প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২৩ মার্চ, ২০২৩

শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল আফগানিস্তান-পাকিস্তান

* পাকিস্তানে নিহত ৯ আফগানিস্তানে ২ * আহত তিন শতাধিক * স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ

আফগানিস্তান-পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী আফগান অঞ্চল বাদাখসানে মঙ্গলবার (২১ মার্চ) রাতে শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়েছে। রিখটার স্কেলে এর তীব্রতা ছিল ৬ দশমিক ৫। ভূমিকম্পের সময় বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ও বাড়িঘর থেকে বেরিয়ে যান। এমনকি প্রত্যন্ত গ্রামেও মানুষ ভীত-সন্ত্রস্ত হয় পড়েন। ভূমিকম্পে দুই দেশে অন্তত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন তিনশোর বেশি মানুষ।

পাকিস্তানের জরুরি পরিষেবার মুখপাত্র বিলাল ফাইজি জানিয়েছেন, পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিম খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের সোয়াত উপত্যকা অঞ্চলের হাসপাতালে ৩০০ জনেরও বেশি লোককে ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় আনা হয়েছে। খবর এপির।

ফাইজি বলেন, এই আতঙ্কিত লোকরা মুষড়ে পড়েছিলেন এবং কেউ কেউ মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। প্রাথমিক চিকিৎসার পর বেশির ভাগকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

উত্তর-পশ্চিমে প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র তৈমুর খান বলেছেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলে বেশ কিছু বাড়ি ধসে পড়েছে। ক্ষয়ক্ষতির তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল ও অন্যান্য এলাকায়ও একই অবস্থা হয়েছে। কাবুলের বাসিন্দা শফিউল্লাহ আজিমি বলেন, ভূমিকম্প এতই শক্তিশালী ও ভয়ানক ছিল যে, আমরা ভেবেছিলাম আমাদের ওপর বাড়িঘর ভেঙে পড়ছে, লোকরা সবাই চিৎকার করছিল এবং হতবাক হয়ে পড়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগ জানিয়েছে, এই ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল পাকিস্তান ও তাজিকিস্তানের সীমান্তবর্তী আফগানিস্তানের পাহাড়ি হিন্দুকুশ অঞ্চলের জুর্ম থেকে ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পূর্বে। এর উৎপত্তিস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠের ১৮৭ দশমিক ৬ কিলোমিটার গভীরে।

অন্যদিকে পাকিস্তান মেটেরোলোজিক্যাল ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছে, ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল ৬ দশমিক ৮।

রখশিন্দা তৌসিদ নামে একজন চিকিৎসক জানান, ভূমিকম্পের সময় তিনি পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলের লাহোর শহরে তার হাসপাতালে ছিলেন। তিনি বলেন, আমি দ্রুত রোগীদের নিরাপদ জায়গায় যেতে বলেছি।

পাকিস্তানের গ্যারিসন শহর রাওয়ালপিন্ডির বাসিন্দা খুররম শাহজাদ বলেছেন, তিনি তার পরিবারের সঙ্গে একটি রেস্তোরাঁয় নৈশভোজ করছিলেন। এ সময় ভবনটি দুলতে শুরু করে।

আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের রাজধানী পেশোয়ারেও একই অবস্থা ছিল। সেখানে লোকজনকে তাদের বাড়ি এবং অফিসের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এক বিবৃতিতে বলেছেন, তিনি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তাদের যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সতর্ক থাকতে বলেছেন।

আফগানিস্তানে তালেবান সরকারের প্রধান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ টুইট করে বলেছেন, জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সব স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছে। অঞ্চলটি মারাত্মক ভূমিকম্পপ্রবণ একটি অঞ্চল। ২০০৫ সালে ৭ দশমিক ৬ তীব্রতার ভূমিকম্পে পাকিস্তান ও কাশ্মীরে হাজার হাজার মানুষ মারা যায়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close