প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২১

৯/১১ হামলার ২০ বছর আজ

২০০১ সালে ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে হামলার ২০তম বার্ষিকী আজ। ওই হামলায় প্রায় তিন হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে। এই হামলা ছিল শতাব্দীর অন্যতম সবচেয়ে ভয়াবহ একটি হামলা। শুধু যুক্তরাষ্ট্রই নয়, গোটা বিশ্বই চমকে গিয়েছিল ঘটনার ভয়াবহতায়। ওই হামলার জন্য দায়ী করা হয় আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন, আল-কায়েদা নেটওয়ার্ককে। যার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন সৌদি আরবের ধনকুবের ওসামা বিন লাদেন।

হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ওই হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। তিনি ওই দিনের তিনটি হামলাস্থল পরিদর্শন করবেন।

দিনটি ছিল ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার। ২০ বছর আগের ওই তারিখে যুক্তরাষ্ট্রে চারটি যাত্রীবাহী জেট বিমান ছিনতাই করে সন্ত্রাসীরা সেগুলো দিয়ে আঘাত হানে নিউইয়র্কের দুটি আকাশচুম্বী ভবনে। ছিনতাইকারীরা ছোট ছোট দলে পূর্ব আমেরিকার আকাশপথ দিয়ে উড়া চারটি বিমান একই সঙ্গে ছিনতাই করে।

তারপর বিমানগুলো তারা ব্যবহার করে নিউইয়র্ক আর ওয়াশিংটনের গুরুত্বপূর্ণ ভবনে আঘাত হানার জন্য বিশাল ও নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র হিসেবে। প্রথম বিমানটি আঘাত হানে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের সদর দপ্তর টুইন টাওয়ারের নর্থ টাওয়ারে আমেরিকার পূর্বাঞ্চলীয় সময় সকাল ৮টা ৪৬ মিনিটে। দ্বিতীয় বিমানটি সাউথ টাওয়ারে বিধ্বস্ত করা হয় অল্পক্ষণ পর, সকাল ৯টা ৩ মিনিটে।

দুটি ভবনেই আগুন ধরে যায়। ভবন দুটির উপরতলায় মানুষজন আটকা পড়ে যায়। শহরের আকাশে ছড়িয়ে পড়ে ধোঁয়ার কু-লি। দুটি টাওয়ার ভবনই ছিল ১১০ তলা। মাত্র দুই ঘণ্টার মধ্যে দুটি ভবনই বিশাল ধুলার ঝড় তুলে মাটিতে ভেঙে গুঁড়িয়ে পড়ে।

তৃতীয় বিমানটি পেন্টাগনের সদর দপ্তরের পশ্চিম অংশে আঘাত হানে স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৩৭ মিনিটে। রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির উপকণ্ঠে ছিল আমেরিকান প্রতিরক্ষা বিভাগের বিশাল এই সদর দপ্তর পেন্টাগন ভবন।

এরপর সকাল ১০টা ৩ মিনিটে চতুর্থ বিমানটি আছড়ে পড়ে পেনসিলভানিয়ার এক মাঠে। ছিনতাই হওয়া চতুর্থ বিমানের যাত্রীরা ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর পর সেটি পেনসিলভানিয়ায় বিধ্বস্ত হয়।

ধারণা করা হয় ছিনতাইকারীরা চতুর্থ বিমানটি দিয়ে ওয়াশিংটন ডিসিতে ক্যাপিটল ভবনের ওপর আঘাত হানতে চেয়েছিল।

এসব হামলায় সব মিলিয়ে মারা গিয়েছিল ২ হাজার ৯৭৭ জন। নিহতদের বেশির ভাগই ছিল নিউইয়র্কের লোক। উগ্র মতাদর্শের ইসলামপন্থি সংগঠন আল-কায়দা আফগানিস্তান থেকে এই হামলার পরিকল্পনা করেছিল। ওসামা বিন লাদেনের নেতৃত্বাধীন এই গোষ্ঠী মুসলিম বিশ্বে সংঘাত সৃষ্টির জন্য দায়ী করেছিল আমেরিকা এবং তার মিত্র দেশগুলোকে।

বাইডেন যাবেন তিনটি হামলাস্থলে : আজ শনিবার বাইডেন ও ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন নিউইয়র্ক সিটিতে যাবেন। এখানে দুটি বিমান ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ধ্বংস করে। যার ফলে নিহত হয় ২ হাজার ৭৫৩ জন। এই দম্পতি হামলার বাকি দুটি ঘটনাস্থলও পরিদর্শন করবেন। ভার্জিনিয়ার আরলিংটনে তৃতীয় আরেকটি বিমান বিধ্বস্ত হয়। পেনসিলভানিয়ার শাঙ্কসভাইলে চতুর্থ আরেকটি বিমান হোয়াইট হাউসে হামলা চালাতে চেয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। কিন্তু যাত্রীরা জোর করে বিমানটির অবতরণে বাধ্য করে।

ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ও তার স্বামী ডগলাস এমহফ পৃথক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে শাঙ্কসভাইলে যাবেন। পরে তিনি পেন্টাগনে বাইডেনের অনুষ্ঠানে হাজির হবেন। গত শুক্রবার বাইডেন ৯/১১ হামলা নিয়ে এফবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদন জনসম্মুখে প্রকাশ করতে যুক্তরাষ্ট্রের আইন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন। গত মাসে হামলায় নিহত অনেক পরিবারের সদস্যরা বাইডেনকে বলেছিলেন, তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ না করলে ২০তম স্মরণ অনুষ্ঠানে তারা হাজির হবেন না। তারা জানতে চান, কীভাবে সৌদি আরবের নেতারা হামলায় সহযোগিতা করেছে।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close