এনাম রাজু

  ২৯ জুলাই, ২০২২

কবিতা ও সৌন্দর্য

অলংকরণ : বদরুল হায়দার

কবিতা মূলত নান্দনিক চর্চার একটা বিষয়। শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি সবকিছুই মূলত সৌন্দর্যকে ধারণ করে তার ডালপালা মেলে দেয়। কবিতার নান্দনিকতা শিল্পগুণ তার সৌন্দর্যের মধ্য দিয়েই পাঠক হৃদয়কে আকৃষ্ট করে। কবির যাপিত জীবন থেকেই ওঠে আসে এই সৌন্দর্য চেতনা। কবি তার যাপিত জীবনে যেসব সৌন্দর্য অবলোকন করেন, তাই বাণী রূপ পায় তার কবিতায়। ফলে একজন কবির হাতে যখন ছোটবেলার দৃশ্যগুলো ওঠে আসে, কৈশোরের জীবন ওঠে আসে, হারিয়ে যাওয়া প্রেমিকার কথা ওঠে আসে, তখন আমরা একটা অপার্থিব সৌন্দর্যের সাক্ষাৎ পাই। যেখানে নীলিমার আকাশছোঁয়া প্রান্ত পর্যন্ত অবারিত সবুজ সৌন্দর্যের হাতছানি আমাদের ডাকে। মনে হয় এই সৌন্দর্যের এই সবুজ সজীবতার আহ্বান আমরা কেউই অস্বীকার করতে পারি না। বরং প্রতিনিয়ত আমাদের এই অবারিত সৌন্দর্য এই সজীবতা এই সবুজ প্রকৃতি উজ্জীবিত করে, উদ্বেলিত করে, স্বপ্ন মুখরতায় বিভোর করে।

কবিতার মূল বিষয় হলো, শেষ পর্যন্ত শব্দের শক্ত বুনন আমাদের একটি নান্দনিক স্তরে নিয়ে যায়, সৌন্দর্যের এমন এক স্তরে নিয়ে যায়, যে সৌন্দর্যের কথা আমরা বাস্তবে উপলব্ধি করতে না পারলেও কল্প জগতে আমাদের বিচরণশীল পরিব্রাজক করে তোলে। এই সৌন্দর্যের কথা সব কবি তার কবিতার মধ্য দিয়ে মানব হৃদয়ে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

একজন কবি মূলত কবিতা তখনই লেখেন যখন তিনি বাস্তবতার দ্বারা তাড়িত হন। সেটা ভালোর জন্য আলোর জন্য বা আঁধার দেখে বা খারাপ কিছুর আশঙ্কা থেকে। যখন কবি বাস্তবতার এমন দাড়প্রান্তে পৌঁছান তখন তার মধ্যে শব্দ ভর করে। শব্দ তাকে আরেক জগতে এগিয়ে নেয়। অর্থাৎ সেই সময় তিনি শব্দে জীবন্ত থাকেন। আরো সহজ করে বলতে হলে, শব্দেই তিনি প্রাণবন্ত ও প্রাণচাঞ্চল্য পান। শব্দ যদি কবিকে তার দিকে আকৃষ্ট বা ধ্যানজ করতে ব্যর্থ হয় তখন কবি মাতাল, পাগল হয়। কবিদের যে শব্দেরা মাতাল করে, নাচায়, হাসায়-কাদায় তা সবই প্রকাশ করে কবিতায় নিপুণ সৌন্দর্যের ভেতর দিয়ে। এ কারণে যে কবি তার শব্দের মালা গাঁথুনিতে সৌন্দর্যজ্ঞানে সচেতন সেই কবির কবিতা ততই পাঠকপ্রিয়। এই সৌন্দর্যজ্ঞানের সচেতনতা ও শব্দের পরিমিতবোধ কবিকে অন্য কবি থেকে আলাদা করে। পার্থক্য সৃষ্টি করে কাব্যভাষায়। ফলে কোনো কোনো কবি হয়ে ওঠেন পাঠকনন্দিত আর কোনো কোনো কবি হয়ে থাকেন পুস্তুকে বন্দি।

