reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৪ এপ্রিল, ২০১৮

চাপ অব্যাহত রাখতে হবে

মিয়ানমার যাতে রোহিঙ্গাদের মর্যাদার সঙ্গে ফিরিয়ে নেয়, সে বিষয়ে দেশটির ওপর আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফোরাম থেকে চাপ অব্যাহত রয়েছে। এটি নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক দিক। যদিও মিয়ানমার কোনো চাপকেই গুরুত্ব দিচ্ছে না। তার পরও এ চাপ অব্যাহত রাখতে হবে। সেই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি জাতিসংঘ, কমনওয়েলথসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং প্রভাবশালী দেশগুলো শামিল হয়েছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা ও রাষ্ট্রগুলো ধীরে ধীরে মিয়ানমারকে নানা সুযোগ-সুবিধার বাইরে রাখার উদ্যোগ নিচ্ছে। এমনকি নির্বিচারে রোহিঙ্গা হত্যা ও নির্যাতনের অভিযোগে দেশটিকে ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিকভাবে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের দাবিও জোরালো হচ্ছে। আমরাও এ দাবির পক্ষে। কারণ, একাত্তরে বাংলাদেশের জনগণও এমন গণহত্যার শিকার হয়েছে। ফলে আমরা যেকোনো গণহত্যার বিপক্ষে। আমরা চাই, যত দ্রুত সম্ভব গণহত্যার অপরাধে মিয়ানমারকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হোক।

শেষ হওয়া কমনওয়েলথ সম্মেলনে রোহিঙ্গা সংকটে বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে কমনওয়েলথ। একই সঙ্গে ৫৩ জাতির সংস্থাটির সরকারপ্রধানরা সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ ও যারা এসব নিষ্ঠুরতার জন্য দায়ী, স্বাধীন তদন্তের মাধ্যমে তাদের জবাবদিহি নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু কোনো কিছুকে তোয়াক্কা না করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে গড়িমসি শুরু করেছে মিয়ানমার। নানা অজুহাত, শর্ত আর কৌশলে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করতে চায় দেশটির সরকার। এ সময়ের মধ্যে নামমাত্র মুখে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার কথা বলে আন্তর্জাতিক চাপ সামাল দিতে চায় দেশটি। ফলে সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপ বাড়াতে সরকারকে কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রাখতে হবে। আর সেই প্রচেষ্টাই অব্যাহত রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কূটনৈতিক তৎপরতার পাশাপাশি তিনি নিজেও বিভিন্ন সংস্থা ও রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নিয়ে ও সফরকালীন সময় দ্বিপক্ষীয় আলোচনায়ও তিনি মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়াতে আহ্বান জানাচ্ছেন। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে মিয়ানমারের ওপর নতুন করে চাপ বাড়াচ্ছে এসব রাষ্ট্র ও সংস্থা। তবে এ সমস্যা সমাধানে ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, চীনসহ প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলোর জোরালো উদ্যোগ প্রয়োজন। এ বিষয়ে সরকারকে আরো তৎপর হতে হবে। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে সম্প্রতি জেনেভায় একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। আমরা যত দ্রুত সম্ভব এ চুক্তির বাস্তবায়ন দেখতে চাই। সামনে বর্ষা। এখনই প্রকৃতি যে বিরূপ আচরণ শুরু করেছে, মাস কয়েক পরে তা আরো ভয়ংকর হয়ে উঠবে। ফলে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জীবন আরো দুর্বিষহ হয়ে উঠবে। এ বাস্তবতায় এখনই যদি এ সমস্যার সমাধান সম্ভব না হয়, তাহলে চরম ভোগান্তির

শিকার হবে রোহিঙ্গরা।

আমরা মনে করি, যেকোনো আন্তর্জাতিক চাপ ইতিবাচক। তবে তা মিয়ানমার সরকারের রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কতটা পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবে, তা খতিয়ে দেখতে হবে। বিশ্বব্যাপী ব্যাপক সমালোচনা সত্ত্বেও মিয়ানমার একে মোটেই গুরুত্ব দিচ্ছে না। তা সত্ত্বেও রোহিঙ্গা নিপীড়ন বন্ধে এবং তাদের অবিলম্বে ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশকে বিশ্বব্যাপী জনমত সৃষ্টির জন্য জোর কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রাখতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist