reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৯ মে, ২০২২

তারুণ্যের ঈদ উদ্‌যাপন

করোনা মহামারির শঙ্কা কাটিয়ে মুসলমানরা উদ্‌যাপন করেছে ঈদুল ফিতর। মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে বড় ও আনন্দপূর্ণ হচ্ছে ঈদের দিন। দীর্ঘ দুই বছর পর এবারের ঈদে আগের চিরচেনারূপ দেখা মেলেছে। ঈদ ঘিরে সবারই থাকে নানা আয়োজন, নানা পরিকল্পনা। ঈদের আনন্দ উপভোগ করতেই শত কষ্টের মাঝেও সবার বাড়ি ফেরা। আর বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তরুণ শিক্ষার্থীদের তো যেন বাঁধভাঙা উল্লাস। এই ঈদে অনেক দিন পর তরুণ মনে ছিল আগের মতো উদ্দীপনা। সব মিলিয়ে করোনা-পরবর্তী সময়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত তরুণ শিক্ষার্থীদের ঈদ উদ্‌যাপন তুলে ধরেছেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ক্যাম্পাস সাংবাদিক মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ

বর্ষণময় শঙ্কাহীন ঈদ

করোনা নিয়ে যে শঙ্কা বিরাজমান ছিল তা এবারের ঈদে কম দৃশ্যমান ছিল। বিশেষত গ্রামের বাড়িতে যারা ঈদ উদযাপন করেছে তাদের মধ্যে ছিল বাঁধভাঙা উল্লাস। তবে এবার বেশিরভাগ জেলাতেই ঈদের দিন বৃষ্টি ছিল। রমযানের শেষ দিকে তীব্র তাপদাহে মানুষের যে নাজেহাল অবস্থা ছিল তার বিপরীতে ঈদের দিনে বর্ষণ নিদারুণ স্বস্তি প্রদান করেছে। তারপরও থেমে থাকেনি ঘুরাঘুরি, আত্নীয় স্বজনের বাসায় বেড়াতে যাওয়া। সারাদিনই ছিল মিষ্টান্নের আয়োজন। মোটাদাগে বলতে গেলে যদিও এবারের ঈদের দিনটি বর্ষণময় ছিল তাও বিগত দুই বছরের চেয়ে অনেকটাই শঙ্কাহীন ও স্বস্তিদায়ক ঈদ উদযাপন করেছেন দেশের জনগণ এতেই তৃপ্তি।

সানজিদা মাহমুদ মিষ্টি

শিক্ষার্থী, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা

ভাগাভাগিতেই মেলে ঈদের খুশির প্রকৃত আনন্দ

অনাবিল আনন্দ ও উল্লাসের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হলো ঈদুল ফিতর। সাম্য, ভ্রাতৃত্ব ও একাত্মবোধের মাধ্যমে আনন্দ উপভোগ এবং পারস্পরিক সাহায্য-সহযোগিতার সম্প্রসারণ ঘটল এই ঈদে। ঈদ আমাদের সামষ্টিক জীবনে যে মিলন ও শুভবোধের চর্চার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে, তা সঞ্চারিত হোক নিত্যকার জীবনযাপনে। ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য বজায় রেখে সামাজিকতা ও মানবতাবোধকে সমুন্নত রেখে সুন্দর ভাবে ঈদ উদযাপিত হলো। বড় হতে হতে ঈদ আনন্দে কেমন পরিবর্তন এসেছে, ছোটদের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে তা শুধু দেখি। আর করি শৈশব-কৈশোরের ঈদকে। সবকিছুর মাঝে সব থেকে সুন্দর অনুভূতি পরিবারের সাথে ঈদ কাটানো। হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে সাম্য, মৈত্রী, সহমর্মিতা, সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হই। পরিবার, আত্মীয়-স্বজন এবং গরিব-দুঃখীদের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করি। আশা করি সামনের ঈদের দিনগুলোও ভালো কাটবে।

