reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

দুদকের মতবিনিময় সভা

আমরা কেউ-ই ধোয়া তুলশীপাতা নই : দুদক চেয়ারম্যান

বড় দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কঠোর দৃশ্যমান কার্যক্রম দেখতে চান নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। দুদকের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস তৈরিতে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও ব্যাংক খাতের পাশাপাশি রাজনৈতিক দুর্নীতি ও মেগা দুর্নীতির ওপর বেশি নজর দেওয়া জরুরি। দুর্নীতি মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি করাও জরুরি।

সোমবার ঢাকার সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। কমিশনের ২০১৯ সালের কৌশলপত্র প্রণয়ন করার জন্য মতামত নিতে এ মতবিনিময়ের আয়োজন করে দুদক।

অনুষ্ঠানে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, বাংলাদেশের প্রধান দুঃখ দুর্নীতি। দুর্নীতির বিষয়ে হতাশা বিশাল। আর দুদকের কাছে মানুষের গগনচুম্বী প্রত্যাশা। দুদক কাজ করছে। রাষ্ট্র ধীরে ধীরে সব বিষয়ে তৈরি হচ্ছে। আস্তে আস্তে রাষ্ট্র শক্ত অবস্থানে আসছে। তবে রাতারাতি সব হয় না। একদিনে করা কঠিন।

আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, দুদকের প্রতি জনগণের আস্থা জাগেনি। তাই দুদককে অবিলম্বে দৃশ্যমান কিছু ঘটনা ঘটিয়ে দেখাতে হবে। কয়েকটি কাজ করেছে এরই মধ্যে। তবে জনগণকে আস্থায় আনতে অন্তত ২০টি ঘটনা ঘটিয়ে একটি ম্যাসেজ দিতে হবে, যাতে মানুষ মনে করে অপরাধ করলে শাস্তি পেতে হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফরাসউদ্দিন বলেন, কমিশনের মিশনে ‘দুর্নীতির গতি-প্রকৃতি নির্ণয়’ থাকা উচিত। কাজের মধ্যে স্বচ্ছতার দৃশ্যমান মানদন্ড থাকবে। স্বচ্ছতা আপেক্ষিক। তাই এর একটি মানদণ্ড থাকা উচিত। কমিশনের প্রতি মানুষের ভয় ও শ্রদ্ধা থাকলে দুর্নীতি প্রতিরোধ কিছুটা সহজ হবে।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, রাজনীতিতে দুর্নীতিবাজদের ক্ষমতায়ন দৃশ্যমান থাকলে দুর্নীতি দমন সম্ভব নয়। রাজনৈতিক পর্যায়ে আলোচিত দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তিরা মুক্ত থাকলে দুর্নীতি দমন হবে অবাস্তব চেষ্টা।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী কোচিং বাণিজ্য বন্ধে দুদকের সক্রিয় ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, স্থানীয় সরকারের পাশাপাশি ব্যাংকিং খাতে দুদকের তৎপরতা বাড়াতে হবে।

নাগরিক সংগঠন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, দুদকের উচিত মেগা খাতের দুর্নীতি দমনে বেশি মনোযোগ দেওয়া। তিনি দুদকের মতো সার্বিকভাবে সরকারের একটি কৌশলপত্র প্রণয়নের সুপারিশ করেন।

দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ তার বক্তব্যে বলেন, এখন আমরা অনেক শক্তিশালী। অনেক বেশি শক্তিমান। কারণ দুর্নীতি দমনে সরকারপ্রধান জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরার ঘোষণা দিয়েছেন। আমরাও শিগগির নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করব।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুর্নীতি দমনে রাজনৈতিক সদিচ্ছা বা কমিটমেন্ট জরুরি। যদিও গত তিন বছর কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তি আমার অফিসে এসে দম্ভ দেখাননি। আপনারা বলতে পারেন আমি ব্যক্তিগতভাবে পক্ষপাত করেছি। আমার লোকেরা পয়সার বিনিময়ে অনুকম্পা দেখিয়েছে—আপনারা এটা বলতেই পারেন। আমরা কেউ-ই ধোয়া তুলশীপাতা নই। আমাদেরও ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকতে পারে।

মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন দুদক কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক খান, অধ্যাপক গিয়াসউদ্দীন আহমেদ, সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির, আবদুর রশীদ, কণ্ঠশিল্পী হায়দার হোসেন প্রমুখ।

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
দুদক,দুদক চেয়ারম্যান,দুর্নীতিবাজ,দুর্নীতি
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close