আদালত প্রতিবেদক

  ১৮ অক্টোবর, ২০১৯

যুদ্ধাপরাধ

রাজশাহীর টিপুর রায় যেকোনো দিন

সাবেক শিবির নেতা রাজশাহীর বোয়ালিয়ার মো. আবদুস সাত্তার ওরফে টিপু সুলতানের বিরুদ্ধে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধ মামলার রায় হবে যেকোনো দিন। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় অপহরণ, আটকে রেখে নির্যাতন, লুটতরাজ, হত্যার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে এ আসামির বিরুদ্ধে। প্রসিকিউশন ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারকের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখে।

প্রসিকিউশনের পক্ষে এ মামলায় শুনানি করেন মো. মোখলেসুর রহমান বাদল ও জাহিদ ইমাম। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম।

প্রসিকিউটর মোখলেছুর রহমান বাদল মনে করেন সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তারা আদালতে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন। এ কারণে প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি চাওয়া হয়েছে শুনানিতে।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রাজশাহীর বোয়ালিয়ায় ১০ জনকে হত্যা, দুজনকে দীর্ঘদিন আটকে রেখে নির্যাতন, ১২ থেকে ১৩টি বাড়ির মালামাল লুট করে আগুন দেওয়ার অপরাধ উঠে এসেছে তদন্তে। এসব অপরাধে আসামির বিরুদ্ধে দুটি অভিযোগ গঠন করা হয়। প্রসিকিউশনের পক্ষে মামলায় তদন্ত কর্মকর্তাসহ মোট ১৪ জন এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন, যাদের মধ্যে একজন ভিকটিমও আছেন। আমরা যথাযথভাবে সাক্ষ্য-প্রমাণ আদালতে তুলে ধরে আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড চেয়েছি।

অন্যদিকে সামির পক্ষে রাষ্ট্র নিয়োজিত আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম বলেন, এই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো ভিকটিমদের ধরে নেওয়ার সময় তিনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তারপর ভিকটিমরা কোথায় গেল, তাদের কী হয়েছে সে বিষয়ে কোনো সাক্ষী আনতে পারেনি প্রসিকিউশন। যারা হত্যার সঙ্গে জড়িত তাদের বিচারের আওতায় না এনে এই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে শুধুমাত্র স্থানীয় ও রাজনৈতিক বৈরিতার কারণে। এ কারণে আমি আমার মক্কেলের খালাস চেয়েছি।

কে এই টিপু সুলতান : নাটোরের লালপুর উপজেলার গোপালপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে অবসরে যাওয়া টিপু সুলতানকে একত্তরের ভূমিকার জন্য রাজশাহীর অনেকে চেনে ‘টিপু রাজাকার’ নামে। ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন বলছে, মুক্তিযুদ্ধের প্রথমদিকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে মিলে স্থানীয় যে রাজাকাররা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে গণহত্যা চালিয়েছিল, তাদের মধ্যে টিপু সুলতানই বেঁচে আছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় টিপু ছিলেন জামায়াতে ইসলামী ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘের স্থানীয় কর্মী। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সেই ছাত্রসংঘ নাম বদলে হয় ইসলামী ছাত্রশিবির। টিপু শিবিরের রাজনীতিতেও যুক্ত ছিলেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে মামলার অভিযোগপত্রে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close