সাঈমা আক্তার

শিক্ষার্থী, তৃতীয় বর্ষ, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা

আনন্দে কেটেছে খুশির ঈদ

ঈদ মানে একরাশ আনন্দ, ঈদ মানে উচ্ছ্বাস। ঈদ মানে সবার মনে প্রাণোচ্ছল উদ্দীপনা। ঈদুল ফিতর মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। শেষ রমজান অর্থাৎ চাঁদরাতের দিন ইফতার শেষে ‘রমজানের ওই রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’- গানটির মধ্য দিয়েই যেন সবার মধ্যে ঈদের আমেজ চলে আসে। ঈদের সকালে সবাই মিলে ঈদের নামাজ আদায়ের পর কোলাকুলি ঈদের আনন্দকে বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। সারা বছরের ব্যস্ততাকে পাশে রেখে এই দিনটিতে পরিবারের সদস্য, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়স্বজন সবাই মিলে ঈদের আনন্দ উপভোগ করে। দীর্ঘদিন করোনাকালীন লকডাউনের কারণে বিগত দুই বছর ঈদের আনন্দ প্রায় মলিন ছিল। তাই এবারের ঈদে সেই শঙ্কা কাটিয়ে সবাই হাসিমুখে ঈদ উদযাপন করে। আগামী প্রত্যেকটা ঈদই যেন সবার অনেক বেশি আনন্দে কাটে এই প্রত্যাশাই রইল।

ইসরাত জাহান

শিক্ষার্থী, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।

করোনাকে পেছনে ফেলে বৃষ্টিস্নাত ঈদ

বছর ঘুরে আবার উদযাপিত হলো ঈদুল ফিতর। এবার যেন ফিরে পেয়েছি ঈদের সেই পুরনো আমেজ। ঈদের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে জানালার পর্দা সরাতেই গায়ে শীতল বাতাস পরশ বুলিয়ে দিলো। বন্ধু, আত্মীয় ও পরিচিতদের ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েই আম্মুর সাথে রান্নার কাজে নেমে পড়লাম। খাওয়া-দাওয়া শেষে পরিবারের সবাই মিলে আড্ডায় মেতে উঠলাম। ঠিক তখনই আকাশ ভেঙে নেমেছিল ঝুম ঝুম বৃষ্টি। শ্রাবণধারার মোহময় বাতাস, বিদ্যুৎ চমকানো, গুড়ুম গুড়ুম মেঘের গর্জন। ঈদের দিন বাড়িতে ছোটদের চকলেট, চিপস, কোমল পানীয় কিনে দিলাম। তাদের সেই সম্মোহনী হাসি আমার ঈদের আনন্দ কয়েক গুণ বাড়িয়ে তোলেছে। ঈদের বিকেলে মামাতো-চাচাতো ভাই- বোনেরা এলো। তাদের সাথে খাওয়া-দাওয়া, লুডু খেলা, সন্ধ্যায় টিভিতে ঈদের অনুষ্ঠান দেখা। সব মিলিয়ে অসাধারণ একটি ঈদ উদযাপন করলাম।

আফরোজা আক্তার

শিক্ষার্থী, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।

করোনার পর একটি আবেগময় ঈদ

একমাস সিয়াম সাধনার পর আসলো পবিত্র ঈদুল ফিতর। এবারে ঈদ দুটি কারণে ভিন্ন, একটি করোনার পর এই প্রথম আমরা সবাই মিলে ঈদগাহে নামাজ আদায় করতে পেরেছি, দ্বিতীয় বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম ঈদ। সকাল বেলা যথারীতি গোসল করে ঈদগাহে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত, হঠাৎ আসলো বৃষ্টি, বৃষ্টি বর্ষণ শেষ হলে নামাজ আদায় করে সবার সাথে কোলাকুলি করার মূহূর্তটি ছিল আরো আনন্দময়। ঈদের আরো একটি বিশেষ দিক হচ্ছে খাওয়া দাওয়া, মায়ের হাতের সেমাই, পায়েস, পোলাও এগুলো অন্য রকম ভালোবাসা। বিকেলে বৃষ্টি কমলে চাচাতো ভাই, বন্ধুদের সাথে আড্ডা ঈদের আনন্দ আরে দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিলো। করোনা মহামারির পর এত সুন্দর একটি ঈদ পালন করা সত্যি বিশেষ আনন্দ বয়ে আনে, বিশেষ করে ছোটদের মাঝে এই আনন্দটা আরো বেশি ছিল।

