আগে থেকেই বড় একটা দুঃসংবাদ মুখোমুখি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সামনে। সেই দুঃসংবাদের কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের জন্য টেস্ট স্কোয়াড ঘোষণায় দেরি হচ্ছিল নির্বাচকদের। যার জন্য কাল দল ঘোষণায় একটি স্বস্তির খবরও এলো। চোটের কারণে উইন্ডিজের বিপক্ষেও ফেরা হচ্ছে না তামিম ইকবালের। তবে বাংলাদেশ দল ফিরে পেয়েছেন নিয়মিত টেস্ট অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে। চোট কাটিয়ে ফেরা অলরাউন্ডারের সঙ্গে টেস্ট দলে ফিরেছেন ওপেনার সৌম্য সরকার ও অফ স্পিনার নাঈম হাসান।

কেবল ১৩ জনকে চট্টগ্রাম টেস্টের জন্য ঘোষিত বাংলাদেশ স্কোয়াডে রাখা হয়েছে। একাদশের বাইরে খুব বেশি ক্রিকেটারকে বসিয়ে না রেখে আগামী বুধবার থেকে শুরু হতে যাওয়া বিসিএলে খেলার সুযোগ দিতেই দল তুলনামূলক ছোট করা হয়েছে। তবে আজ থেকে শুরু হওয়া ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে দুই দিনের প্রস্তুতি ম্যাচে বিসিবি একাদশের কেউ দারুণ কিছু করলে তার সুযোগ মিলতে পারে টেস্ট দলে।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের ১৫ জনের স্কোয়াড থেকে এই টেস্টে বাদ পড়েছেন বাঁ-হাতি স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপু, দুই পেসার আবু জায়েদ ও শফিউল ইসলাম এবং দুই ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্ত ও লিটন দাস।

গত ডিসেম্বরে নতুন করে টেস্ট অধিনায়ক মনোনীত হওয়ার পর দেশের মাটিতে এটিই হবে সাকিবের প্রথম টেস্ট। বছরের শুরুতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে আঙুলে চোট পাওয়ায় খেলতে পারেননি লঙ্কানদের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজেও। পরে মাঠে ফিরে নেতৃত্ব দিয়েছেন শ্রীলঙ্কায় নিদাহাস ট্রফির শেষ ভাগে ও গত জুলাই-আগস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে। কিন্তু সেপ্টেম্বরে এশিয়া কাপে সুপার ফোরের শেষ ম্যাচের আগে আঙুলের চোটের অবনতি হওয়ায় আবার ছিটকে যান তিনি। খেলতে পারেননি সদ্য সমাপ্ত জিম্বাবুয়ে সিরিজেও।

সৌম্য ও নাঈম পেয়েছেন এবার জাতীয় লিগে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পুরস্কার। ছয় ম্যাচে ২৮ উইকেট নিয়ে লিগের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি ছিলেন নাঈম। আট ইনিংসে ৬৭.২৮ গড়ে সৌম্য করেছিলেন ৪৭১ রান।

এখনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের স্বাদ না পেলেও টেস্ট দলে নাঈম নতুন মুখ নয়। বছরের শুরুতে নিউজিল্যান্ডে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলার সময় তাকে আচমকাই উড়িয়ে আনা হয়েছিল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট দলে জায়গা দিয়ে। চমক জাগিয়ে দলে নিলেও তখন খেলার সুযোগ পাননি ১৭ বছর বয়সী অফ স্পিনার। ১৫টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ৪৮টি উইকেট নিয়েছেন ছয় ফুট লম্বা নাঈম।

সৌম্য তার ১০ টেস্টের সর্বশেষটি খেলেছেন গত বছরের অক্টোবরে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে। এবার জাতীয় লিগের পারফরম্যান্স ও লিটন দাসের বাজে ফর্ম মিলিয়ে আবার সুযোগ পেলেন টেস্ট দলে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চার ইনিংসে লিটনের রান ৯, ২৩, ৯ ও ৬। সব মিলিয়ে ১২ টেস্টে ২৪ গড়ে করেছেন ৫০৪ রান। আসছে বিসিএল খেলে আবার হয়তো দলে ফেরার দাবি জানানোর সুযোগ পাবেন এই ব্যাটসম্যান।

এই সিরিজে লিটনের উদ্বোধনী জুটির সঙ্গী ইমরুল কায়েসও অবশ্য খুব বেশি সুবিধা করতে পারেননি। দুই টেস্টে করেছেন ৫, ৪৩, ০ ও ৩ রান। সর্বশেষ ২০ ইনিংসে তার কোনো ফিফটি নেই, সেঞ্চুরি নেই ৩০ ইনিংসে। এরপরও বাঁ-হাতি ওপেনার টিকে গেছেন দলে।

স্কোয়াডে পেসার কেবল দুজন। মুস্তাফিজুর রহমান ও সৈয়দ খালেদ আহমেদ। টেস্টের সম্ভাব্য উইকেট সম্পর্কে তাই ধারণা করা যায় সহজেই। শফিউল ইসলাম বাদ পড়েছেন না খেলেই। আরেক পেসার আবু জায়েদের বাদ পড়া খানিকটা বিস্ময়কর। গত ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে দারুণ বোলিংয়ের পর এবার সিলেট টেস্টেও খুব খারাপ করেননি তিনি। কিন্তু মিরপুর টেস্টের একাদশে জায়গা পাননি টিম কম্বিনেশনের কারণে। এখন নেই স্কোয়াডেই।

সিলেটে টেস্ট অভিষিক্ত নাজমুল ইসলাম অপুর বাদ পড়াটা এক রকম অনুমিতই। অভিষেকে যদিও দুই ইনিংসে উইকেট নিয়েছিলেন চারটি। তবে সাকিব ফেরায় এবং তাইজুল থাকায় তৃতীয় বাঁ-হাতি স্পিনার আর চায়নি দল।

আগামী বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে শুরু হবে সিরিজের প্রথম টেস্ট।

টেস্টের বাংলাদেশ দল

সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), সৌম্য সরকার, ইমরুল কায়েস, মোহাম্মদ মিঠুন, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, আরিফুল হক, মাহমুদউল্লাহ, মেহেদী হাসান মিরাজ, মুস্তাফিজুর রহমান, তাইজুল ইসলাম, সৈয়দ খালেদ আহমেদ, নাঈম হাসান।

"