অংশ নেবে। কেউ সমাবেশস্থলে এসে, আবার কেউ টেলিভিশনের মাধ্যমে। আবার কেউ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উৎসবে মেতে উঠবে। দেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত আনন্দ মিছিল, শোভাযাত্রা, আতশবাজিসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আনন্দ উৎসব করা হবে।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা এই সেতু নির্মাণ করে বিশ্বকে জানিয়ে দিয়েছেন, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ দুর্নীতি করে না। তিনি বলেন, এই সেতু শেখ হাসিনার স্বপ্নের সেতু। এই সেতু আমাদের সামর্থ্য ও সক্ষমতার সেতু। এই সেতু একদিকে সম্মান ও মর্যাদার প্রতীক, অন্যদিকে আমাদের যে অপমান করা হয়েছে তার প্রতিশোধের সেতু।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পদ্মা নদীর ওপর পুরো পদ্মা সেতু প্রস্তুত হওয়ায় বাংলাদেশ উন্নয়ন এবং অগ্রগতির নতুন যুগে প্রবেশের দারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে। পদ্মা সেতু চালু হলে তা যে শুধু এই সেতুর আশপাশের জনগণের জীবনমানকে এগিয়ে নেবে তা নয়, বরং এটা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে পুরো বাংলাদেশের মানুষের জীবনকেই এগিয়ে নেবে। পুরো দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে পদ্মা সেতু হবে একটি নতুন মাইলফলক।

পদ্মা সেতুর এক প্রান্তে মুন্সীগঞ্জ এবং অপর প্রান্তে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর জেলা। এই সেতুর মাধ্যমে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের বিরামহীন এবং নিরবিচ্ছিন্ন যোগাযোগের অবারিত এক সুযোগ সৃষ্টি হবে। ১০ মিনিট সময়েই এই সেতু পার হয়ে যাবে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্যাপক গতি আসবে। অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে দীর্ঘদিন ধরে পিছিয়ে পড়া দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের জীবনে পদ্মাসেতু বিশাল এক সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে। এ সেতু এই অঞ্চলের মানুষের জীবন মান উন্নয়নে নতুন গতি আনবে। মাদারীপুর, শরিয়তপুর, ফরিদপুর, রাজবাড়ি, গোপালগঞ্জ, খুলনা, যশোহর, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, বরিশাল এবং পটুয়াখালীসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় শিল্পায়ন এবং পর্যটনের বিশাল সুযোগ সৃষ্টি হবে। এ অঞ্চলের কৃষি, মৎস্য, পোলট্রি এবং ডেইরি খাতের উন্নয়নের ক্ষেত্রে নতুন এক সুযোগ সৃষ্টি হবে।

পদ্মা সেতুকে ঘিরে কৌতূহলের শেষ নেই। প্রতিদিনই সেতু দেখতে ভিড় করছেন মানুষ। পদ্মা সেতুকেন্দ্রিক পর্যটন শিল্প বিকাশের পরিকল্পনা নিয়েছে সেতু বিভাগ।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রায় পদ্মা সেতুর সংযোজন শেখ হাসিনা সরকারের এক অবিস্মরণীয় অবদান। দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও সক্ষমতা ইতিহাস হয়ে থাকবে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের গ্রামীণ অর্থনীতির ভিত্তি যেমন শক্তিশালী হবে, তেমনি জাতীয় অর্থনীতির চাকাও গতিশীল হবে। দেশি বিনিয়োগের চেয়ে বিদেশি বিনিয়োগ এ অঞ্চলে বেশি আসবে। কৃষি-শিল্প-অর্থনীতি-শিক্ষা-বাণিজ্য সব ক্ষেত্রেই পদ্মা সেতুর বিশাল ভূমিকা থাকবে। পদ্মার দুই পাড়ে অর্থনৈতিক জোন গড়ে উঠবে। মোংলা বন্দরে বেশ কয়েকটি সিমেন্ট ফ্যাক্টরি গড়ে উঠেছে। গার্মেন্টসহ রপ্তানিমুখী নানা ধরনের শিল্প-কারখানাগুলো স্থাপনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close