মো. সাকিবুল ইসলাম

শিক্ষার্থী, সমাজকর্ম বিভাগ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা

কেটেছে করোনা-পরবর্তী স্বাভাবিক ঈদ

করোনা পরবর্তী কিছুটা স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ঈদ পালন করলো মুসলিম জাহান। দীর্ঘদিন পর এই ঈদ পালনে এক অন্য রকম আমেজ ছিল। সকাল থেকেই আকাশে ছিল মেঘের আনাগোনা। তার পরও মুসল্লিরা সকাল হতেই ঈদের নামাজে অংশ নিতে শুরু করে। ঈদুল ফিতর আমাদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ও প্রাণের উৎসব। তাই এই উৎসবকে ঘিরে তরুণ-তরুণীদের মধ্যেও ছিল অনেক আগ্রহ। সকাল হতেই নতুন পোশাক পড়ে, নিজেদের সাজিয়ে গা ভাসিয়ে দেয় ঈদের আনন্দে। পাড়ায় পাড়ায় দেখা যায় আনন্দের জোয়ার। আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে ঘোরাঘুরি। বন্ধুদের সাথে আড্ডা, পরিবারের সাথে ঘুরতে যাওয়া- এ এক অন্য রকম আমেজ। এত আনন্দের মাঝে বৃষ্টি কিছুটা ভাগ বসাতে চাইলেও ঈদের আমেজ নষ্ট করতে পারেনি। বরং দুই বছর পর পাওয়া এই ঈদকে বরণ করে নিয়েছে সবাই এবং তৈরি হয়েছিল এক আনন্দমুখর পরিবেশ।

সাফা আক্তার নোলক

শিক্ষার্থী, দর্শন বিভাগ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

সম্মিলিত ঈদ উদ্‌যাপন

বৈশ্বিক মহামারি করোনার প্রকোপের কারণে গত দুবছর ঈদগাহে নামাজ হয়নি। নানা বিধিনিষেধ থাকায় নিজ নিজ এলাকার মসজিদেই ঈদের নামাজ আদায় করতে হয়েছে। আবার অনেকে পরিবারের সাথে ঈদ উদযাপন করতে পারেনি। এবছর দেশ এবং বিশ্বে করোনা সংক্রম নিয়ন্ত্রণ থাকায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিবারের সাথে ইদ উদযাপন করতে পেরেছে মুসলিমরা। দুবছর পর ঈদগায় গিয়ে সবার সাথে ঈদের নামাজ আদায় করতে পেরে স্বস্তি ফিরেছে সবার মাঝে। প্রতিটি ঈদগাহে বিরাজ করেছে উৎসবমুখর পরিবেশ। একই সাথে পর্যটন কেন্দ্রগুলো খোলা থাকায় ছিল মানুষের উপচে পড়া ভিড়। এভাবেই নানা আয়োজন এবং অপেক্ষার সমাপ্তির মাধ্যমে শেষ হয়েছে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় উৎসব ঈদুল ফিতর।

মুশফিকুর রহমান

শিক্ষার্থী, মার্কেটিং বিভাগ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা

বৃষ্টিস্নাত আনন্দময় ঈদ উদ্‌যাপন

ঈদ মানে আনন্দ। মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈতুল ফিতর। প্রতি বছর দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর আসে ঈদের আনন্দ। দীর্ঘ দুই বছর করনাকালীন সময় পার করে দেশের মানুষ এবারের ঈদ উদযাপন করেছে কিছুটা বাড়তি উৎসাহ ও উদ্দীপনা নিয়ে। ঈদ উদযাপনের জন্য বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা পার করেও হাজার হাজার মানুষ পৌঁছেছে পরিবারের কাছে। পরিবারের সঙ্গে পালন করেছে ঈদ, ছড়িয়েছে ভালোবাসা। এবার ঈদের দিন দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি ছিল। তাতেও ভাটা পড়েনি ঈদের আমেজে। ঈদগাহে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঈদের নামায। বিভিন্ন পার্কসহ দর্শনীয় স্থানগুলোতে দেখা গেছে ছোট-বড় সকলের পর্যাপ্ত উপস্থিতি। তরুণদের উৎসাহ-উদ্দীপনা ছিল চোখে পড়ার মতো। অনুষ্ঠান আয়োজন, ঘুরাঘুরি এবং বিভিন্ন কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে তাদের দিনটি কেটেছে বেশ চমৎকারভাবে। প্রতিবছর এভাবেই সবার মাঝে ঈদের আনন্দ বিরাজ করুক এমনটাই প্রত্যাশা।

মো. আলী শুভ

শিক্ষার্থী, শিক্ষা ও গবেষণা ইনিস্টিটিউট

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close