খেলা প্রতিবেদক
মোহামেডানের এমন হার!
অনেক দিন পর ঢাকা লিগে আবাহনী-মোহামেডান দ্বৈরথটা উত্তেজনার রেণু ছড়িয়েছিল। কিন্তু সুপার লিগের ঢাকা ডার্বিটা বিন্দুমাত্র রোমাঞ্চ ছড়াতে পারেনি। দুদলের আগের ম্যাচটা রানবন্যায় হলেও কালকের লড়াইটা হলো রানখরার। মোহামেডানকে ১০০ রানে অলআউট করা আবাহনীর জয়ের জন্য খরচ করতে হয়েছে ৫ উইকেট। সুপার লিগে এ নিয়ে টানা দুই ম্যাচ জিতল ধানমন্ডির ক্লাবটি। সুপার লিগে প্রথম জয় পাওয়া মোহামেডানের এটা অবশ্য প্রথম হার।
ছোট লক্ষ্য তাড়ায় দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন লিটন। ষষ্ঠ ওভারে ফিরে যাওয়ার আগে ৪টি চার আর ৫টি ছক্কায় ২২ বলে খেলেন ৫০ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস।
সাজেদুল ইসলাম ৬১ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর লড়েছে মোহামেডান। দ্রুত ফিরিয়েছে মোহাম্মদ মিঠুন, নাজমুল হোসেন শান্ত, আফিফ হোসেন ও কাজী অনিককে। শুভাগত হোম চৌধুরীকে নিয়ে বাকিটুকু সহজেই সেরেছেন উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান সাদমান ইসলাম।
মোহামেডানের শামসুর রহমান ও জুবায়ের হোসেন নেন দুটি করে। লেগ স্পিনার জুবায়ের এক বছরের বেশি সময় পর খেললেন লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেট। গত বছরের ১৬ মে শেষ এই সংস্করণে খেলেছিলেন তিনি। লিটনের ঝড়ের মূল ঝাপটা গেছে তাইজুল ইসলামের ওপর দিয়ে। ৩ ওভারে ৪৩ রান দিয়ে উইকেটশূন্য বাঁহাতি এই স্পিনার।
এর আগে মোহামেডানের শুরু দেখে বোঝা যায়নি তাদের সামনে কী অপেক্ষা করছে। ২২ বলে দুটি করে ছক্কা-চারে ২৩ রানের ইনিসে দলকে ভালো শুরুই এনে দিয়েছিলেন শামসুর। পরপর দুই বলে শামসুর ও রনি তালুকদারকে বিদায় করে খেলার চিত্রটা পাল্টে দেন সাকলাইন সজীব। বাঁহাতি স্পিনারের তৃতীয় শিকার শামসুরের সঙ্গে ৩২ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়া সৈকত আলী।
১০ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলা মোহামেডান আর কক্ষপথে ফিরতে পারেনি। উদ্বোধনী জুটিকে ছাড়িয়ে যেতে পারেনি কোনো জুটি। মোহামেডানের রান তিন অঙ্কে নিয়ে যায় তাইজুল, সাজেদুল ও নাজমুল হোসেন মিলনের ছোট ছোট অবদান।
এদিক দুই প্রাইমের লড়াইয়ে জয় হয়েছে দোলেশ্বরের। কাল বিকেএসপিতে মার্শাল আইয়ুব ও শাহরিয়ার নাফীসের ব্যাটিং দৃঢ়তায় প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে প্রাইম দোলেশ্বর। সুপার লিগের দ্বিতীয় রাউন্ড শেষে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স ও আবাহনীর মতো দোলেশ্বরের পয়েন্টও ২০।
