reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

নির্ধারিত দামে এলপি গ্যাস বিক্রি করতে হবে

রাজধানীবাসীর রান্নার জন্য গ্যাসই একমাত্র ভরসা। শিল্প-কলকারখানা ছাড়াও পরিবহন খাতের একটি অংশ গ্যাসের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। কিন্তু কখনো কখনো এই গ্যাস সংকট মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অনেক সময়ই গ্যাসের চাপ না থাকায় সময়মতো রান্না করা যায় না। কোনো কোনো জায়গায় গ্যাসই থাকে না। এতে বাসাবাড়ির রান্না, গ্যাসনির্ভর শিল্প, যানবাহনের সিএনজি নিতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। গ্যাসের লাইন থাকলেও সরবরাহ কম থাকা বা বন্ধ থাকার কারণে বেশিরভাগ ভোক্তাকেই বিকল্প হিসেবে এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার কিনতে হয়। ২০২০ সালে বাসাবাড়িতে গ্যাস সংযোগ প্রদান স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয় সরকার। যে কারণে এলপিজি সিলিন্ডারের চাহিদা বেড়ে যায় কয়েক গুণ। আর এর সুযোগ নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। মাঝখান থেকে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ভোক্তারা।

জানা যায়, দেশে ভোক্তা পর্যায়ে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম এক লাফে ২৬৬ টাকা বাড়িয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের জন্য প্রতি ১২ কেজির সিলিন্ডারের দর নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৪৯৮ টাকা, যা জানুয়ারি মাসে ছিল ১ হাজার ২৩২ টাকা। একসঙ্গে ২৫০ টাকার বেশি দাম বাড়ানোয় এমনিতেই ক্রেতাদের ওপর চাপ তৈরি হয়েছে। তার ওপর এখন সরকার নির্ধারিত দামেও গ্যাস পাচ্ছেন না ক্রেতারা। ১৪৯৮ টাকার গ্যাস খুচরা পর্যায়ে বিক্রি করা হচ্ছে ১৮০০ টাকায়। কোথাও কোথাও আরো বেশি। অর্থাৎ ৩০০ টাকারও বেশি নেওয়া হচ্ছে ১২ কেজির সিলিন্ডারে। সংস্থাটি প্রতি মাসেই এলপিজির দাম নির্ধারণ করে দেয়। তবে সব জায়গায় তা কার্যকর হতে দেখা যায় না। সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে সিলিন্ডার প্রতি কয়েকশ টাকা বেশি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে। গত রবিবার প্রতিদিনের সংবাদের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, নির্ধারিত মূল্যে সিলিন্ডার তো পাওয়া যাচ্ছেই না বরং কোথাও কোথাও কমে গেছে গ্যাসের সরবরাহ। এ পর্যায়ে খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, তাদের কাছে গ্যাসই নেই। অপরদিকে গ্রাহকরা বলছেন, কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে ব্যবসায়ীরা অসৎ প্রক্রিয়ায় সিলিন্ডার গ্যাসের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। কোনো কোনো ব্যবসায়ী বলছেন, আমরা ইচ্ছা করে দাম বেশি রাখছি না। কোম্পানির লোকদের কাছ থেকে আমাদের কেনা পড়ছে বেশি দামে। আমরা তো লস দিয়ে বিক্রি করতে পারি না। অন্যদিকে কোম্পানির লোক বলছে, এলপিজি সিলিন্ডারের মূল্য বেশি রাখাটা যে শুধু কোম্পানির দোষ, ব্যাপারটা তা নয়। গ্যাস বিক্রির সিস্টেমে ত্রুটি রয়েছে। যার খেসারত দিচ্ছে ভোক্তা সাধারণ।

বলাবাহুল্য, এমন পাল্টাপাল্টি অভিযোগ শুধু গ্যাসের ক্ষেত্রে নয়, নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক পণ্যের বেলায়ও ঘটছে। অযাচিতভাবে দাম বাড়ানো বা অতি মুনাফা লাভের পাঁয়তারা একটা চক্র সব সময়ই করে থাকে। ডিলাররা যখন দেখে যে এ মাসে প্রোডাক্ট কম আসছে কোম্পানি থেকে, তখন তারা টার্গেট পূরণের জন্য বেশি দামে সিলিন্ডার বিক্রি করে। আবার দোকানি যখন দেখছে সাপ্লাই কম, তারাও তখন মজুদ করে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। সুতরাং সমস্যাটা সামগ্রিকভাবে তৈরি হয়। ভুগতে হয় ভোক্তাদের। এ সমস্যার সমাধান জরুরি। জনস্বার্থে সরকারকে এটা অবশ্যই খতিয়ে দেখতে হবে। নির্ধারিত দামে যাতে এলপি গ্যাস বিক্রি হয় সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে হবে। একইসঙ্গে যারা অযৌক্তিকভাবে বেশি দামে বিক্রি করবে তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close