আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ০১ জুলাই, ২০১৮

নারীদের অভিভাবকত্ব আইনে পরিবর্তন আনা হচ্ছে

সৌদি আরবে নারীদের জন্য চালু থাকা অভিভাবকত্ব আইনে পরিবর্তন আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটির একজন রাজকন্যা। তবে এই পরিবর্তনের কোনো সময়সীমা উল্লেখ করেননি তিনি। আরবি ভাষার দৈনিক পত্রিকা ওকাজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সম্ভাব্য এই সংস্কারের কথা জানিয়েছেন দেশটির ক্রীড়া পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আন্ডার সেক্রেটারি রাজকন্যা রিমা বিনতে বন্দর বিন সুলতান আল সৌদ। তিনি বলেছেন, সৌদি নারীদের এখন আর চাকরি, গাড়ি চালানো বা পড়াশুনার জন্য অনুমতির দরকার পড়বে না। সৌদি রাজকন্যা রিমা বিনতে বন্দর বিন সুলতান আল সৌদ

কট্টর ইসলামী শাসনব্যবস্থার তেলনির্ভর অর্থনীতির দেশ সৌদি আরবে নারীদের জন্য অভিভাবকত্ব আইন প্রচলিত রয়েছে। এই আইন অনুযায়ী নারীদের ঘরের বাইরে বের হওয়াসহ অন্য কাজের আগে অভিভাবেকর অনুমতির দরকার পড়ে। গত বছর অর্থনৈতিক নির্ভরতা কমাতে সৌদি যুবরাজ এক সংস্কার পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। এর আওতায় দেশটিতে মে মাসে প্রথমবারের মতো গাড়ি চালানোর অনুমতি পেয়েছেন নারীরা। তবে অভিভাবকত্ব আইন বহাল থাকায় ওই অনুমতির সুফল পাওয়া নিয়ে সন্দেহ পোষণ করেন অনেকে।

সৌদি রাজকন্যা রিমা জানান, সৌদি সংসদ সুরা কাউন্সিল এবং সরকারে থাকা নারীদের মধ্যে অভিভাবকত্ব আইন নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে কবে নাগাদ এই আইনে পরিবর্তন আসবে তার সময়সীমা উল্লেখ করেননি তিনি। তবে শিগগিরই এই পরিবর্তন আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

নারীদের গাড়ি চালানোর মতো কিছু অধিকার দেওয়া হয়েছে জানিয়ে রাজকন্যা রিমা বলেন, সৌদি নারীদের আরো অনেক অধিকার দেওয়া হবে। সৌদি আরবে কোনও নারী মন্ত্রী নেই। নারীদের যাতায়াত, বিয়ে, এমনকি অস্ত্রোপচারের সময়ও পুরুষের অনুমতি প্রয়োজন হয়। দীর্ঘদিন ধরেই এই আইন বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছে সৌদি নারীদের একটি অংশ। তাদের ভাষায় এই আইনের মাধ্যমে তারা দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হয়ে আছে।

সৌদি নারীদের গাড়ি চালানোর রাষ্ট্রীয় নিষেধাজ্ঞা দূর হলেও সমাজের অচলায়তন-জনিত বাধা দূর হয়নি। সেখানকার সমাজে বিরাজিত পুরুষতান্ত্রিক মনোভঙ্গি, অভিভাবকত্ব সংক্রান্ত আইনের বাধা আর যৌন নিপীড়নের ভীতি ডিঙিয়ে গাড়ির স্টিয়ারিং-এ বসতে নিঃসংশয়ী হতে পারছেন না নারীরা। হয়রানির ভয়ে সৌদি নারীদের অনেকে এখনও রাস্তায় গাড়ি নিয়ে বের হতে পারছেন না। পরিবার থেকেও বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন কেউ কেউ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন পোস্ট দিয়ে সৌদি পুরুষদের কেউ কেউ নারী চালকদের নিয়ে ভীতি ছড়ানোর চেষ্টা করছেন। নারী চালকদের কারণে দুর্ঘটনার সংখ্যা বাড়বে দাবি করে,আতঙ্ক ছড়াতে চাইছেন তারা। মানবাধিকারকর্মীরা মনে করছেন, সৌদি আরবে কঠোর ‘অভিভাবকত্ব ব্যবস্থা’র বিলোপ না হওয়া পর্যন্ত গাড়ি চালানোর অনুমতির বিষয়টি নিছক প্রতীকীই থেকে যাবে।

অভিভাবকত্ব ব্যবস্থার আওতায় নারীদেরকে ভ্রমণ, স্কুলে যাওয়া, চিকিৎসাসহ জীবনের বিভিন্ন কাজের ক্ষেত্রে তাদের কাছের পুরুষ অভিভাবকদের কাছ থেকে (স্বামী, বাবা কিংবা ভাই) অনুমতি নিতে হয়। ডিভোর্সড কিংবা বিধবা মাকে থাকতে হয় তার কিশোর সন্তানের অভিভাবকত্বের অধীনে। সৌদি অ্যাকটিভিস্টদের দাবি, নারী অধিকারের লড়াইয়ের জন্য এই অভিভাবকত্ব একটি বড় ইস্যু। পরিবার থেকে অনুমতি না পেলে নারীরা তখন আর গাড়ি চালাতে পারবেন না। অবশ্য, সৌদি কর্তৃপক্ষের দাবি, গাড়ি চালকের লাইসেন্স পাওয়ার জন্য আবেদন করার ক্ষেত্রে সৌদি নারীদেরকে অভিভাবকদের অনুমতি নিতে হবে না।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist