reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২১ মে, ২০২২

কারিগর তো সেই, যে স্বপ্ন দেখাতে পারেন

স্বপ্ন দেখতে কোনো বাধা নেই। আর স্বপ্নের নেই কোনো সীমা। মানুষ নাকি তার স্বপ্নের সমান বড়। কিন্তু এই মহান অনুভূতিটাকে আমরা যেন কোনো গন্ডির মধ্যে বেঁধে না ফেলি। স্বপ্নটা কেবল যেন নিজের জন্যই না হয়। বরং স্বপ্নটা হওয়া উচিত নিজেকে, পরিবারকে আর দেশকে নিয়ে। তাতে নিজের ছাড়া পরিবার আর দেশের প্রতি নিজের যে দায়বদ্ধতা আছে, তা আরো স্পষ্ট হবে। যেদিন আমরা পরিবার নিয়ে স্বপ্ন দেখতে পারব, সেদিন দেখা যাবে প্রতিটি পরিবারে হাসি ফুটেছে। আর যেদিন আমরা দেশ নিয়ে স্বপ্ন দেখব, সেদিন এই দেশের প্রত্যেকটি মানুষের মুখে হাসি ফুটবে, দেশের উন্নতি হবে বাধাহীন। তবে দেশ নিয়ে স্বপ্ন দেখার মানুষ হয়তো ক্রমশ কমে যাচ্ছে। সবাই কেমন যেন আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছে। নিজেকে, পরিবারকে আর দেশকে ভালোবেসে যে স্বপ্ন দেখে ও দেখাতে পারেন, সেই হলো আসল কারিগর। শ্রদ্ধার পাত্র।

কিন্তু কজন পারে নিজে স্বপ্ন দেখতে এবং অপরকে দেখাতে? সমাজে এ রকম মানুষের সংখ্যা খুবই কম। নেই বললেও কম বলা হবে না। আবার এটিও সত্য যে, যুগে যুগে, কালেভদ্রে এ রকম মানুষের দেখা পাওয়া যায়। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর বাংলাদেশের মানুষ একজনকে পেয়েছিল। যিনি নিজে স্বপ্ন দেখেছেন, মানুষকে স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছেন বা উদ্বুদ্ধ করেছেন। তিনি আর কেউ নন, বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার সেই মহান কর্মের কারণেই আমরা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছি। পেয়েছি একটি পতাকা।

আমরা স্বাধীনতার ৫০ বছর পার করেছি। বঙ্গবন্ধু এখন আর আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, বিগত ৫০ বছরের মাঝে আমরা সে রকম একজন মানুষের খোঁজ পাইনি। যিনি তার মতো স্বপ্ন দেখেছেন এবং মানুষকে সেই স্বপ্নে উদ্বুদ্ধ করতে পেরেছেন। কিংবা বলা যায়, সমাজ তার মতো একজন মানুষ তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা এখন তার স্বপ্নকে ঘিরেই বেঁচে আছি। বাস্তবায়নের চেষ্টা করছি। কিন্তু তার কতটুকুইবা বাস্তবায়ন করতে পেরেছি। একসময় দেখেছি, তার অঙ্গুলি হেলনে মানুষ ওঠে দাঁড়িয়েছে এবং বসেছে। এটি তার জীবনের শ্রেষ্ঠ একটি অর্জন। সাহস এবং ভালোবাসা দিয়েই তার এই অর্জন।

বঙ্গবন্ধু আজ আমাদের সঙ্গে নেই। তার হাত ধরে বাংলাদেশে কম উন্নয়ন হয়নি। বিশেষত বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। এ কথা অস্বীকার করার কোনো পথ খোলা নেই। মানুষের মাথাপিছু আয় বহু গুণে বেড়েছে। রিজার্ভ বেড়েছে অকল্পনীয়। বয়সসীমা বেড়েছে। বেড়েছে প্রবৃদ্ধি। কিন্তু বৈষম্য কমেনি। বৈষম্য কমার যে স্বপ্ন দেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু নিজেই। প্রশ্ন উঠতেই পারে, তাহলে কি আমরা তার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে গিয়ে তার দেখানো পথে চলতে পারিনি। বাস্তবতা বলছে, এই বৈষম্যের কারণে মানুষ ভালো থাকার চেষ্টা করেও থাকতে পারছে না। তাদের আয়ের তুলনায় ব্যয় বেশি হয়ে যাচ্ছে।

কিছুতেই হিসাবটা মিলছে না। নুন আনতে পান্তা ফুরিয়ে যাওয়ার মতো অবস্থায় দিন কাটাতে হচ্ছে। নিত্যপণ্যের দাম প্রতিদিনই বাড়ছে। কোনোভাবেই তা রোধ করা যাচ্ছে না। সম্ভবত বৈষম্য না কমা পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। আমরা অপেক্ষা করব। বঙ্গবন্ধুর দেখানো স্বপ্ন থেকে সরে আসা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। আমরা মনে করি, তার দেখানো পথই আমাদের সার্বিক মুক্তির জন্য উৎকৃষ্টতম পথ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close