নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১২ জানুয়ারি, ২০২২

দেশে খুনিদের স্থান হবে না : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতা ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে যে দিকনির্দেশনামূলক ভাষণ দিয়েছিলেন, সেই নির্দেশনা মতেই বাংলাদেশ চলবে। খুনি, যুদ্ধাপরাধী ও দুর্নীতিবাজদের কোনো স্থান আর বাংলার মাটিতে হবে না। এই কথাটা তাদের স্পষ্ট জানিয়ে দিতে হবে। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দলের বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি অংশ নেন।

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে এ দেশের উন্নয়নের চাকাটা গতিশীল থাকবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণের অধিকার নিয়ে আমরা কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেব না। মানুষের ভোটের অধিকার নিয়ে অতীতে যারা ছিনিমিনি খেলেছে, তারা তাদের শাস্তি পেয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ তাদের ক্ষমতা থেকে হঠিয়েছে। আর জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছি বলেই আমরা আজ ১৩ বছর পূর্ণ করতে পেরেছি এবং পরপর তিনবার ক্ষমতায় আসতে পেরেছি। জনগণের ভোটে নির্বাচিত না হলে সেটা সম্ভব ছিল না। এটা হচ্ছে বাস্তবতা। আর এই বাস্তবতাকে স্বীকার করতে হবে।’

আলোচনা সভায় সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, যুগ্ম সম্পাদক ডা. দীপু মনি, ড. হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, কেন্দ্রীয় সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, সাংগঠনিক সম্পাদক মীর্জা আজম এমপি, মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণ এবং উত্তরের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফী ও শেখ বজলুর রহমান।

দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ এমপি গণভবন থেকে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।

বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাহাত্তরে বঙ্গবন্ধু দেশে ফেরার পর থেকেই কিছু কিছু লোকের শুরু হলো নানা ধরনের সমালোচনা। এটা হলো না, ওটা হলো না। এই হচ্ছে না, সেই হচ্ছে না। একবারও তারা ভেবে দেখল না, এই দেশটা ছিল পরাধীন। ২০০ বছর ব্রিটিশদের গোলামি করেছে। তারপর ২৩ বছর পাকিস্তানিদের গোলামি করতে হয়েছে। এরপর মুক্তিযুদ্ধ করতে হয়েছে। পাকিস্তানের একটি প্রদেশকে যিনি রাষ্ট্রে উন্নীত করেছেন, ধীরে ধীরে দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু তাকে সময় দেওয়া হলো না। যারা সেসময় এ রকম কলাম লিখেছেন, আন্দোলন বা বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের নামে এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল, তারা কী ভেবেছিল? কী করতে চাচ্ছিল তারা? সেটাই আমার প্রশ্ন। সেই প্রশ্নের উত্তর আজও পাইনি।’

স্বাধীনতার পর পাকিস্তানের কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধুর মুক্তির প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ভুট্টো নিজের চামড়া বাঁচাতে এবং বাংলাদেশে আটকে পড়া ৯৬ হাজার পাকিস্তানিকে ফেরত নিতে ও আন্তর্জাতিক চাপে বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। বাংলাদেশে ফিরে তিনি সবার আগে ফিরে যান দেশের মানুষের কাছে। বঙ্গবন্ধু দেশের দায়িত্ব নিয়ে পরিবর্তন শুরু করেন। মাত্র সাড়ে তিন বছরে স্বল্পোন্নত দেশের স্বীকৃতি আদায় করে দেন। মানুষ ও দেশের প্রতি ভালোবাসা না থাকলে এগুলো হতো না।

বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগারে ২৯০ দিন বন্দি থাকার পর ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি লন্ডন ও নয়াদিল্লি হয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পবিত্র মাটিতে ফিরে আসেন। এর আগে ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যা শুরু হলে ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে জাতির পিতা স্বাধীনতা ঘোষণা করেন; যা ইপিআরের ওয়্যারলেসে সারা দেশে প্রচার করা হয়। এরপরই পাকিস্তানি বাহিনী তার বাসভবন ধানমন্ডির ৩২ নম্বর আক্রমণ করে জাতির পিতাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। এরপর থেকে জাতি দিনটিকে জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close