reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৮ জুন, ২০২১

চাকরির ভাইভায় ভুলগুলো এড়িয়ে চলুন

চাকরির মৌখিক পরীক্ষা দিতে যেয়ে নার্ভাস হন না এমন কেউ নেই। তবে চৌকস যারা তারা ভয়টাকে পাশ কাটিয়ে দৃঢ়তার পরিচয় দিতেও ভুল করেন না। তবে নার্ভাসনেসের কারণে কিছু ভুল হতে পারে। তাতে অল্পের জন্যই খোয়াতে পারেন চাকরি।

বেশি তাড়াতাড়ি নয়

চাকরির ভাইভায় সময়জ্ঞান গুরুত্বপূর্ণ। দেরি করে পৌঁছানো তো যাবেই না, আবার বেশি আগেও উপস্থিত হবেন না। নির্ধারিত সময়ের অনেক আগে উপস্থিত হলে চাকরিদাতা বুঝবে আপনার সময়জ্ঞান নেই। এ ছাড়া চাকরিদাতা যদি মনে করে আপনি চাকরি পেতে মরিয়া তবে বেতন নিয়ে আপস করার সুযোগও যাবে কমে।

অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস নয়

ইন্টারভিউ দিতে যাবার আগে ওই প্রতিষ্ঠানের ধরন ও কাজকর্ম নিয়ে টুকটাক পড়াশোনা করে যাবেন। তাই বলে যে সবই জেনে বসে থাকবেন এমনটি নয়। আপনার কনফিডেন্স লেভেল যেন চাকরিদাতাদের চোখে দৃষ্টিকটু না ঠেকে সেদিকে খেয়াল রাখবেন। এমন কোনও আচরণ বা কথা বলা উচিত না যাতে মনে হয় আপনি অন্য চাকরিপ্রার্থীদের ছোট করে দেখছেন। মোটকথা, ‘এ কাজ আমার চেয়ে ভালো কেউ করতেই পারবে না।’ এমনটা ইনিয়ে বিনিয়ে বোঝাতে যাবেন না। আবার কিছু না জানলে শুধু শুধু বানিয়ে উত্তর দিতে যাবেন না। সোজাসুজি ‘এটা পারছি না, দুঃখিত’ বলতেও শিখুন।

প্রসঙ্গ যখন বেতন

এ প্রশ্ন নিয়ে চাকরিপ্রার্থীরা বেশি চিন্তিত থাকেন। নিয়োগকারীও এ নিয়ে এ হাত দেখে নেন। নিয়োগকর্তা যদি সরাসরি বেতন নিয়ে প্রশ্ন করে তবে খানিকটা কৌশলে উত্তর দেয়াই মঙ্গল। আগে থেকেই খোঁজ নিয়ে নিন এ পদে বেতনের সীমারেখাটা কেমন। আপনি যদি আগে থেকে জেনে থাকেন বেতন কত পেতে যাচ্ছেন তবে কৌশলী উত্তরটা হতে পারে-‘আপাতত এ নিয়ে সেই অর্থে চিন্তিত নই। আগে কাজটা শিখতে চাই ভালো করে।’ আগে কোথাও কাজ করে থাকলে সেই প্রতিষ্ঠানের বেতন জানতে চাইলে বাড়িয়ে বলবেন না কিছুতেই।

প্রশ্ন করতে ভুলবেন না

ভাইভার শেষদিকে সাধারণত নিয়োগকর্তা আপনার কোনও কিছু জানার থাকলে প্রশ্ন করার সুযোগ দিয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে অনেকেই সরাসরি কোনও প্রশ্ন নেই বলে কেটে পড়তে চান। আপনি যদি কিছু না জানতে চান এর অর্থ দাঁড়ায় আপনি ওই প্রতিষ্ঠান বা কাজ সম্পর্কে জানতে আগ্রহী নন। তাই সামঞ্জস্যপূর্ণ কিছু প্রশ্ন আগে থেকেই তৈরি করে রাখুন। তবে সেই প্রশ্ন যেন সরাসরি বেতন নিয়ে না হয়। বেতনের পাশাপাশি বাড়তি সুযোগসুবিধা কিংবা ছুটির বিষয়ে জানতে চাইতে পারেন। জব ডেসক্রিপশনের কোনও বিষয় না বুঝে থাকলে সেটাও জানতে চাইতে পারেন।

