গাজীপুর প্রতিনিধি

  ১৯ জুন, ২০১৮

পথসভায় জাহাঙ্গীর : হাসান আলোচনায়

আগামী ২৬ জুন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন। প্রায় দেড় মাস পর গতকাল সোমবার থেকে ফের শুরু হয়েছে এ নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা। এ নির্বাচনে মেয়র পদে সাতজন, সাধারণ কাউন্সিল পদে ২৫৪ এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৮৪জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সকাল থেকেই প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয়েছে প্রার্থীদের পক্ষে ভোট চেয়ে মাইকিং।

এ নির্বাচনে মেয়র পদে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থী গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. জাহাঙ্গীর আলম সকালে গাছা এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড কার্যালয়ের সামনে পথসভার মাধ্যমে এবং বিএনপি কেন্দ্রীয় নেতা হাসান উদ্দিন সরকার নিজ বাড়িতে নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে প্রচারণা শুরু করেন।

আওয়ামী লীগের মিডিয়া সেল জানায়, বেলা ১২টায় গাছা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড কার্যালয়ের সামনে পথসভায় মাধ্যমে মেয়রপ্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম প্রচারণা শুরু করেন। পথসভায় জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধারা আমাকে সন্তান হিসেবে ভালোবেসে আজ পথসভার আয়োজন করেছেন। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের দোয়া নিয়ে প্রচারণা শুরুর সুযোগ করে দেওয়ায় তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। গত নির্বাচনে বিএনপি মিথ্যাচার করে নৌকাকে নয়, গাজীপুরবাসীকে পরাজিত করেছে। পাঁচ বছর গাজীপুরবাসীকে উন্নয়নবঞ্চিত রেখেছে। প্রধানমন্ত্রী গাজীপুরকে একটি আধুনিক নগর হিসেবে গড়ে তুলতে ইউনিয়ন থেকে সিটি করপোরেশন করেছেন। গাজীপুর সিটিকে ঢাকার পাশে দ্বিতীয় ঢাকা রূপে একটি অত্যাধুনিক শহর হিসেবে গড়তে চাই। আপনারা আওয়ামী লীগকে, নৌকাকে সমর্থন করেন। ঘরে ঘরে মা-বোনদের কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চান। সকলের সহযোগিতা নিয়ে নৌকাকে বিজয়ী করতে চাই।’

মহানগর আ.লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মহিউদ্দিন মহির সভাপতিত্বে পথসভায় গাজীপুরের মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিত ছিলেন। মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে সাবেক এমপি জেলা ইউনিট কমান্ডার কাজী মোজাম্মেল হক, মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. আজমত উল্লাহ খান, জেলা আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ইকবাল হোসেন সবুজ, ডেপুটি কমান্ডার মোহর আলী, আবদুর রউফ নয়ন, জাতীয় পার্টি নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম বক্তব্য দেন।

বিকেলে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের এম এ রাজ্জাক মাস্টার দাখিল মাদরাসা, সন্ধ্যায় ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের ভোগড়া মধ্যপাড়া প্রাইমারি স্কুল মাঠ এবং ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসন স্কুল মাঠে পথসভায় বক্তব্য দেন। পথসভায় জাহাঙ্গীর বলেন, আপনারা যার যার অবস্থান থেকে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, প্রতিবেশী এবং ভাড়াটেদের কাছে ভোট চান। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে উন্নত গাজীপুর নগরী গড়ার জন্য আমাকে এবং প্রধানমন্ত্রীকে সহযোগিতা করুন।

বিএনপির মিডিয়া সেল জানায়, হাসান উদ্দন সরকার সোমবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর পর্যন্ত নিজ বাসভবনে কশিমপুর অঞ্চলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদ পুনর্মিলনী নির্বাচনী কৌশল নিয়ে আলোচনা করেন। এ সময় ২০ দলীয় জোটের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন, কেন্দ্রীয় সহ-শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান, জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি সালাহ উদ্দিন সরকার, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হোসেন, টঙ্গী থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম শুক্কর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

হাসান সরকার বিকেলে নগীরর কাউলতিয়া ও সন্ধ্যায় বাসন অঞ্চলে গণসংযোগ করেন। এ সময় কাউলতিয়া সালনা বাজারে স্থানীয় বিএনপির ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন হাসান উদ্দিন সরকার। এ সময় জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন, সাধারণ সম্পাদক কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল, কালিয়াকৈর পৌর চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান, গাজীপুর সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি নাজিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক সুরুজ আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে হাসান সরকার বলেন, বহু রক্ত ও মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার অর্থ এই নয় যে, মানুষের বাকস্বাধীনতা ও ভোটাধিকার থাকবে না।

এদিকে, সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা বিএনপি কার্যালয়ে ধানের শীষের প্রচারণার লক্ষ্যে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়। গাজীপুর পৌর বিএনপি সভাপতি মীর হালিমুজ্জামান ননীর সভাপতিতে সমাবেশে বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ডা. মাজহারুল আলম, জেলা বিএনপির সহসভাপতি আফজাল হোসেন কায়সার, আহামদ আলী রুশদী, যুগ্মসম্পাদক সাখাওয়াৎ হোসেন সবুজ, পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন তালুকদার প্রমুখ।

আইনি জটিলতায় নির্বাচনের প্রচারণা বন্ধ থাকলেও গত রমজান মাসে ইফতার ও দোয়া মাহফিলে শরিক হয়ে মুসল্লিসহ স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কুশল বিনিময় ও দোয়া চেয়েছেন প্রার্থীরা। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীরা এক বা একাধিক ইফতার ও দোয়া মাহফিলে অংশ নেন।

উল্লেখ, গত ১৫ মে এ নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। সীমানা-সংক্রান্ত একটি রিটের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত এ নির্বাচন স্থগিত করেন। পরে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ প্রার্থী এবং নির্বাচন কমিশন রিটের বিপক্ষে আপিল করলে আদালত ২৮ জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের আদেশ দেন। পরে নির্বাচন কমিশন ২৬ জুন নির্বাচনের নতুন তারিখ নির্ধারণ করে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist