কক্সবাজার প্রতিনিধি

  ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২১

দখল হচ্ছে বাঁকখালী নদী দেখার কেউ নেই

প্রশাসনের নীরবতায় কক্সবাজারের বাঁকখালী নদীর তীরের জমি দখল হয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে পাঁচ একরের মতো জায়গা দখল করেছে ভূমিদস্যুরা। এতে প্যারাবন কেটে মাটি ভরাটের কাজ করছেন তারা। আর এসব অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ আড়াল করতে ব্যবহার করেছে টিন ও পলিথিনের ঘেরা। শত বছরের প্যারাবনের মাঝে বসিয়েছে নামে-বেনামে সাইনবোর্ড। অনুসন্ধানে জানা গেছে, এসব বেআইনি কাজ বন্ধ করার পদক্ষেপ নিচ্ছে না স্থানীয় প্রশাসন। এ যেন মগের মুল্লুক দেখার কেউ নেই।

স্থানীয়দের তথ্য মতে, এমন দখলযজ্ঞে জড়িত রয়েছে স্থানীয় সানাউল্লাহ, ৬ নাম্বার এলাকার শিবলু, দখলবাজ কামাল মাঝি, কপিল, মহেশখালীর রুকনসহ বেশ কয়েকজন। দখলদারদের দাবি, তারা খুরুশকুল মৌজার অর্ন্তগত খতিয়াভুক্ত জমিতে কাজ করছেন। কিন্তু অফিস সূত্রে জানা যায়, শত একরের এই নদীর তীরের জমি সরকারের ১নং খাস খতিয়ানের অন্তর্ভুক্ত।

কক্সবাজার শহরের আলোচিত ঐতিহ্যবাহী নৌযানের প্রথম ঘাটের নাম ছিল কস্তুরাঘাট। এমন নৌ-ঘাটটি দখল আর দূষণে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে। শত একরের এই নদীর তীরটি ভরে যাওয়ায় এখন নৌ-যানের যাতায়ান খুবই কম। সেখানে রয়েছে সারি সারি অসংখ্য প্যারাবন। অন্যদিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেখানে পাঁচ একর জমির মধ্যে সরকারি নৌযান মেরামত কারখানা নির্মাণের প্রস্তাবনার একটি সাইনবোর্ড দেওয়া হয়েছে। ওই প্রস্তাবিত সরকারি কারখানার জন্য জমিটি দখলমুক্ত করাও হয়েছিল। এখন আবার বেদখলে চলে গেছে সরকারি প্রস্তাবিত এই জমিটিও।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বাঁকখালী নদীর তীর কস্তুরাঘাট এলাকায় প্যারাবন কেটে একযোগে চলছে ১০টি স্থাপনা নির্মাণের কাজ। ৬ মাসের মধ্যে এসব দখলবাজদের বিরুদ্ধে একবারও অভিযানে আসেনি উপজেলা প্রশাসন। যার ফলে এরই মধ্যে প্রায় ৫ একরেরও বেশি প্যারাবন কেটে স্থাপনা নির্মাণের হিড়িক পড়ে গেছে। পরিবেশ অধিদপ্তরও প্যারাবন ধ্বংসের এই বেআইনি কাজ বন্ধ করতে পদক্ষেপ নিচ্ছে না। চুপ রয়েছে, এ কথা জানা গেছে স্থানীয় সূত্রে।

সদর ভূমি অফিস সূত্র জানায়, বদরমোকাম মসজিদের উত্তর পাশ থেকে বাঁকখালী নদী শুরু। এক সময় সেখানে ট্রলার ভিড়ানো হতো। যাতায়াত ছিল মহেশখালী-কুতুবদিয়া লাখো মানুষের। খননের অভাবে ধীরে ধীরে পানির প্রবাহ দূরে সরে গেছে এই কস্তুরাঘাটে। তবে জোয়ারের সময় সেখানে পানি চলাচল হয়। সরকারি বিভিন্ন নৌযান রয়েছে সেখানে। বর্তমানে জমিটি সরকারি ১নং খাস খতিয়ানের অন্তর্ভুক্ত। কয়েক মাস আগেও সেখানে প্যারাবনের বড় বড় দুই শতাধিক গাছ ছিল। সরকারি জমি দখলকারীরা সেগুলো গোপনে কেটে ফেলেছে। পরিবেশ অধিদপ্তর কয়েক দফা অভিযানও চালিয়েছিল। ভূমি অফিস থেকেও বাধা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এসব তোয়াক্কা করেনি ভূমিখেকোরা। পরিবেশ সংগঠনের দাবি, প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্যারাবন নিধন ও শত একর নদীর তীর দখলে উচ্ছেদ অভিযান পরিচলানা করা না হলে শত কোটি টাকার এই নদীর জমি দখল হয়ে যাবে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কক্সবাজার সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার ভূমি নু-এমং মারমা মং বলেন, নদীর তীরের দখলদারের বিরুদ্ধে এর আগেও অভিযান পরিচালনা করেছি। এবারও দখলদারদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close