ঘড়ির দিকে তাকানো যাবে না

অভ্যাসের খাতিরে হলেও ভাইভার সময় হাতঘড়িতে তাকানো যাবে না। রিলাক্স থাকার চেষ্টা করুন। নিয়োগকর্তার সামনে কক্ষের চারদিকে আনমনেও চোখ বোলানো ঠিক হবে না। এতে নিয়োগকর্তার মনে হতে পারে আপনি অন্যমনষ্ক। আর ঘড়ি দেখার মানে হলো, আপাতত চাকরির চেয়েও বড় কোনও তাড়াহুড়োয় আছেন আপনি।

অপ্রাসঙ্গিক কথা নয়

নিজের সম্পর্কে বলতে বললে অবশ্যই শুধু আপনার নিজের কাজ ও পড়াশোনা নিয়েই বলবেন। টুকটাক সৃজনশীল শখের কথা বলতে পারেন। তবে ব্যক্তিগত কোনও তথ্য বা আগের অফিসের স্পর্শকাতর কোনও তথ্য শেয়ার করবেন না।

হাস্যরসাত্মক বা নেতিবাচক উ্ত্তর নয়

ব্যাপারটা নির্ভর করছে আপনার কাজ ও পদবীর ওপর। নিয়োগকর্তা যদি মজার ছলে কিছু জানতে চান, তবে সেটার উত্তর মজা করে দেয়া যায়। সিরিয়াস প্রশ্নে মজা একেবারেই করতে যাবেন না। এতে আপনার ব্যক্তিত্ব নিয়ে ভুল ধারণা তৈরি হতে পারে। আবার নিজেকে নিয়ে নেতিবাচক মনোভাবও প্রকাশ করবেন না। মুখে হালকা হাসি রেখে সিরিয়াস কথা বলুন।

ধৈর্য্য রাখুন

ভাইভাতে অনেকসময় ধৈর্যে্যর পরীক্ষাও নেয়া হয়। ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে দেখা যাবে একই প্রশ্ন বার বার করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে মোটেও বিরক্ত হওয়া চলবে না। বরং প্রতিবারই চেষ্টা করুন একই উত্তর ভিন্ন ভিন্নভাবে দিতে। ভুলেও বলবেন না, ‘এর উত্তর তো একটু আগেই দিলাম’।

ভাইভার পর যা করবেন না

ইন্টারভিউ দিয়ে আসার পর অনেকসময় নিয়োগকর্তাদের সিদ্ধান্ত নিতে সপ্তাহ বা মাসখানেক সময়ও লাগতে পারে। এ সময়টা অধৈর্য্য হবেন না। নিয়োগকর্তাদের কাউকে ইমেইল বা ফোন করে ফলাফল জানতে চাইবেন না। এতে আপনার প্রতি ইতিবাচক মনোভাব থাকলেও সেটা উল্টে যেতে পারে।

বেশি নড়াচড়া করবেন না

বসতে অস্বস্তি হলে সেটা সরাসরি বলুন। উসখুশ করবেন না বা ঘন ঘন এদিক ওদিক নড়বেন না। শিরদাঁড়া সোজা রেখে কথা বলুন। প্রয়োজনে হাত নাড়াতে পারেন। তবে পা বেশি নাড়াবেন না। কিংবা হাতে থাকা কলম টেবিলে ঠুকবেন না বা আঙুল দিয়ে ডেস্কে থাকা জিনিসপত্র নাড়াবেন করবেন না। এসব আচরণে নিয়োগকর্তাদের মনে হবে আপনি অস্থির প্রকৃতির ও অমনযোগী।

পিডিএসও/ জিজাক

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
চাকরি,ভাইভা,বেতন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close