আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০

বিক্ষোভে উত্তাল ভারত

কৃষি বিলে রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষর

বিতর্কিত তিন কৃষি বিলে ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের স্বাক্ষর করার খবরে বিক্ষোভ আরো জোরালো করেছেন ভারতের কৃষকরা। বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে দিল্লি, পাঞ্জাব, হরিয়ানাসহ বিভিন্ন রাজ্য। গতকাল সোমবার দিল্লির কেন্দ্রস্থলে ইন্ডিয়া গেটের কাছে ট্রাক্টর পুড়িয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

সম্প্রতি লোকসভা ও রাজ্যসভায় পাস হওয়া কৃষি বিলগুলোতে গত রোববার স্বাক্ষর করেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। এর মধ্য দিয়ে বিলগুলো আইনে পরিণত হয়েছে। বিলগুলো পাস না করতে আগে থেকেই বিক্ষোভ করছিলেন কৃষকরা। রাজ্যসভায় বিল পাসের পর তাতে স্বাক্ষর না করতে রাষ্ট্রপতিকে অনুরোধ জানিয়ে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখেন তারা। তবে সে অনুরোধ নাকচ করে বিলগুলোতে স্বাক্ষর করেন কোবিন্দ। আর তাতে ক্ষুব্ধ হয়ে বিক্ষোভ আরো জোরালো করেছেন কৃষকরা। এর মধ্যেই গতকাল সোমবার একটি ট্রাক্টর পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

দিল্লি পুলিশের বিবৃতি অনুযায়ী, সকালে রাজপথে মান সিং ক্রসিংয়ে টাটা ৪০৭ গাড়িতে করে একটি ট্রাক্টর নিয়ে আসে ১৫-২০ জনের একটি দল। তারা গাড়ি থেকে ট্রাক্টরটি নামিয়ে তা পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। তারা নিজেদের ইয়ুথ কংগ্রেস পাঞ্জাবের সদস্য বলে দাবি করেছে। দিল্লি পুলিশের দাবি, বিক্ষোভকারীরা কংগ্রেসপন্থি স্লোগান দিচ্ছিল। এ ঘটনায় এরই মধ্যে পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। তারা সবাই পাঞ্জাবের বাসিন্দা। হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশেও চলছে আন্দোলন। সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, অমৃতসর-দিল্লি রেললাইনের ওপর অবস্থান বিক্ষোভ করছেন চাষিরা। পাঞ্জাবে আন্দোলনে নেমেছে এনডিএর সাবেক জোট শরিক অকালি দলও। তারা বিরোধীদের একজোট হয়ে প্রতিবাদ করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। শুধু উত্তর ভারত নয়, বিক্ষোভে উত্তাল দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটকও। তবে সেই আন্দোলনে বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে রাজ্যের বিধানসভায় পাস হওয়া দুটি বিল। ‘কৃষিপণ্য বিপণন (নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন) সংশোধনী বিল’ ও ‘কর্ণাটক ভূমি সংস্কার সংশোধনী বিল’ প্রত্যাহারে দাবিতে গতকাল বনধ ডাকা হয়েছে। চলছে বিক্ষোভ। সেখানে যানবাহন চলাচল কম। দোকানপাটও খোলেনি। রাষ্ট্রপতি কোবিন্দ বিল তিনটিতে সই করায় তারা বিক্ষোভ আরো জোরদার করবেন বলে হুমকি দিয়েছেন। ভারতের প্রধান বিরোধীদল কংগ্রেস পার্টি কৃষকদের বিক্ষোভে সমর্থন জানিয়েছে।

গত রোববার রাজ্যসভায় কৃষি সংস্কার বিল নিয়ে সরকারের কড়া সমালোচনা করে কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সুর্যওয়ালা বলেছিলেন, সরকার যেন এ দেশের কৃষক সম্প্রদায়ের সামনে হাঁটু গেড়ে বসে, তা নিশ্চিত করব আমরা। এখানে এক পাশে কৃষকদের আর অন্য পাশে বড় বড় ব্যবসায়ীদের রাখা হয়েছে। তারা (কৃষক) লড়বে কীভাবে?

ভারতে সংসদীয় রীতি অনুযায়ী কোনো বিল সংসদের উভয় কক্ষে পাস হওয়ার পরে রাষ্ট্রপতি তাতে সই না করে পুনর্বিবেচনার জন্য ফেরত পাঠাতে পারেন। সেই সঙ্গে সরকারকে বিলে সংশোধনের পরামর্শও দিতে পারেন। তার পর সেই বিল আবার পাস করিয়ে রাষ্ট্রপতিকে পাঠাতে হয়। তবে দ্বিতীয়বার সংসদে পাস হয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে গেলে তখন তিনি বিলে সম্মতি দিতে বাধ্য থাকেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close