reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৮ মার্চ, ২০২৪

চৈত্রের ভোরে ঘনকুয়াশা, ‘বিরূপ আবহাওয়া’ চলছে দেশে

ছবি : সংগৃহীত

প্রকৃতির রূপের বৈচিত্র্য দিন দিন পরিবর্তন হচ্ছে। কালেন্ডারের পাতাতেই আটকে আছে ছয়টি ঋতুর সময়কাল। বর্তমানে প্রকৃতি দেখে বুঝে উঠতে কষ্ট হয় ঋতুর এই বৈচিত্র্য। শীত পেরিয়ে গেছে অনেকদিন আগে।

এখন ক্যালেন্ডারের হিসাব অনুযায়ী চৈত্রের মাঝামাঝি। তবে চৈত্রের আবহ এ কদিনেও প্রকৃতি দেখে পরিপূর্ণভাবে অনুভব করা যায়নি বলে জানান সাধারণ মানুষ।

এর মধ্যে বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) মাদারীপুরে ভোর আসে ঘন কুয়াশার চাদরে মুড়িয়ে। সকালে বাইরে বের হলে মনে হয় শীতের কুয়াশা!

এদিন সকালে জেলার শিবচর উপজেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে ঘন কুয়াশায় ঢাকা চারপাশ। হালকা বাতাসে ভাসছে শিশিরকণা। তবে শীত নেই। স্বাভাবিক তাপমাত্রা মনে হয়। কুয়াশার ঘনত্ব এতোই বেশি যে সামান্য দূরত্ব নির্ণয়ে বাধা হয়ে ওঠে। বেলা বাড়ে সঙ্গে কুয়াশার পরিমাণও যেন বাড়তে থাকে। জেলার নদ-নদী তীরবর্তী এলাকাতে কুয়াশার পরিমাণ আরও বেশি। আড়িয়াল খাঁ নদের তীরবর্তী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চরাঞ্চল ও আশপাশে তীব্র কুয়াশা বিরাজ করছে। সামান্য দূরত্বেও কিছু দেখা যাচ্ছে না।

প্রকৃতির এমন পরিবর্তনকে ‘বিরূপ আবহাওয়া’ বলছেন আবহাওয়াবিদরা। তারাও এমন আবহাওয়া অনেকদিন দেখেননি বলে জানান।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ আফরোজা সুলতানা বলেন, চৈত্র মাসের শেষের দিকে তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত ওঠে। সবসময় এটাই দেখা যায়। এখন এর চেয়ে একটু কম আছে।

তিনি বলেন, গত কয়েকদিন উত্তরাঞ্চলের আবহাওয়া ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে আছে। আজকেও ২০ এর নিচেই আছে। এপ্রিল মাসের ৫ থেকে ৭ তারিখের দিকে তাপমাত্রা বাড়তে থাকবে।

তেঁতুলিয়ায় অবস্থিত প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, তেতুলিয়া থেকে হিমালয় কাছে। পাহাড়ি এলাকার আবহাওয়া একটু ভিন্ন থাকে, এটা আমরা সবাই জানি। এই পাশের দার্জিলিংও পাহাড়ি এলাকা। সেখানে এখন তুষারপাতও নাকি হচ্ছে। এর আগে কখনো যেটা হয়নি।

তিনি বলেন, গত কয়েকদিন এদিকে বাতাস ছিল বেশি। তিন চারদিন আগে টানা দুই দিন ঠান্ডা বাতাস ছিল। এরকম বাতাস আমি এর আগে এই সময়টাতে কখনো দেখিনি। তখন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪-১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়ে যায়। যদিও চৈত্র মাসের এই সময়টাতে এখানে তাপমাত্রা ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত ওঠার কথা।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সাবেক সিনিয়র আবহাওয়াবিদ মো. আবদুল মান্নান বলেন, প্রতিবছরই সারা পৃথিবীতে বিরূপ আবহাওয়া আসে। সাম্প্রতিককালে বিরূপ আবহাওয়াটা একটু বেড়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসের পরেই মার্চ মাস থেকে বাংলাদেশের তাপমাত্রা ক্রমাগত বাড়তে থাকার কথা এবং সর্বোচ্চ হওয়ার কথা। সেই প্রেক্ষিতে কিন্তু এটি শুরু হয়েছিল। কিন্তু মাঝে বৃষ্টি ও বজ্রপাতের মতো ঘটনা ঘটায় এটি কমে গেছে।

তিনি বলেন, এখন এই অঞ্চলে উত্তরপশ্চিম দিকের বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে। যার ফলে ভোর রাতে ঠান্ডার অনুভূতি এবং দিনের বেলায় তাপমাত্রা কম অনুভূত হচ্ছে। কিন্তু কয়েকদিন পরেই গরম চলে আসবে। এপ্রিলে যে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে, সেটি কিন্তু লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

আবদুল মান্নান বলেন, সাম্প্রতিককালে ‘বিরূপ আবহাওয়া’ বেড়েছে। এটি বৃদ্ধি পাওয়ার প্রধান কারণ বিশ্ব উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তন।

পিডিএস/এমএইউ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
জলবায়ুর প্রভাব,বিরূপ আবহাওয়া,আবহাওয়া অফিস,আবহাওয়াবিদ
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close