সুশীলসমাজের ভাস্কর্য চিন্তা
সুপ্রিম কোর্টে ঢোকার পথে দাঁড়িয়ে থাকা ভাস্কর্যটির অপসারণ করা হয়েছে। তবে ভাস্কর্যটি অপসারণের বিপক্ষে যারা তারা বলেছেন, ‘আমরা মর্মাহত। এ অপসারণ মেনে নেওয়া যায় না। বিশেষ করে কতিপয় ধর্মান্ধ মানুষের অপপ্রচারে বিদ্ধ হয়ে যারা এ কাজটি করেছেন, তারা ভালো কাজ করেননি। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্ট নিজ দায়িত্বে অপসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’
গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ভাস্কর্যটি অপসারণ করা হয়। একই দিন দুপুরে আদালতের মধ্যাহ্ন বিরতির সময় ভাস্কর্যটির অবস্থান নিয়ে সিনিয়র আইনজীবী নেতাদের মতামত নিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। তাদের মতামতের ভিত্তিতেই প্রধান বিচারপতি ভাস্কর্য সরানোর পক্ষে মতামত দেন এবং রাতেই তা কার্যকর করা হয়। প্রধান বিচারপতি বলেন, সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণের ভাস্কর্য নিয়ে নানা বিতর্ক হচ্ছে। আইনজীবী নেতারা সুপ্রিম কোর্টকে পবিত্র অঙ্গন উল্লেখ করে একে বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখার পক্ষে মত দেন।
ভাস্কর্য অপসারণ হতেই পারে। সেখানে কোনো বিতর্ক থাকার কথা নয়। গোলমালটা অন্যত্র। সুশীলসমাজের একটি বড় অংশ একে কতিপয় ধর্মান্ধ ব্যক্তির কাছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী ধর্মনিরপেক্ষ সরকারের পরাজয় হিসেবে দেখছেন তারা বক্তৃতা-বিবৃতিতে মিডিয়ার পাতা বেশ ভারী করে তুলেছেন। কিন্তু এটা তো পরিষ্কার যে সরকার কোনো নির্দেশ দেয়নি। নির্দেশ অথবা সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, দিয়েছে সেই সুশীলসমাজের অপর একটি ভারী অংশ। যারা ভাস্কর্য অপসারণের বিরোধিতা করে মাঠে নেমেছেন। তারা পুলিশি বাধার মুখে পিছু হটেছেন। তাদের এই পিছু হটার বিষয়টি আজ নতুন নয়। বিগত ৪৩ বছরের। তারা মাঝেমধ্যে দেশের দুই প্রধান দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির তাঁবেদারি করাকেও রাজনীতির কৌশল মনে করে শ্রেণি-চরিত্রের ওপর কালিমা লেপনকে বলেছেন, ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’, যা কখনোই এ দেশের শোষিত, বঞ্চিত ও নিপীড়িত মানুষেরা মেনে নিতে পারেনি।
"