সাপেই মরণদশা সাপুড়ের
মস্ত বড় এক অজগর দিয়ে খেলা দেখান এই সাপুড়ে। এটাই তার পেশা। টেলিভিশনে দেখা বা ক্যামেরায় ধারণ করা কোনো কাটছাঁট ভিডিও নয়, একেবারে রাস্তায় অসংখ্য মানুষের সামনে সরাসরি খেলা দেখান তিনি। তবে এবার নিজেরই পোষা অজগরের কবলে পড়ে প্রাণটা খোয়াচ্ছিলেন এই সাপুড়ে। গত শুক্রবার ভারতের উত্তর প্রদেশের মাও শহরে এ ঘটনা ঘটে।
ভিডিওতে দেখা যায়, নাম না জানা এই সাপুড়ে রাস্তায় খেলা দেখাচ্ছেন। খুবই দক্ষতা আর পারদর্শিতার সঙ্গে অজগরটিকে এক হাত হতে অন্য হাতে, শরীরের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিচ্ছিলেন সাপুড়ে। আর সব সময়ের মতোই তার শরীরে পেঁচিয়ে বেড়াচ্ছিল অজগরটি। একসময় সাপুড়ের ঘাড়ে এসে প্যাঁচ দেয় অজগর। কিন্তু হঠাৎ বিগড়ে যায় সে। নিজের শরীর ক্রমশ সংকুচিত করতে থাকে, যেন কোনোভাবেই ছুটে না যায় শিকার।
এদিকে শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হওয়ার উপক্রম সাপুড়ের কিন্তু সামনে দাঁড়িয়ে থাকা দর্শক ভাবছে, এটা খেলারই অংশ। সাপুড়ে বাঁচার জন্য হাত দিয়ে দর্শকদের সরে যেতে ইশারা দেন। আর পর মুহূর্তেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। দর্শকের ভুল ভাঙল তখন, যখন তারা দেখল সাপুড়ে তো উঠছেন না, নড়াচড়াও বন্ধ হওয়ার পথে।
এরপর সাহস করে একজন পেঁচিয়ে থাকা অজগরের লেজটা ধরে সরিয়ে দেন। আর তার পরই ধীরে ধীরে সাপুড়ের গলা ছাড়তে শুরু করে আজগর। কিন্তু অজগরের প্যাঁচে সাপুড়ে এতটাই কাহিল হয়ে পড়েন যে, তিনি আর উঠে দাঁড়াতেই পারছিলেন না। দর্শকরা সাপুড়ের চোখে মুখে পানি ছিটিয়ে দেন। জ্ঞান ফিরলেও অবস্থা বেগতিক দেখে তাকে বারানসির কাছের এক হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এই মাসেরই ১৮ তারিখ মালয়েশিয়ার সর্পরাজখ্যাত আবু জারিন হোসেনের মৃত্যু হয় একটি বন্য গোখরা সাপের ছোবলে। সাপ নিয়ে নানারকম কসরত দেখাতে পারদর্শী ছিলেন তিনি। সাপকে আঘাত না করে বশ করার নানা কৌশল নিয়ে প্রশিক্ষণও দিতেন। কিন্তু সাপের ছোবলেই প্রাণ যায় তার।
আবু জারিন হোসেন কুয়ালালামপুরের অগ্নিনির্বাপণকর্মী হিসেবে কাজ করতেন। তার মৃত্যুর পর ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক খাইরুদ্দিন দ্রাহমান বলেন, ‘এটি বন্য গোখরা ছিল। একটা কামড় একটা হাতিরও জীবন কেড়ে নিতে পারে। আমরা মেধাবী কর্মকর্তাকে হারালাম। এটা মর্মান্তিক।’
পিডিএসও/তাজ