নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৭ জানুয়ারি, ২০১৯

জুলহাস-তনয় হত্যা

ছক তৈরি হয় অনেক দিন ধরেই

প্রধান সন্দেহভাজন রিমান্ডে

রাজধানীর কলাবাগানে সমকামী অধিকার কর্মী জুলহাজ মান্নান ও তার বন্ধু মাহবুব তনয়কে কুপিয়ে হত্যার প্রধান সন্দেহভাজনকে গ্রেফতারের কথা জানিয়েছে কাউন্টার টেররিজম পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. ওবায়দুর রহমান জানান, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টা গাজীপুরের টঙ্গী এলাকা থেকে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সদস্যরা। তার নাম আসাদুল্লাহ (২৫) ওরফে ফকরুল ওরফে ফয়সাল ওরফে জাকির ওরফে সাদিক। তার গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার মদনপুর গ্রামে। বাবার নাম এমদাদুল হক। গাজীপুরের টঙ্গীতে মরকুন কবরস্থান গেট এলাকায় বাস করছিলেন তিনি।

এদিকে গ্রেফতার আসাদুল্লাহর তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল ঢাকা মহানগর হাকিম মামুনুর রশিদের আদালতে হাজির করে তদন্ত কর্মকর্তা ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত তিন দিনের মঞ্জুর করেন।

এর আগে গতকাল বুধবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে এক ব্রিফিংয়ে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান মনিরুল ইসলাম এসব কথা বলেন। এ নিয়ে এই ঘটনায় চারজন গ্রেফতার হলো।

ডিএমপি সূত্রে জানা গেছে, আসাদুল্লাহর পরিবার জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তার বাবা চুয়াডাঙ্গা জেলার মাধবপুর ইসলামিয়া মাদরাসায় শিক্ষকতা করতেন। তিনি সে সময় জামায়াতে ইসলামী রুকন ছিলেন। ২০০১ সালে মদনপুর দাখিল মাদ্রাসা থেকে পাস করেন আসাদুল্লাহ। এরপর যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে মেকানিক্যাল পড়া শুরু করেন। ২০১৫ সালে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমে যোগ দেন। ২০১৫ সালের শেষের দিকে সংগঠনে তার নাম দেওয়া হয় ফয়সাল। ২০১৬ সালে ১ জানুয়ারি যশোর থেকে ঢাকার উত্তর বাড্ডায় তাকে একটি বাড়িতে প্রশিক্ষণ দিতে নিয়ে আসা হয়।

মনিরুল ইসলাম বলেন, হত্যাকা-ের পর এই ঘটনা তদন্তের দায়িত্ব পায় সিটিটিসি। জুলহাস ও তনয় হত্যাকা-ে ১৩ জনের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তারা সবাই আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের বিভিন্ন সময়ের নেতা ও সদস্য। ঘটনার পর সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পাঁচজনকে শনাক্ত করা হয়। তবে হত্যাকা-ে সাতজন অংশ নেন। এদের মধ্যে দুজন বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। বাড়ির ভেতরে ঢোকেন পাঁচজন। ভুয়া কুরিয়ারের আইডি ও পার্সেল নিয়ে তারা ভেতরে ঢোকেন। আসাদুল্লাহসদুধুজন গেটের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা দারোয়ানকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করে আটকে রাখেন।

এ ঘটনায় গ্রেফতার অন্য তিনজন হলেন আরাফাত ওরফে শামস ওরফে সিয়াম ওরফে সাজ্জাদ, সায়মন ওরফে শাহরিয়ার এবং আবদুল্লাহ ওরফে জুবায়ের ওরফে জায়েদ ওরফে জাবেদ ওরফে আবু ওমায়ের। এই তিনজনই আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জুলহাস ও তনয়ের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করেন সায়মন ও জাবেদ। আরাফাত সরাসরি দুজনকে হত্যায় অংশ নেন।

মনিরুল ইসলাম বলেন, ঘটনার দিন টঙ্গী থেকে বাসে করে ঢাকায় আসেন আসাদুল্লাহ। ঘটনাস্থলে এসে নামাজ আদায় করে কিলিং মিশনে অংশ নেন তিনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close