কবিতায় সৌন্দর্য নিয়ে আলোচনার আগে জেনে নিতে হবে সৌন্দর্য ও সুন্দরের মধ্যে সূক্ষ্ম একটা ফারাক। এটা নিয়ে বিস্তর আলোচনা হতে পারে। কারণ সুন্দর ও সৌন্দর্য কিছুটা আলাদা, কিছুটা ফারাক। সৌন্দর্য এমন একটি বিষয় যা মানুষ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উপলব্ধি ও ধারণ করতে চেষ্টা করে। সুন্দরকে শৈল্পিকভাবে ফুটিয়ে তুলতে যে নিরন্তর চেষ্টা সেটাই সৌন্দর্য। আরো সহজ করে বলতে হলে, ধরা যাক একটা উড়তি বালকের কথা। সে বালক বয়সে প্রবেশের প্রথম মুহূর্তেই মুখের লোম নিয়ে যে উৎসুক, আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে বারবার লোম বৃদ্ধিকে লক্ষ করে। সেই লোমকে বিশেষভাবে। সেটাই সম্ভবত সৌন্দর্যচর্চা। সাহিত্যেও এ রকম শৈল্পিকতা থাকাটা জরুরি। বিশেষ করে কবিতায়। কবিতার সংজ্ঞা নিয়ে যতই আলোচনা হোক, এটা পরিষ্কার যে শব্দের বিশেষ পরিমার্জনাই কবিতা। আমি মনে করি, শব্দের চালটাই কবিতা। সেটা অবশ্যই সঠিকভাবে সঠিক স্থানেই হতে হবে। যে লেখক শব্দের খেলায় যত পটু তার কবিতা তত উন্নত। এটা আমার ব্যক্তিগত মত। বিশেষ করে এই কথাটি বলতে হচ্ছে এ সময়ের কবিতার সঙ্গে আগেকার কবিতার পার্থক্য লক্ষ করতে গিয়ে। শব্দের চাল দিয়ে আপনি কবিতার পথ, গতি, ছন্দের আকাঙ্ক্ষা, মাত্রার সঠিক নৃত্য করাতে পারবেন। রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, গদ্যের চালটা পথে চলার চাল, পদ্যের চাল নাচের। এই নাচের গতির প্রত্যেক অংশের মধ্যে সুসংগতি থাকা চাই। যদি কোনো গতির মধ্যে নাচের ধরনটা থাকে, অথচ সুসংগতি না থাকে, তবে সেটা চলাও হবে না, নাচও হবে না, হবে খোঁড়ার চাল অথবা লম্ফঝম্প। কোনো ছন্দে বাঁধন বেশি কোনো ছন্দে বাঁধন কম, তবু ছন্দমাত্রার অন্তরে একটা ওজন আছে। সেটার অভাব ঘটলে যে টলমলে ব্যাপার দাঁড়ায়, তাকে বলা যেতে পারে মাতালের চাল। তাতে সুবিধাও নেই, সৌন্দর্যও নেই। (শৈলেন্দ্রনাথ ঘোষকে লিখিতপত্র : ২২জুলাই ১৯৩২)।

কবিতার সৌন্দর্য হলো, কবিতায় একটা নব উন্মাদনা তৈরি। পাখি শিষ দেয় সেটি একটি ছন্দে-তরঙ্গে ভেসে আসে। মানুষের মনে দোলা দেয়। এটি একটি মিউজিক, একপ্রকার মিউজিক। কিন্তু সেই সুর যখন শব্দে বসে যায়। তখন তা হৃদয়গ্রাহী হয়। এবং সেটি যখন লিপিবদ্ধ হয় তখন মানুষের সামনে ওঠে আসে। তা স্পষ্ট হয়। মানুষের হৃদয়ে দোলা দেয়। পাঠকপ্রিয়তা পায়। এই যে প্রথমে শ্রোতা তারপর পাঠকপ্রিয়তা। এটাই কবিতা। এভাবেই কবিতা আসে, ভালোবাসে, ভালোবাসতে বাধ্য করে। এবার একটা পঙ্ক্তি দিয়ে বলা যায়, গান গেয়ে যায় যেন বসন্ত কোকিল বা তানসিনির সুরে আজ গেয়ে যায় বসন্তের কোকিল অথবা তানসিনির সুরে যেন গেয়ে ওঠে সুরেলা কোকিল। উপর্যুক্ত তিনটি লাইনই কবিতা। কিন্তু শেষ পঙ্ক্তিতে এসে কবিতাটি বেশ প্রাঞ্জল। এটাই কবিতার সৌন্দর্য।

বস্তুতপক্ষে কবিতা সম্পর্কে তেমন কিছু বলতে চাই না। কেননা, আমি জানি, কবিতা বিষয়ে কেউ নিজের ভাবনায় বেশিদিন স্থির থাকতে পারেন না। কবিতা ক্রমাগত তার রূপ বদলাচ্ছে, বদলে যাচ্ছে নিজে। কবি আল হাফিজ কবিতা ও কবিতার সৌন্দর্য নিয়ে বলেছেন, কবিতার আসলে কোনো সংজ্ঞা নেই। কবিতা নিজেই নিজের সংজ্ঞা নির্ধারণ করেন। সৌন্দর্যের মধ্য দিয়েই কবিতা মূলত তার সংজ্ঞা পরিস্ফুটিত করে তোলে। কবিতা মূলত সৌন্দর্য ব্যতিরেকে নান্দনিকতা ব্যতিরেকে এক কদমও এগোতে পারে না। আমার বিশ্বাস, কবিতার ছন্দ, অলংকার, রূপক, চিত্রকল্প, উৎপ্রেক্ষা, উপমা যা কিছুই বলি শেষ পর্যন্ত এর ভেতর দিয়ে একটি চিরকালীন সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়। কবিতার ভেতরে স্বপ্নের যে হাতছানি প্রত্যাশার যে সিঁড়ি নির্মাণ করা হয় তা মূলত সত্য এবং সুন্দরের মধ্য রঙিন হয়ে ওঠে সুউজ্জ্বল হয়ে ওঠে। একটা প্রজাপতি যেমন তার নান্দনিক উপস্থাপনার মধ্য দিয়ে দৃষ্টিকে আকর্ষণ করে। একটি ফুল যেমন তার সৌরভ ও সৌন্দর্য দিয়ে মানুষের চোখকে টেনে রাখে এবং চোখ থেকে মানুষের হৃদয়। এভাবেই কবিতার সৌন্দর্য পাঠককে আকৃষ্ট করে, পাঠকের হৃদয় উদ্বেলিত করে, পাঠককে টেনে রাখে, গর্বিত করে। যে কবিতার সৌন্দর্য নেই সে কবিতা আসলে কবিতাই নয়।

কবিতায় সৌন্দর্যের ব্যাপারটি গুরুত্বপূর্ণ। সৌন্দর্য একটা কবিতায় এতটা বড় জায়গাজুড়ে থাকে যে, তার দেহ-প্রাণ সম্পূর্ণ সৌন্দর্যনির্ভর। কারণ সৌন্দর্য ছাড়া কবিতা কখনোই সম্পূর্ণ নয়। কবিতায় ছন্দের ব্যবহার যেমন অনস্বীকার্য ঠিক সৌন্দর্যও তাই। এর কোনো প্রাচীর নেই। অনেকেই কবিতায় ছন্দকে অস্বীকার করার মতো ধৃষ্টতা দেখায়। দেখাতেই পারে। কারণ যে কবি ছন্দের নৃত্যকে আয়ত্ত করতে পেরেছেন। তিনি তো ছন্দ ভাঙতে পারবেন। কিন্তু অধিকাংশ লেখকই সেই জানা বিষয়টি আয়ত্ত না করেই ছন্দকে অস্বীকার করার দুঃসাহস দেখায়। কবিতায় উপমা ও ছন্দের দোলাটাও সৌন্দর্য। প্রায় শুনতে পাই, গদ্য কবিতায় ছন্দের ব্যবহার নেই। আসলে সাধারণ পাঠকের কণ্ঠে বিষয়টা শুনলে মুচকি হাসি চেপে রাখা যায়। কিন্তু অনেক লেখক যখন একই শব্দ বা বাক্যের অপপ্রয়োগ করেন। তখন আপনাকে হতাশ হতে হবে। কারণ কবিতায় যে একটা দোলা লেগে থাকে, একটা ঘোর টানে এটাই একটা ছন্দ। প্রচলিত কয়েক প্রকার ছন্দ ছাড়াও যে ছন্দের ব্যবহার হতে পারে। সেটা তো যারা ছন্দ সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন তারাই জানেন। আর কবিতায় এই যে ছন্দ, উপমা, অলংকার ও শব্দের চাল সঠিকভাবে ব্যবহার করা হয় সেটাই কবিতার প্রকৃতি সৌন্দর্য। শেষে বলা যায়, যে কবিতায় সৌন্দর্য যত পরিস্ফুট ও সুউজ্জ্বল সেই কবিতা ততই পাঠকপ্রিয়।

