পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ পারাপারে নরসিংদীর মনোহরদী ও গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার দুইটি ইউনিয়নের আটটি গ্রামের মানুষের একমাত্র ভরসা সাঁকোয়। নদটির উপর একটি পাকা সেতুর অভাবে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন স্থানিয়রা। স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ প্রায় সাত হাজার মানুষকে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো পরাপার হয়। এই দুই উপজেলার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি এখানে একটি পাকা সেতু নির্মাণ হলে তাদের ভোগান্তি লাগব হবে।

মনোহরদী উপজেলার দৌলতপুর গ্রাম এবং গাজীপুর জেলার কাপাসিয়ার সনমানিয়া ইউনিয়নের মির্জানগর গ্রামের সীমানা ঘেঁষে বয়ে গেছে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ। দৌলতপুর ইউনিয়নের কোচেরচর, কীর্ত্তিবাসদী, নিশ্চিন্তপুর, কেরানীনগর, এবং সনমানিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণগাঁও, মির্জানগর, সনমানিয়া, আড়াল গ্রামের মানুষ এ নদের ওপর দিয়ে চলাচল করেন।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি বছর শুস্ক মৌসুমে দুই পাড়ের লোকজন মিলে বাঁশ সংগ্রহ করে সাঁকো তৈরী করে তার ওপর দিয়ে চলাচল করেন।

গ্রামবাসী বলেন, বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করে প্রতিদিন দুটি কলেজ, দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, একটি ফাযিল মাদ্রাসা ও তিনটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষার্থীসহ প্রায় সাত হাজার মানুষ চলাচল করে থাকেন।

দৌলতপুর গ্রামের বাসিন্দা বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থী আল-ফাহাদ জানায়, ‘উভয় পাড়ের শিক্ষার্থীরা স্কুল-কলেজ, মাদরাসায় যেতে নানা দুর্ভোগ পোহাতে হয়। দূর-দূরান্ত থেকে আগত অনেক মেহমানেরই সাঁকোতে চড়ার অভ্যাস নেই এবং ছোট-ছোট শিশুরা দীর্ঘ সাঁকো বেয়ে নদ পাড়ি দিতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়। তাছাড়া রাতের বেলায় অন্ধকারে নদ পাড়ি দিতে গিয়ে অনেকে ডাকাতের কবলে পড়ে আহত হওয়ার নজিরও আছে। হাজার হাজার মানুষের ভোগান্তি নিরসনে এখানে দ্রুত একটি সেতু নির্মাণ প্রয়োজন।’

সনমানিয়া ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি অ্যাড. আব্দুল মালেক ভূঁইয়া মুঠোফোনে জানান, ‘মির্জানগর চরে সারাবছরই উৎপাদিত শাক-সবজি দৌলতপুরের রথথলা বাজার, লাখপুর বাজার, কোচেরচর নতুন বাজার, হাতিরদিয়া বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে নিয়ে যেতে সাঁকো ব্যবহার করতে হয়। এখানে একটি সেতু নির্মাণ হলে শিক্ষার্থী নির্ভয়ে তাদের স্কুল কলেজে যেতে পারবে এবং ব্যবসায়ীরাও তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী পরিবহন এবং দ্রুত সময়ে বাজারজাত করতে পারবেন।’

দৌলতপুর ইউপি চেয়ারম্যান হাদিউল ইসলাম জানান, ‘পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদে সেতু নির্মাণ সনমানিয়া ও দৌলতপুর ইউনিয়নের জনগনের প্রাণের দাবি। এখানে সেতু নির্মাণের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে একটি লিখিত আবেদন জানিয়েছি। এটি বাস্তবায়িত হলে দুই এলাকার আর্থ সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি ভ্রাতৃত্বের সেতুবন্ধন তৈরী হবে।’

"