লক্ষ্য তাড়ায় ৫৮ রানে দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানকে হারানো দোলেশ্বরকে জয়ের পথে নিয়ে যান শাহরিয়ার ও মার্শাল। দুই জনে তৃতীয় উইকেটে গড়েন ১৪২ রানের চমৎকার এক জুটি।
৮৯ বলে ১০টি চার ও একটি ছক্কায় ৮৪ রানের দারুণ ইনিংস খেলা মার্শালকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন রায়হান উদ্দিন। খানিক পরে ফিরে যান বাঁহাতি টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান শাহরিয়ার। অধিনায়ক ফরহাদ রেজাকে নিয়ে বাকিটুকু সারেন ভারতীয় অলরাউন্ডার ভাটিয়া।
এর আগে জাকির হাসানের সঙ্গে ৫১ রানের উদ্বোধনী জুটিতে দলকে ভালো শুরু এনে দিয়েছিলেন মেহেদী মারুফ। তবে ভালোর সুবিধা ধরে রাখতে পারেনি প্রাইম ব্যাংক। ২৭তম ওভারে ১২০ রানেই বিদায় নেন ৫ ব্যাটসম্যান।
অভিমান্যু ঈশ্বরণের সঙ্গে ৭৩ রানের জুটিতে দলকে দুইশ’ রানের কাছাকাছি নিয়ে যান আসিফ। ৯৩ বলে ৫টি চার ও একটি ছক্কায় ৭১ রান করে ঈশ্বরণের বিদায়ের পর প্রায় একাই খেলতে হয়েছে আসিফকে।
৭১ বলে তিনটি চার ও একটি ছক্কায় অপরাজিত ৬২ রানের ইনিংসে দলকে আড়াইশ রানের কাছাকাছি নিয়ে যান আসিফ। দলকে জেতানোর জন্য এই রান অবশ্য যথেষ্ট ছিল না।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
গাজী ক্রিকেটার্স-শেখ জামাল
গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স : ৫০ ওভার, ৩৫০/৫ (মুনিম ৩৫, মুমিনুল ৬৬, নাসির ১৩৪* আহত অবসর, গুরকিরাত ৭৪; জিয়া ২/৫৬, সোহাগ ১/৭৫, সানি ২/৬১)
শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব : ৩৮.১ ওভার, ১৭৩ (চোপড়া ৩৭, আল মামুন ২৫, জিয়া ৪৬, রাজিন ২৫; হায়দার ৬/৩৫, হোসেন ১/২৮, গুরকিরাত ২/২৭, শুভ ১/৩৪)
ফল : গাজী ক্রিকেটার্স ১৭৭ রানে জয়ী
ম্যাচ সেরা : নাসির হোসেন
মোহামেডান-আবাহনী
মোহামেডান : ৩৩.৪ ওভারম ১০০ (শামসুর ২৩, সৈকত ১০, তাইজুল ১৪, নাজমুল ১৭, সাজেদুল ১৬; জায়েদ ২/২৩, সাইফউদ্দিন ১/১৭, মনন ৪/২১, সাকলাইন ৩/২৪)
আবাহনী : ১৫.৩ ওভার, ১০৪/৫ (লিটন ৫০, সাদমান ২৪*, মিঠুন ১৬; সাজেদুল ১/২২, জুবায়ের ২/১৮, শামসুর ২/৭)
ফল : আবাহনী ৫ উইকেটে জয়ী
ম্যাচ সেরা : সাকলাইন সজীব
প্রাইম ব্যাংক-প্রাইম দোলেশ্বর
প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব : ৫০ ওভার, ২৪১/৮ (মারুফ ৪৪, ঈশ্বরণ ৭১, আসিফ ৬২*, রায়হান ১৫*; রেজা ১/৪৯, সানি ২/৪০, ফেরদৌস ১/২৬, ভাটিয়া ৩/৫০)
প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব : ৪৮.৪ ওভার, ২৪২/৪ (ইমতিয়াজ ৩২, শাহরিয়ার ৭৮, মার্শাল ৮৪, ভাটিয়া ২৩*; রায়হান ২/২৮, আসিফ ১/৩৮, তাইবুর ১/৪৭)
ফল : প্রাইম দোলেশ্বর ৬ উইকেটে জয়ী
ম্যাচ সেরা : মার্শাল আইয়ুব
"