reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

মাতৃভাষা নিয়ে তারুণ্যের ভাবনা

বাংলা আমাদের মাতৃভাষা, মায়ের ভাষা। বিশ্বের প্রায় ৩০ কোটি মানুষের মাতৃভাষা বাংলা। অন্যান্য মাতৃভাষার চেয়েও বাংলা ভাষাভাষী মানুষ তাদের মাতৃভাষা নিয়ে বেশি গৌরবে থাকে। কারণ এই ভাষা পেতে দিতে হয়েছে প্রাণ, ঝরাতে হয়েছে রক্ত। এ দিবসের মাধ্যমে স্বীকৃত হয়েছে বাঙালি জাতির জাতিসত্তা। এই মাতৃভাষা বাংলা নিয়ে তরুণ শিক্ষার্থীরা কী ভাবছেন জানতে চেয়েছেন ওমরগণী এমইএস কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আজহার মাহমুদ

একুশ-ই বাঙালি স্বাধীনতার প্রথম স্পর্শ

ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালি জাতির মাঝে যে চেতনার উন্মেষ হয়, তার চরম বিস্ফোরণ ঘটে উনসত্তর থেকে একাত্তরে। একুশে ফেব্রুয়ারির তাৎপর্য শহীদ দিবস পালনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি তা বাঙালির জাতীয় জীবনের সর্বত্র প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়। বাংলাদেশের সব আন্দোলনের মূল চেতনা ২১ ফেব্রুয়ারি। তখন থেকেই বাঙালি উপলব্ধি করেছিল তার বাঙালি জাতীয়তাবোধ তার সংস্কৃতের অতন্দ্র প্রহরী। এই সংগ্রামী চেতনায় বাংলার সাংস্কৃতিক আন্দোলন এবং রাজনৈতিক আন্দোলন এই দুই ধারাকে একসূত্রে গ্রথিত করে মুক্তি সংগ্রামের মোহনায় এনে দিয়েছে। একুশ আমাদের স্বাধিকার চেতনার ভিত্তিমূল, একুশে-ই বাঙালির স্বাধীনতার প্রথম স্পর্শ। সেদিন তারা স্বাধিকারের যে চেতনায় উজ্জীবিত হয়েছিল, তারই ধারাবাহিকতায় বাঙালি জাতি ১৯৭১-এ ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মুক্তিযুদ্ধে। সেই রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে বিজয়ের মধ্য দিয়ে আমরা লাভ করি স্বাধীন মাতৃভূমি বাংলাদেশ। তাই স্বাধীনতার প্রথম স্পর্শকে আঁকড়ে ধরা উচিত।

মাহমুদা টুম্পা

শিক্ষার্থী, ব্যবস্থাপনা বিভাগ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।

একুশের চেতনা প্রতিফলিত হোক

১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই পশ্চিম পাকিস্তানের মানুষ নিরীহ বাঙালির প্রতি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এমনকি সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রেও আঘাত শুরু করে। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ঐতিহ্য নস্যাৎ করার অপতৎপরতায় লিপ্ত হয়। মাতৃভাষা বাংলার অস্তিত্ব ও অন্যতম রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা রাখতে গিয়ে বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছিল রফিক, সালাম, বরকত, জব্বারসহ নাম না জানা অনেকেই। তাদের রক্তে শৃঙ্খলমুক্ত হয়েছিল আমাদের মায়ের ভাষা। ভাষা আন্দোলনের মূল দাবি ছিল- সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলন ঘটানো। কিন্তু আজো সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলন হয়নি। এখনো উচ্চ শিক্ষা, অফিস-আদালতে বাংলার প্রাধান্য হয়নি। বিভিন্ন সাইন বোর্ড, বিল বোর্ড, রাষ্ট্রীয় বড় বড় প্রোগ্রামসহ সর্বত্র দেখা যায় ভুল বানানের ছড়াছড়ি। তাই ভাষার ইতিহাস, শুদ্ধ চর্চা, মননে ধারণ করার মধ্যেই একুশের চেতনা প্রতিফলিত হোক তরুণ প্রজন্মের কাছে।

চন্দন মন্ডল

শিক্ষার্থী, অর্থনীতি বিভাগ

সরকারি তিতুমীর কলেজ

ঢাকা।

একুশের চেতনায় সদা জাগ্রত তরুণ সমাজ

বাংলা ভাষা ও ভাষা আন্দোলন এই শব্দ দুটি মনে করিয়ে দেয় এক রক্ত ঝরার ইতিহাসকে। আর এই রক্তদানের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে মিশে আছে বাঙালি তরুণদের সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের সব গল্প। ‘কাঁদতে আসিনি, ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি’ এই ধ্বনি নিয়ে রাজপথে নেমেছিল বাংলার দামাল সন্তানরা, ছিনিয়ে এনেছিল রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা। শত সংগ্রামের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে বাংলা ভাষার একুশের দোরগোড়ায় আসার পথ মোটেও সহজ ছিল না। তরুণদের চেতনাই কেবল ভাষা আন্দোলনের মূল চালিকা শক্তিকে সবল রেখেছিল। ভাষা আন্দোলনে সালাম, বরকতরা বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে যেন বাংলা ভাষা রক্ষার এক গুরু দায়িত্ব দিয়ে যান বর্তমান তরুণ সমাজের হাতে। তরুণরা নিজের ভাষার প্রতি সম্মান রেখে মাতৃভাষা রক্ষার সেই দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে যাক যুগ যুগ ধরে। একুশের এই দৃঢ় চেতনা বুকে লালন করে এগিয়ে যাক তরুণ সমাজ। ভাষার মাসে তরুণ প্রজন্ম আজ সেই প্রেরণাই যেন পাচ্ছে।

সাইদুন্নিছা তোহ্ফা

শিক্ষার্থী, উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগ

চট্টগ্রাম কলেজ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close