নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২০ এপ্রিল, ২০২৪

মুরগির দাম কমছে বাড়ছে সবজির

ঈদের আগে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ২৩৫ থেকে ২৫০ টাকা কেজিতে। কিছু কিছু জায়গায় তারও বেশি দামে বিক্রি হয়েছে। ঈদ শেষে পহেলা বৈশাখের পর ১৫ এপ্রিল ক্রেতাশূন্য বাজারেও ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ২৩০ থেকে ২৩৫ টাকায়। তবে সেই আরো কিছুটা নেমেছে। গতকাল শুক্রবার মুরগি বিক্রি হয়েছে ২১০ থেকে ২২০ টাকা কেজিদরে। ব্রয়লারের দাম কমলেও বেড়েছে কক মুরগির দাম। আর উচ্চমূল্যে অপরিবর্তিত আছে গরু ও খাসির মাংসের দাম। শুধু মাংসের বাজার ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে তাই নয়। রমজান শেষ হওয়ার পর থেকেই বাড়তে শুরু করেছে সবজির দাম। সাধারণ মানুষের ঘাড়ে আবারও ভর করছে দ্রব্যমূল্যের বাড়তি চাপ।

শুক্রবার রাজধানীর মিরপুর-১ নম্বরের কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বর্তমান পরিস্থিতি। ওজন অনুযায়ী ব্রয়লার মুরগি ২১০ থেকে ২২০, কক মুরগি ৩৪০ থেকে ৩৫০, লেয়ার মুরগি ৩২৫ থেকে ৩৩০, দেশি মুরগি ৬৫০, গরুর মাংস ৭৮০ ও খাসির মাংস ১ হাজার ১৫০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে। আর মুরগির লাল ডিম ১২০ এবং সাদা ডিম ১১০ টাকা প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে। গত সোমবারের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায়, ব্রয়লার মুরগি ও লেয়ার মুরগির দাম কমেছে যথাক্রমে ১৫ থেকে ২০ ও ১০ থেকে ১৫ টাকা। কক মুরগির দাম বেড়েছে ১০ টাকা। আর গরু ও খাসির মাংস উচ্চমূল্যেই অপরিবর্তিত রয়েছে।

ব্রয়লার মুরগির দাম কেন কমছে না- জানতে চাইলে মুরগির বিক্রেতা মাসুদ বলেন, ‘দাম বাড়ানো-কমানো আমাদের হাতে নেই। আমরা যেমন দামে কিনি, তেমন দামেই বিক্রি করি।’ আরেক বিক্রেতা ইকবাল বলেন, ‘অনেক আগে একসময় গরু আর মুরগির মাংসের দাম এক ছিল। এখন গরুর মাংস ৮০০ টাকা, তাহলে মুরগির মাংস তো ২০০ টাকার ওপরেই হবে।’ ব্রয়লার মুরগি কিনতে এসেছিলেন রিজু। তিনি বলেন, ‘ব্রয়লার মুরগির দাম যদি ২০০ টাকার ওপরে হয়, তাহলে আমরা খাব কীভাবে?’ আরেক ক্রেতা মনসুর আহমেদ বলেন, ‘ঈদ তো চলেই গেছে, কিন্তু এখনো মাংসের দাম কমছে না। যারা গরিব মানুষ, তাদের মাংস খাওয়া বন্ধ করে দিতে হবে।’

এদিকে রমজান শেষ হওয়ার পর থেকেই বাড়ছিল সবজির দাম। এখন গরম বাড়ায় এ দাম বৃদ্ধির পালে যেন আরো হাওয়া লেগেছে। বাজারে টমেটো ৫০, টক টমেটো ৬০, দেশি গাজর ৬০, লম্বা বেগুন ৬০, সাদা গোল বেগুন ৭০, কালো গোল বেগুন ৮০, শসা ৪০-৬০, উচ্ছে ৮০, করলা ৮০, কাঁকরোল ১২০, পেঁপে ৬০, মিষ্টিকুমড়া ৪০, মুলা ৪০, ঢ্যাঁড়শ ৫০, পটোল ৮০, চিচিঙ্গা ৬০, ধুন্দল ৬০, ঝিঙা ৮০, বরবটি ৬০, কচুরলতি ৭০ থেকে ৮০, সজনে ১০০ থেকে ১২০, কাঁচামরিচ ১০০ ও ধনেপাতা ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মানভেদে প্রতিটি লাউ ৬০ থেকে ৮০, চালকুমড়া ৪০ থেকে ৬০, ফুলকপি ৫০ ও বাঁধাকপি ৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা করে। এক্ষেত্রে দেখা যায়, বেশিরভাগ সবজির দাম বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। তবে কিছু সবজির দাম কমেছে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত।

বিক্রেতারা বলছেন, ক্রেতা ও গরম বাড়ার কারণে সবজির দামও বাড়ছে। সবজি বিক্রেতা খলিল বলেন, অনেক দিন মানুষ কম দামে সবজি পেয়েছে, এখন কিছুটা বাড়বে। আর গরমের কারণে অনেক সবজি নষ্ট হয়ে যায়, এটাও দাম বাড়ার একটা কারণ। বৃষ্টি হলে সবজির দাম আরো বাড়বে জানিয়ে আরেক বিক্রেতা জাফর বলেন, এখন তো দাম বেশিই আছে কিছুটা। বৃষ্টি হলে সবজির আরো দাম বেড়ে যাবে। এ বিষয়ে এক ক্রেতা বলেন, সবজির দাম ব্যবসায়ীরা বাড়াবে এটাই হচ্ছে আসল কথা। এখন রোদ বৃষ্টি হচ্ছে একটা উছিলা।

এদিকে বাজারে মানভেদে দেশি পেঁয়াজ ৬০-৭০ টাকা, লাল ও সাদা আলু ৫৫, বগুড়ার আলু ৭০, নতুন দেশি রসুন ১৬০, চায়না রসুন ২২০ ও চায়না আদা ২২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আলু পেঁয়াজ বিক্রেতা শরীফ বলেন, আলু পেঁয়াজের দাম বাড়ার পর মানুষের কেনা আরো বেড়ে গেছে। আজ তো মনে হয় আমি চাঁদ রাতের মতো বিক্রি করলাম। দেশি রসুনের দাম কমেছে কি না- জানতে চাইলে শরীফ বলেন, দাম কমেনি। আজকের রসুনের সাইজ ছোট বলে দাম কিছুটা কম। আসলে দাম কমেনি।

এদিকে সবকিছুর দাম বাড়তে থাকলেও মুদি দোকানের পণ্যের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। তবে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে প্রতি লিটারে ৪ টাকা, খোলা সয়াবিন তেলের দাম কমেছে প্রতি লিটারে ২ টাকা। আর ছোট মুগ ডালের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ১০ টাকা করে। প্যাকেট পোলাওয়ের চাল ১৫৫ টাকা, খোলা পোলাওয়ের চাল মানভেদে ১১০ থেকে ১৪০, ছোট মসুরের ডাল ১৪০, মোটা মসুরের ডাল ১১০, বড় মুগ ডাল ১৬০, ছোট মুগ ডাল ১৯০, খেসারি ডাল ১২০, বুটের ডাল ১১৫, ডাবলি ৮০ ও ছোলা ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৭, খোলা সয়াবিন তেল ১৪৭, কৌটাজাত ঘি ১ হাজার ৩৫০, খোলা ঘি ১ হাজার ২৫০, প্যাকেটজাত চিনি ১৪৫, খোলা চিনি ১৩৫, দুই কেজির প্যাকেট ময়দা ১৫০, আটা ২ কেজির প্যাকেট ১৩০ ও খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close