বাংলা সাহিত্যে অধিকাংশ অমর কবির কবিতায় সৌন্দর্যের বিষয়টি খুবই গভীর। প্রকৃত সমালোচক ব্যতিরেকে তাদের কবিতার প্রকৃত সৌন্দর্য বোধ নির্ণয় করা কঠিন। এ ক্ষেত্রে কয়েকজন কবির কবিতায় সৌন্দর্যবোধ খুব সহজভাবেই পরিস্ফুট, প্রকাশিত। কবি ফররুখ আহমেদের একটি কবিতা থেকে—

‘হে মাঝি! এবার তুমিও পেয়ো না ভয়,/তুমিও কুড়াও হেরার পথিক-তারকার বিস্ময়,/ঝরুক এ ঝরে নারঙ্গি পাতা, তবু পাতা অগণন/ভিড় করে—যেথা জাগছে আকাশে হেরার রাজ-তোরণ।/সে পথে যদিও পার হতে হবে মরু/সে পথে যদিও দরিয়ার নোনা পানি/তবু সে পথে আছে মঞ্জিল, জানি আছে ছায়াতরু/পথে আছে মিঠে পানি...।’ (সাত সাগরের মাঝি)

কবি আল মাহমুদের কবিতার মধ্যে সেই সাক্ষাৎ আমরা পাই। তিনি যখন আমাদের সামনে এক গৃহস্থ বধূর বাসরের কথা বলেন, তখন আমরা কিন্তু সহস্যে একটা অবারিত সবুজ প্রান্তরে পৌঁছে যাই। তবে আল মাহমুদ যখন তার প্রেমিকার কাছে লেখা হৃদয়ের আকুতির কথা বলেন। যে আকুতির কথা নীল খামে স্বর্ণালি অক্ষরে লেখা ছিল। তিনি যখন লেখেন—

‘কবিতা তো ছেচল্লিশে বেড়ে ওঠা অসুখী কিশোর/ইস্কুল পালানো সভা, স্বাধীনতা, মিছিল, নিশান/চতুর্দিকে হতবাক দাঙ্গার আগুনে/নিঃস্ব হয়ে ফিরে আসা অগ্রজের কাতর বর্ণনা।/কবিতা চরের পাখি, কুড়ানো হাঁসের ডিম, গন্ধভরা ঘাস/ম্লান মুখ বউটির দড়ি ছেঁড়া হারানো বাছুর/গোপন চিঠির প্যাডে নীল খামে সাজানো অক্ষর/কবিতা তো মক্তবের মেয়ে চুলখোলা আয়েশা আক্তার...।’ (কবিতা এমন)

যদিও আমাদের এ সময় ও আল মাহমুদের সে সময় অনেক ব্যবধান তৈরি হয়ে গেছে। সামাজিক বাস্তবতার কারণে তার যুগ এখন জাদু ঘরে স্থান পেয়েছে। কিন্তু হৃদয়কে ছুঁয়ে যাওয়ার সেই আকুলতা সেই প্রেমের নান্দনিক উপস্থাপনার যে কলাকৌশল আমরা তার কবিতার মধ্যে লক্ষ করতে পারি। এই প্রেমিকার কাছে প্রেমিকের যে আকুলতার ব্যঞ্জনা, বর্ণনা, হৃদয়ের কাছে হৃদয় খুলে দেওয়ার যে বক্তব্য। এই বক্তব্যের ভেতর দিয়ে আসে একটা চিরকালীন সৌন্দর্য। আল মাহমুদের মতো অনেক কবি কবিতায় সৌন্দর্য উপস্থাপন করে নিজের সৌন্দর্যপ্রীতির সাক্ষর রাখতে সক্ষম হয়েছে।

