প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২১ মার্চ, ২০২৩

সংবাদমাধ্যম এক্সিওস ও জরিপ সংস্থা ইপসসের জরিপ

ইরাকের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সিদ্ধান্ত ছিল ভুল

২০ বছর আগে ২০ মার্চ ইরাকে স্থল হামলা শুরু করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। বিমান শুরু করেছিল আরো এক দিন আগেই অর্থাৎ ১৯ মার্চ। প্রায় ৮ বছর চলা সেই যুদ্ধে শুধু ২ লাখের বেশি বেসামরিক ইরাকি নিহত হয়েছিল। সেই যুদ্ধ শুরুর ২০ বছর পর এসে অধিকাংশ মার্কিনি মনে করছেন ইরাক যুদ্ধ ভুল ছিল। অনলাইন সংবাদমাধ্যম এক্সিওস ও জরিপ সংস্থা ইপসসের জরিপ থেকে এ তথ্য উছে এসেছে।

রুশ সংবাদমাধ্যম আরটির খবর, ২০০৩ সালের মার্চে যখন যুক্তরাষ্ট্র ইরাকে আগ্রাসন চালায় তখন তার পক্ষে মত দিয়েছিল দুই-তৃতীয়াংশ মার্কিনি। কিন্তু যুদ্ধের ২০ বছর পর এসে এখন ৬১ শতাংশ আমেরিকানই মনে করেন ইরাকে আগ্রাসন চালানো যুক্তরাষ্ট্রের ভুল সিদ্ধান্ত ছিল।

তবে এখনো অবশ্য ইরাক যুদ্ধ সঠিক ছিল এমনটা ভাবা মানুষের অভাব নেই। এক্সিওস ও ইপসসের জরিপ থেকে দেখা গেছে, ২৬ শতাংশ ডেমোক্র্যাট ও ৫৮ শতাংশ রিপাবলিকান এখনো ইরাক আগ্রাসনের সিদ্ধান্তকে সঠিক বলে মনে করেন।

গত সপ্তাহে আঠারো বছরের বেশি বয়সি ১ হাজার ১৮ জন আমেরিকানের ওপর এ জরিপ চালায় এক্সিওস ও ইপসস। এতে আরো দেখা যায়, জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৬৭ শতাংশই মনে করেন, এ যুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রকে কোনোভাবেই নিরাপদ করেনি। খবর রয়টার্সের।

জরিপে উঠে আসা তথ্যানুসারে, যুক্তরাষ্ট্র বৈশ্বিক নেতৃত্বে থাকুক এমনটা চান প্রায় তিন-চতুর্থাংশ আমেরিকান। ৭৯ শতাংশ রিপাবলিকান এবং ৭৫ শতাংশ ডেমোক্রেটের চাওয়া এটি। গত দুই দশকে জাতীয় প্রতিরক্ষা ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার ওপর ওয়াশিংটনের সার্বিক মনযোগ যুক্তরাষ্ট্রকে আরো নিরাপদ করেছে বলে মনে করছেন ৫৪ শতাংশ আমেরিকান।

ইরাকের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের কাছে ‘গণবিধ্বংসী অস্ত্র (উইপনস অব মাস ডেস্ট্রাকশন)’ রয়েছে এমন অভিযোগ তুলে দেশটিতে আগ্রাসন চালিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটো।

ইরাক বডি কাউন্ট প্রজেক্ট নামের একটি সংস্থার হিসাব মতে, ওই আগ্রাসন ও তার পরবর্তী মার্কিন দখলদারত্বে ইরাকে ২ লাখ ১০ হাজার বেসামরিক নাগরিক নিহত হন।

সাদ্দামের পতনের দিনটির কথা মনে করে ইরাকি নাগরিক আদেল আমের বলেন, ‘আমি পাগলের মতো নাচছিলাম। আমি বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না যে সাদ্দাম আর ক্ষমতায় নেই। আমার নিজেকে খাঁচা থেকে মুক্ত পাখি মনে হচ্ছিল। কিন্তু সাদ্দামের পতনের মধ্যে দিয়ে ইরাকে সংঘাত-বিশৃঙ্খলার আরেকটি যুগের সূচনা হয়। সাদ্দামণ্ডপরবর্তী ইরাক বিচ্ছিন্নতাবাদ, জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িক সংঘাতের উত্থান দেখে। এসব ঘটনা ৬৩ বছর বয়সি আমের ও তার পরিবারের দুঃখণ্ডকষ্ট আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।

গত শতকের আশির দশকে সাদ্দামের শাসনামলে ইরানের সঙ্গে যুদ্ধের সময় ইরাকি সেনাবাহিনী ত্যাগ করেন আমের। এই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘সব সময় মৃত্যুর মুখোমুখি হতে আমি বিরক্ত হয়ে পড়েছিলাম। আমি আমার বন্ধুদের ইরানের ভারী গোলার আঘাতে নিহত বা পঙ্গু হতে দেখেছি।’

আমের বলেন, ‘আমি তখন নিজেকে বলছিলাম, ইরাকি সেনাবাহিনী থেকে পালানোর সময় এসেছে। তবে আমি জানতাম, পালানোর পর ধরা পড়লে আমাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে। কিন্তু বেঁচে থাকাটাই সার্থক ছিল। আর আমি তা করেছি। এ কারণেই আজ আমি বেঁচে আছি।’

সেনাবাহিনী থেকে পালানোর পর নিজেকে রক্ষায় আমের বাড়ি ছাড়েন। তিনি পালিয়ে অন্যত্র চলে যান।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close