মো. শাহ আলম, খুলনা
খুলনায় শরিকদের নিয়ে মাঠে নেমেছে বড় ২ দল
খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে শরিকদের নিয়ে মাঠে নেমেছে বড় দুই দল। এরই মধ্যে আওয়ামী লীগ মেয়রপ্রার্থীর পক্ষে গণসংযোগ, সভা-সমাবেশ ও সাংগঠনিক কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছেন শরিক ১৪ দলের নেতারা। অপরদিকে বিএনপির সঙ্গে ২০ দলীয় জোটের বৈঠক হলেও প্রকাশ্যে মাঠে নামেনি জামায়াত।
তাদের ৫০ হাজারের বেশি রিজার্ভ ভোট, যা সিটি নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে’ দাবি করে তারা বিএনপির সঙ্গে দেন-দরবারও শুরু করেছে। তবে এবার নির্বাচনী মাঠে কৌশলগত অবস্থান নিয়েছে জামায়াত।
খুলনা ও গাজীপুর সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের পক্ষে কেন্দ্রীয় ১৪ দল সমর্থন ঘোষণার পরদিনই খুলনায় বৈঠকে বসেছেন স্থানীয় নেতারা। এর আগে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আরেক দফা বৈঠক হয় ১৪ দল নেতাদের। এসব বৈঠকে আওয়ামী লীগ মেয়রপ্রার্থীর পক্ষে গণসংযোগ, সভা-সমাবেশ ও সাংগঠনিক কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। একই সঙ্গে নির্বাচন পরিচালনার জন্য গঠন করা হয়েছে ১৪ দলের কেন্দ্রীয় স্ট্যান্ডিং কমিটি।
খুলনা মহাগর ও জেলা ১৪ দলের সদস্যসচিব ও জাসদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মো. খালিদ হোসেন বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগ অফিসে একসঙ্গে বৈঠক করেছি। ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিটি পাড়া-মহল্লায়, ওয়ার্ডে ১৪ দল একত্রিত হয়ে নির্বাচন পরিচলনা করবে। কেন্দ্রীয়ভাবে একটি স্ট্যান্ডিং কমিটি থাকবে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সিটি নির্বাচনে আমরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাব।’
এদিকে, দলের মেয়রপ্রার্থী ও আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে উল্লেখ করে তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ১৪ দল। দলটির নেতারা মনে করেন, নির্বাচনী প্রচারণাকে বাধাগ্রস্ত করতে খুলনায় নির্বাচনকেন্দ্রিক এই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।
আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, ‘এই কিছুদিন থেকেই আমরা লক্ষ করছি, আমাদের নেতাকর্মীদের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করার অপচেষ্টা চলছে। নির্বাচনের এ সময় আমাদের দলের সেক্রেটারির বিরুদ্ধে অপপ্রচার জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াবে। সামনে জাতীয় নির্বাচন, এ সময়ে এ ধরনের বিভ্রান্তি সকলের জন্যই ক্ষতিকর। আমার মনে হয়, আমাদের সাংগঠনিক ভিত্তি মজবুত আছে। আমার মন যদি সঠিক থাকে, অবশ্যই এই নির্বাচনে ষড়যন্ত্র-অপপ্রচার প্রভাব ফেলতে পারবে না।’
অপরদিকে নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির শরিক ২০ দলীয় জোট বৈঠক করেছে। ঘরোয়া বৈঠকে বিএনপির মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের পক্ষে জনমত তৈরিতে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ২০ দলের নেতারা।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘এখানে শরিকরা তাদের সুযোগ-সুবিধা অনুযায়ী থাকবে। জামায়াতের সঙ্গে পুলিশ কীভাবে আচরণ করবে, সেই অনুযায়ী তাদের আলাদা কৌশল থাকতে পারে। তবে এতে আমাদের কোনো সমস্যা হবে না।’
বিএনপির শরিক দল জামায়াতের মহানগর সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মো. শাহ আলম বলেন, ‘১৯৯৪ সালে আলাদাভাবে সিটি নির্বাচনে জামায়াতের মেয়রপ্রার্থী অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার প্রায় ২৮ হাজার ভোট পেয়েছিলেন। মাঝে চব্বিশ বছর পার হয়েছে। এই সময়ে তাদের ৫০ থেকে ৭০ হাজার ভোট বেড়েছে, যা সিটি নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা বিএনপিকে সহযোগিতা দেওয়ার কথা বলেছি। পাশাপাশি সিটি নির্বাচনে ৫টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে জামায়াতের প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়ার জন্য বলেছি। তারা আমাদের সমর্থন দিলে আমরাও জামায়াতের ভোটব্যাংক নিয়ে তাদের সহযোগিতা করব।’ তিনি বলেন, ‘নেতাকর্মীদের নামে মামলা থাকায় জামায়াতের অনেকে প্রকাশ্যে প্রচারণায় থাকছেন না। তবে অনেকে জামিনে রয়েছেন, যারা সরাসরি প্রচারণায় অংশ নেবেন। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে নির্বাচনী প্রচারণায় কৌশলগত অবস্থান নিয়েছে জামায়াত।’
"