প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১৮ অক্টোবর, ২০২১

বিদেশি দূতকে প্রধানমন্ত্রী

রোহিঙ্গারা বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা এবং আটকে পড়া পাকিস্তানিদের বাংলাদেশের জন্য একটি বোঝা হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসার পর এরই মধ্যে তিন বছর অতিবাহিত হয়েছে এবং তারা আমাদের জন্য একটি বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। গতকাল রবিবার ঢাকায় নেদারল্যান্ডসের নতুন রাষ্ট্রদূত অ্যান জিরার্ডভ্যান লিউয়েন গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব ইহ্সানুল করিম বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের জানান, নেদারল্যান্ডসের দূত রোহিঙ্গা ইস্যু সম্পর্কে বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে তিনি উদবাস্তু এবং এনজিও কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তার কাছে মনে হয়েছে, রোহিঙ্গাদের তাদের নিজস্ব মাতৃভূমি মিয়ানমারে ফিরিয়ে দেওয়ায় এ সমস্যার সমাধান হতে পারে। খবর বাসস।

প্রেসসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘তিন বছর হয়ে গেছে। এরা (রোহিঙ্গা) আমাদের জন্য বোঝা। এদের জন্য আমাদের কক্সবাজারের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। আমাদের কিছু বনজ সম্পদও নষ্ট হয়েছে। আর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে আটকে পড়া পাকিস্তানিরাও আমাদের ওপর অনেক অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করে।’

ডাচ রাষ্ট্রদূতকে উদ্ধৃত করে প্রেসসচিব বলেন, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা, এনজিও কর্মকর্তা এবং আঞ্চলিক নেতাদের সঙ্গে তার আলাপ হয়েছে এবং রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনই এই সংকটের একমাত্র সমাধান বলে সবাই মনে করেন।

ডাচ রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনায় বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত ব-দ্বীপ রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ তার দেশের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বাংলাদেশের উন্নয়নে নেদারল্যান্ডসের অবদান এবং ডেল্টাপ্ল্যান-২১০০ প্রণয়নে দেশটির সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, নেদারল্যান্ডসে কৃষির সংরক্ষণে গ্রিনহাউস প্রকল্প দেখে অভিভূত হয়েছি। বাংলাদেশও একটি কৃষিভিত্তিক দেশ এবং তার সরকার কৃষির উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেয়।

বাংলাদেশে ডিজিটালাইজেশনের বিষয়টি তুলে ধরে তার আইসিটিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে এর ‘স্থপতি’ হিসেবে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। ফন ল্যুভেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন বলে প্রেসসচিব জানান।

নেপালের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ : ডাচ রাষ্ট্রদূতের পর গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশে নেপালের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত বংশীধর মিশ্রা।

সাক্ষাৎকালে নেপালের রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘যখনই নেপালে কোনো সংকট হয়েছে, বাংলাদেশ সঙ্গে সঙ্গে আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে চিকিৎসাসামগ্রী প্রদানসহ বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ নেপালকে যেসব সহায়তা দিয়েছে, তার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদও জানান রাষ্ট্রদূত।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের কৃষিক্ষেত্রে আরো সহযোগিতা দরকার। কারণ আমরা বাংলাদেশ থেকে শিখতে চাই। বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের যে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প রয়েছে, সেটা এগিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান বংশীধর মিশ্রা।’

বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করে রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের ইপিজেড, বঙ্গবন্ধু টানেল পরিদর্শনের কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী।

বাংলাদেশের হাঁড়িভাঙ্গা আম উপহার পেয়ে বংশীধর মিশ্রা তার দেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান।

বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে নেপাল যে সহযোগিতা ও সমর্থন দিয়েছিল, তার কথাও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ এম জিয়াউদ্দিন, মুখ্যসচিব আহমদ কায়কাউস উপস্থিত ছিলেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close