এ ছাড়া আরো অনেক কবির নাম উল্লেখ করা যেতে পারে। লিখিত কবিতা সৃষ্টির শুরু থেকেই কবিতায় নান্দনিকতার ছোঁয়া থাকলেও অধিকাংশ কবি তা কবিতায় তুলে আনতে ব্যর্থ হয়েছেন। ফলে কেউ কেউ কবি হিসেবে স্বীকৃতি পেলেও পাঠক মহল বেশির ভাগ শব্দশ্রেমিককে কবি হিসেবে স্বীকৃতি দেননি। আগেও বাংলা সাহিত্যে অধিকাংশ পাঠকপ্রিয় কবি কবিতায় সৌন্দর্যের বিষয়টি খুব সচেতনভাবে উপস্থাপন করেছেন। ফলে তারা অনন্য এক উচ্চতায় নিজেদের তুলে রেখেছেন।

সৌন্দর্য বর্ধনে, পরিমার্জনে অনেক সময় কবিকে ছন্দের মাত্রায়ও হেরফের করতে দেখা গেছে। তবে বাংলাদেশের প্রধান কবিদের একজন কবি শামসুর রাহমান ‘স্বাধীনতা তুমি’ এই কবিতার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার যে স্বপ্ন যে সম্ভাবনা যে প্রত্যাশা সেই প্রত্যাশার এক নান্দনিক চিত্র উপস্থাপন করেছেন। তিনি লিখেছেন—

‘স্বাধীনতা তুমি/রবিঠাকুরের অজর কবিতা, অবিনাশী গান।/স্বাধীনতা তুমি/কাজী নজরুল ঝাঁকড়া চুলের বাবরি দোলানো/মহান পুরুষ, সৃষ্টিসুখের উল্লাসে কাঁপা-/স্বাধীনতা তুমি/শহীদ মিনারে অমর একুশে ফেব্রুয়ারির উজ্জ্বল সভা/স্বাধীনতা তুমি/পতাকাণ্ডশোভিত স্লোগান-মুখর ঝাঁজালো মিছিল।/স্বাধীনতা তুমি/ফসলের মাঠে কৃষকের হাসি।/স্বাধীনতা তুমি রোদেলা দুপুরে মধ্যপুকুরে গ্রাম্য মেয়ের অবাধ সাঁতার।/স্বাধীনতা তুমি/মজুর যুবার রোদে ঝলসিত দক্ষ বাহুর গ্রন্থিল পেশি...।’ (কবিতা : স্বাধীনতা তুমি)

ফলে পাঠকরা হয়ে ওঠেন আত্মবিশ্বাসী স্বপ্নচারী সিদ্ধপুরুষ। আর ‘স্বাধীনতা তুমি’ হয়ে ওঠে বাংলাদেশের এক শ্রেষ্ঠ দলিল। এই দলিলের পেছনে মূলত কবির নান্দনিক চিন্তা চেতনা, সৌন্দর্য বোধের কলাকৌশল কারিশমা ছন্দ উপমা চিত্রের মধ্য দিয়ে পাঠকের হৃদয়ে পৌঁছে সত্য প্রেম এবং পবিত্রতার এক অলৌকিক ঝলক। ফলে যারা এই কবিতা পড়েন, বুঝতে পারেন, উপলব্ধি করতে পারেন তারা খুঁজে পান সত্য সুন্দর ও সৌন্দর্যের এক অপার চিত্রপট। যে জগতের কথা আমরা প্রতিনিয়ত আমাদের স্বপ্নের ভেতরে আমাদের চাওয়া-পাওয়ার ভেতরে আমাদের কামনা-বাসনার মধ্যে লালন-পালন করে থাকি। কবিতার সৌন্দর্য নিয়েই পৃথিবীর পাঠকপ্রিয় কবিরা তাদের কবিতাকে পাঠকের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। ফলে আজও কবিতায় মানুষ বিভোর হয়ে থাকে। কবিতায় প্রশান্তি খোঁজেন।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
কবিতা,এনাম রাজু,সাহিত্য
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close