প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২১

ফিলিস্তিনিদের মুক্তির নতুন প্রতীক চামচ

সামান্য একটি চামচ। সেটিই হয়ে উঠেছে ফিলিস্তিনিদের মুক্তির নতুন প্রতীক। সম্প্রতি ইসরায়েলের কুখ্যাত গিলবোয়া কারাগার থেকে কয়েক ফিলিস্তিনি বন্দি সুড়ঙ্গ খুঁড়ে পালিয়ে যান। চামচ দিয়েই মাটি খোঁড়ার কাজটি করেছিলেন এদের একজন। যদিও গতকাল রবিবার পর্যন্ত পলাতক ছয় বন্দিকেই ফের গ্রেপ্তার করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। তবে এরই মধ্যে চামচ হয়ে উঠেছে তাদের আন্দোলনের নতুন প্রতীক। খবর আলজাজিরা ও বিবিসির। বিক্ষোভরত ফিলিস্তিনি নারী-পুরুষের এক হাতে পতাকা, অন্য হাতে শোভা পাচ্ছে চামচ। শিল্পীর ভাস্কর্যে মুষ্টিবদ্ধ হাতে ধরা চামচ, দেয়ালের গ্রাফিতিতে স্লোগানের পাশাপাশি চামচের ছবি। এভাবে ফিলিস্তিনিদের মুক্তি আন্দোলনে পতাকা ও ব্যানারের পাশাপাশি প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে উঠেছে চামচ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে চামচ হাতে বিক্ষোভের এসব ছবি।

ইসরায়েলের হাই সিকিউরিটি কারাগার গিলবোয়া থেকে গত ৬ সেপ্টেম্বর ছয়জন ফিলিস্তিনি সুড়ঙ্গ খুঁড়ে পালিয়ে যান। এরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, জেলের ভেতরে ও বাইরে সুড়ঙ্গের মুখে অনেক মাটি।

পুনরায় ইসরায়েলের হাতে বন্দি হওয়া এক ফিলিস্তিনির আইনজীবী সারি ওরাবি জানান, তার মক্কেল মাহমুদ আবদুল্লাহ আরদাহ চামচ, প্লেট ও কেটলির হাতল দিয়ে কারাগারের সেল থেকে সুড়ঙ্গ খুঁড়েছেন।

তিনি বলেন, মনের জোর, সজাগ দৃষ্টি আর কৌশল দিয়ে একটি সামান্য চামচ ব্যবহার করেও শত্রুর কারাগার থেকে ফিলিস্তিনিরা বের হয়ে এসেছেন। তিনি জানান, গত ডিসেম্বরে চামচ দিয়ে মাটি খোঁড়া শুরু করেন ওই ফিলিস্তিনি।

ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীরে তুলকারেমের বাসিন্দা ঘাসান মাহদাবি বলেন, ‘ইসরায়েলি কারাগার থেকে পালানোর চিন্তা প্রত্যেক বন্দি ফিলিস্তিনির মাথায় থাকে।’

১৯৯৬ সালে বন্দি থাকা অবস্থায় পেরেক দিয়ে সুড়ঙ্গ খুঁড়ে পালিয়েছিলেন মাহদাবি। তিনি বলেন, তবে ইসরায়েলি কারাগার থেকে ‘চামচ দিয়ে পালানোর কথা অবশ্যই ইতিহাসে লেখা থাকবে।’

এ দিকে কারাগার থেকে পালানো ছয়জনের মধ্যে শেষ দুই ফিলিস্তিনি বন্দিকেও আটকের দাবি করেছে ইসরায়েল। এর আগে আটক করা হয় চারজনকে।

ইসরায়েলি পুলিশ টুইটারে জানায়, রবিবার পশ্চিম তীরের জেনিন শহরের একটি বাড়ি থেকে দুই বন্দি নায়েফ কামামজি ও মুনাদেল ইয়াকুব ইনফেইয়াতকে আটক করা হয়।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র অভিচয় আদ্রাই বলেন, ওই দুই বন্দি একটি বাড়িতে ছিলেন। নিরাপত্তা বাহিনীর গোয়েন্দারা খবর পেয়ে বাড়িটিকে ঘিরে রাখেন। পরে তারা আত্মসমর্পণ করেন। তিনি টুইটারে তাদের ছবিও প্রকাশ করেন। অবশ্য এই দুজন পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পর নিজেরাই আত্মসমর্পণ করেন বলে জানা গেছে।

এর আগে গত ১০ সেপ্টেম্বর দুই বন্দিকে আটক করা হয়। তারা হলেন মাহমুদ আরাদেহ ও ইয়াকুব কাদেরি। তাদের নাজরাথের খ্রিস্টানদের পবিত্র স্থান মাউন্ট প্রিসিপিস থেকে আটক করা হয়।

এরপর ১১ সেপ্টেম্বর আরো দুই বন্দিকে আটক করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, উত্তরাঞ্চলীয় ইসরায়েলের নাজারেথের বাইরে একটি লরি পার্ক থেকে জাকারিয়া জুবেইদি এবং মোহাম্মদ আরদাহ নামের দুই বন্দিকে আটক করা হয়।

গত ৬ সেপ্টেম্বর গিলবোয়া কারাগার থেকে পালান ওই ছয় বন্দি। এ ঘটনায় নড়েচড়ে বসে ইসরায়েল। তাদের কাছে এই পলায়ন ছিল দুঃসাহসিক এবং অভাবনীয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close