নিজস্ব প্রতিবেদক
বৃষ্টিতে যানজট ঢাকায় মহাদুর্ভোগ
বৃষ্টির সঙ্গে যানজটে রাজধানীবাসীর দুর্ভোগের মাত্রা বেড়েছে কয়েক গুণ। মঙ্গলবার ও বুধবার দিনভরই বৃষ্টির সঙ্গে যানজট যেন পাল্লা দিয়েছিল। অপরিকল্পিতভাবে সড়ক খোঁড়াখুঁড়ি, ড্রেনের পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। আর এ কারণে যানবাহনের ধীরগতি যানজটকে সহনীয় মাত্রার বাইরে নিয়ে যায়। এতে কর্মজীবী মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হন। যানজটে আটকা পড়ে ১০ মিনিটের দূরত্ব পাড়ি দিতে এক থেকে দেড় ঘণ্টা পার হয়ে যায় অনেকের। কোনো কোনো স্পটে ভোগান্তি ছিল মাত্রাতিরিক্ত।
মুষলধারে বৃষ্টির কারণে রাজধানীর অনেক এলাকায় জলবদ্ধাতা তৈরি হয়েছে। কোনো কোনো রাস্তায় হাঁটু থেকে কোমর পানি জমেছে। গতকাল বুধবার গতকাল বৃষ্টির পানি ঢুকে মৌচাক মার্কেট, গোল্ডেন প্লাজার সামনের গলি, আনারকলি মার্কেটের সমানের অংশ তলিয়ে যায়। মৌচাক মার্কেটের তৈরি পোশাকের দোকানের মালিক আলমগীর রহমান বলেন, পানি ঢুকে পড়ায় বেচাকেনা বন্ধ। বৃষ্টি হলেই এই অবস্থা হয়। পানি ভেঙে ক্রেতারা আর এই মার্কেটে আসতে চান না। এ ছাড়া সিদ্ধেশ্বরীর খন্দকার গলি, তত্ত্বের গলিসহ আশপাশের গলিগুলোর পাশের বহুতল বাড়িগুলোর নিচে গাড়ি রাখার জায়গাগুলো পানিতে সয়লাব হয়ে যায়।
মৌচাক এলাকার ব্যবসায়ী হারুন আজাদ বলেন, মঙ্গলবার রাতে ভারী বৃষ্টি হওয়ায় এই এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। দোকানের সামনে হাঁটু পানি। কোনো ক্রেতা আসতে চান না। ফলে বেচাকেনা একেবারই বন্ধ।
এ ছাড়া ঢাকার সিদ্ধেশ্বরী, মালিবাগ, মগবাজার, মিরপুর, কাজীপাড়া, কাওরানবাজার, নাখালপাড়া, পল্টন, মতিঝিল, শান্তিনগর, শেওড়াপাড়া, মিরপুর, রাজারবাগ, বনানী, মুগদা, বাসাবো, রামপুরা, বাড্ডা, খিলগাঁও, মালিবাগ, পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় পানি জমে গেছে। রাজধানীর পার্শ্ববর্তী এলাকা শনিরআখড়া, কদমতলী ও রায়েরবাগের বিভিন্ন বাসায় পানি উঠেছে। এসব এলাকার নিচ তলায় যারা থাকতেন তাদের অনেকে বাসা ছেড়ে দিয়েছেন।
এ ছাড়াও রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত রাস্তার দুই প্রান্তে ১০০ ফুট চওড়া খাল খনন শুরু হয়েছে। ২০১৮ সালের মধ্যে এই প্রকল্প শেষ হলে খিলক্ষেত, নিকুঞ্জ, বিমানবন্দরের আশপাশের এলাকা, বসুন্ধরা, বনানী ডিওএইচএস, সেনানিবাস এলাকার জলাবদ্ধতা অনেকটাই দূর হবে বলে জানিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ- রাজউক।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ঢাকা দক্ষিণের কিছু এলাকায় উন্নয়ন কাজ চলছে, এ কারণে জলজট ও জলাবদ্ধতায় নগরবাসীর কিছুটা ভোগান্তি হচ্ছে সত্য। তবে আমরা ভোগান্তির মাত্রা কমিয়ে আনার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।
তিনি আরো বলেন, জলজট ও জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এ বছর ঢাকার দক্ষিণাংশের জলাবদ্ধতা অনেক কমেছে। আশা করছি, এবারের বর্ষায় বড় ধরনের কোনো জলজট বা জলাবদ্ধতা হবে না দক্ষিণ ঢাকায়। এ উদ্দেশ্যে নিরলসভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
"