reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

ফরিদপুর-ঝালকাঠিতে দুর্ঘটনা

দায়ীদের বিচার ও জবাবদিহির আওতায় আনতেই হবে

ঝালকাঠিতে গত বুধবার বেপরোয়া ট্রাকের ধাক্কায় ইজিবাইক ও প্রাইভেট কারের ১৪ যাত্রী প্রাণ হারিয়েছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার ফরিদপুরে সড়কে দুর্ঘটনায় ১৪ জনের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া নওগাঁ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, সাভার ও ফেনীতে সড়কে আরো ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ও বুধবার এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো ২০ জন। আর গত মাসে (মার্চ) সারা দেশে ৫৫২টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় মারা গেছেন ৫৬৫ ও আহত হয়েছেন ১ হাজার ২২৮ জন। মহাসড়কে মৃত্যুর মিছিল কিছুতেই যে থামানো যাচ্ছে না, সেটা প্রতিদিনকার এসব দুর্ঘটনা থেকেই বোঝা যায়।

বলা বাহুল্য, সড়ক-মহাসড়ক মৃত্যুফাঁদ। প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। প্রাণহানিও হচ্ছে অসংখ্য মানুষের। সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনায় মৃত্যু কমাতে পরিবহন খাতে অনেক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। বেশ কিছু প্রকল্প এখনো চলমান। ধারাবাহিকভাবে উন্নতি করা হচ্ছে মহাসড়কের লেনসংখ্যা। বিভিন্ন জায়গায় স্পিডগান দিয়ে নজরদারি করছে পুলিশ। সংশোধন করা হয়েছে নিরাপদ সড়ক আইনও। এর পরও প্রতি বছর সড়কে প্রাণহানির সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে বেড়েই চলছে। বিশেষ করে ঈদের সময় একের পর এক বড় দুর্ঘটনা সড়ক নিরাপত্তাকে প্রশ্নের মুখে ফেলছে। সবশেষ ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ফরিদপুর ও ঝালকাঠিতে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ২৮ জনের প্রাণহানি নতুন করে এই প্রশ্নটি সামনে নিয়ে এসেছে। দুর্ঘটনার কারণগুলো কারো অজানা নয়। তার পরও দুর্ঘটনারোধ করা যাচ্ছে না। কেন যাচ্ছে না- এই প্রশ্নের উত্তরও কারো জানা নেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুর্বল নজরদারি, সড়কের ত্রুটি ও বেপরোয়া গতি সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম প্রধান কারণ। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের দেওয়া ১১১ সুপারিশ বাস্তবায়নের কোনো বিকল্প নেই। সেই সঙ্গে সড়কের গতি নিয়ন্ত্রণে গাইডলাইন প্রণয়ন করা সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি করা না হলে সড়কের মৃত্যুর মিছিল থামানো সম্ভব হবে না।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৬ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ৮ বছরে ঈদুল ফিতরে ১ হাজার ৯৭৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২ হাজার ৩০৭ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ৬ হাজার ২২ জন। একই সময়ে ঈদুল আজহায় ১ হাজার ৮৮৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২ হাজার ১৬৮ জন নিহত হন। আহত হয়েছেন ৫ হাজার ৬৭৮ জন। নানা কারণে সড়ক দুর্ঘটনার লাগাম টানা যাচ্ছে না। ঈদের সময় এই আশঙ্কা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। কারণ এ সময় পরিবহন মালিকরা বাড়তি আয়ের আশায় পুরোনো গাড়িও রাস্তায় নামিয়ে দেন। ঈদের সময় গাড়ির বাড়তি ট্রিপ থাকায় দক্ষ চালকের অভাবের সুযোগে স্ট্রিয়ারিংয়ে বসে অদক্ষ চালকরা। ফলে এ সময় দুর্ঘটনাও ঘটে থাকে বেশি। এবার ঈদের আগে কিছুটা স্বস্তির যাত্রা দেখা গেলেও ঈদের পর দুর্ঘটনা বেড়ে যায়। এর প্রধান কারণ ঈদের পর নজরদারি কমে যায়। ফলে চালকরা বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।

বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দুর্ঘটনার পেছনে গাড়ি ও সড়কের ফিটনেস এবং চালকদের মানসিক অবস্থা জড়িত থাকে। ফরিদপুর ও ঝালকাঠির দুর্ঘটনার পেছনে কারো না কারো অবহেলা ও দায়িত্বহীনতা আছে। এ দুর্ঘটনায় দায়ীদের বিচার ও জবাবদিহির আওতায় আনতেই হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close