আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ০৬ এপ্রিল, ২০১৯

ক্রাইস্টচার্চের হামলাকারীর মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার নির্দেশ

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে বন্দুক হামলা চালিয়ে ৫০ জনকে হত্যায় সন্দেহভাজন ব্রেন্টন ট্যারান্টের মানসিক স্বাস্থ্য পরিক্ষার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। নিউজিল্যন্ডের উচ্চআদালতের বিচারক ক্যামেরন মান্দের বলেছেন, বিশেষজ্ঞরা তাকে দেখে বিচারের উপযুক্ত কি না তা নির্ধারণ করবেন। ট্যারান্টের বিরুদ্ধে হত্যার ৫০টি ও হত্যাচেষ্টার ৩৯টি অভিযোগ আনা হয়েছে।

গত ১৫ মার্চ ২৮ বছর বয়সি অস্ট্রেলীয় নাগরিক ব্রেন্টন ট্যারান্ট নামের সন্দেহভাজন হামলাকারীর লক্ষ্যবস্তু হয় নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদ। শহরের হাগলি পার্কমুখী সড়ক ডিনস এভিনিউয়ের আল নুর মসজিদসহ লিনউডের আরেকটি মসজিদে তার তা-বের বলি হয় অর্ধশত মানুষ। ব্রেন্টন তার হামলাটি ফেসবুকে লাইভ স্ট্রিমিং করে। স্বয়ংক্রিয় বন্দুক হাতে হামলাকারীর এগিয়ে যাওয়া, মসজিদের প্রবেশকক্ষ থেকে বিভিন্ন কক্ষে নির্বিচারী গুলিবর্ষণ আর রক্তাক্ত নৃশংস পরিস্থিতির ভিডিও মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ব্রেন্টনের মধ্যে শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদী প্রবণতাও পাওয়া গেছে।

গতকাল শুক্রবার কারাগার থেকে ভিডিওলিঙ্কের মাধ্যমে আদালতের শুনানিতে হাজির করা হয় ট্যারান্টকে। আদালতে সে সময় হামলার শিকার হওয়া অনেকের স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। বিবিসি জানিয়েছে, আদালতের সংক্ষিপ্ত শুনানিতে ট্যারান্টকে নিশ্চুপ হয়ে শুনতে দেখা গেছে। ওই সময়ে তার কাছ থেকে মন্তব্য শোনা যায়নি। বিবিসির খবরে বলা হয়েছে সন্দেহভাজন হামলাকারী বিচারক ও আইনজীবীদের দেখতে পারছিল।

তবে আদালতে উপস্থিত সাধারণ মানুষদের দিকে ক্যামেরা ঘোরানো হয়নি। আদালত তাকে রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন। আগামী ১৪ জুন পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

আল নুর মসজিদে হামলায় বাবাকে হারিয়েছেন ওমর নবী। গতকাল শুক্রবার আদালতের বাইরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমরা তাকে মেরে ফেলতে চাই না। আমরা চাই সে এখানে দুর্ভোগ পোহাক। আমরা চাই তার শাস্তি হোক। আপনারা জানেন ৫০ জনকে হত্যা ও বহু মানুষকে আহত করার শাস্তি কেমন হতে পারে।

লিনউডের মসজিদে হামলা থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন তোফাজ্জল আলম। তিনিও আদালতের বাইরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, আমি এমন ৫০ জন বন্ধুকে হারিয়েছি যাদের সঙ্গে প্রতি শুক্রবারই দেখা হতো। গুলি চালানোর সময় তাকে দেখতে পাইনি। আমি দেখতে চাই ৫০ জনকে হত্যার পর তার কেমন লেগেছে। তা দেখতেই আমি আদালতে এসেছি।

ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদের হামলার পরই সন্দেহভাজন হিসেবে ট্যারান্টকে আটক করা হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রথমে গাড়ি চালিয়ে সে আল নুর মসজিদে যায়। কাছেই গাড়ি পার্ক করেই মসজিদের প্রবেশপথ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে গুলি করা শুরু করে। মসজিদের ভেতরে প্রায় পাঁচ মিনিট ধরে সে নারী, শিশু আর পুরুষদের ওপর গুলিবর্ষণ করে। মাথায় লাগানো ক্যামেরা দিয়ে হামলার ঘটনা সরাসরি সম্প্রচার করে সে।

আল নুরে হামলার পর গাড়ি চালিয়ে সে পাঁচ কিলোমিটার দূরে লিনউড মসজিদে যায়। এআর-১৫ সহ আধা স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রে সজ্জিত হামলাকারী ওই মসজিদেও নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে। ধারণা করা হচ্ছে অস্ত্রের সক্ষমতা বাড়াতে ম্যাগাজিনে পরিবর্তন এনেছিল সে। আটকের পর থেকেই অকল্যান্ড কারাগারে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে তাকে। নিউজিল্যান্ডের সবচেয়ে কঠিন কারাগার বিবেচনা করা হয় পারেপরেমো শহরের এই কারাগারকে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close