reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৯ জানুয়ারি, ২০১৮

পাঠ্যপুস্তকে ভুল সংশোধন জরুরি

শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই বিতরণ নিঃসন্দেহে সরকারের একটি বড় সাফল্য। বিশেষ করে দরিদ্র অভিভাবকদের জন্য এ এক পরম পাওয়া। রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এই সহায়তা তাদের আর্থিক কষ্টের বোঝা যেমন লাঘব করেছে, তেমনি অভিভাবকরাও ছেলেমেয়েদের শিক্ষাদানের ব্যাপারে আগের চেয়ে অনেক বেশি সচেতন হয়েছেন, যা আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা বিশেষ করে প্রাথমিক স্তরে শিক্ষাদানকে আরো গতিশীল ও ত্বরান্বিত করবে। তবে প্রতি বছর পাঠ্যপুস্তকে ভুলের কারণে এমন একটি শুভ উদ্যোগকে বারবারই বিতর্কের মধ্যে পড়তে হচ্ছে। যার খেসারত দিতে হয় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের। ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়ার পরিবর্তে সংশ্লিষ্টরা বরং নতুন নতুন ভুলের পুনরাবৃত্তি ঘটাচ্ছেন, যা থেকে রেহাই পায়নি চলতি বছরের পাঠ্যপুস্তকও। এটি অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে নিম্নমানের কাগজ দিয়ে এবারো পাঠ্যবই ছাপার অভিযোগ উঠেছে। এমনকি সম্পাদনা বিভাগের দায়সারা কাজের প্রতিফলন ঘটেছে বিভিন্ন বইয়ের পৃষ্ঠায়। বই ছাপানোর ক্ষেত্রে এনসিটিবির নির্ধারিত নীতিমালাও অগ্রাহ্য করেছেন অনেক প্রকাশক। দীর্ঘদিন ধরে পাঠ্যপুস্তক নিয়ে এসব জালিয়াতির সঙ্গে এনসিটিবির কতিপয় কর্মকর্তা ও কর্মচারী ইউনিয়নের নেতারা জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে এসব অপকর্মের অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এনসিটিবির কড়া নজরদারি না থাকায় একের পর এক অপরাধ করেও তারা পার পেয়ে যাচ্ছে। গতকাল প্রতিদিনের সংবাদে প্রকাশিত ‘অযতেœর ছাপ পাঠ্যবইয়ে’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী-শিক্ষাবিদ ও সংশ্লিষ্টদের মতামত তুলে ধরে উল্লেখ করা হয়, চলতি বছর সরকারের বিলি করা পাঠপুস্তকেও অসংখ্য ভুলভ্রান্তি ও অসংগতি ধরা পড়েছে, যা শিক্ষার্থীদের মনে বিভ্রান্তি ছড়াতে পারে। ছাপাও অত্যন্ত নিম্নমানের। ভুল রয়েছে বানানে ও শব্দ চয়নে। বলা সংগত যে, শিশুদের ভুল বই পড়িয়ে শিক্ষার মান উন্নয়ন করা সম্ভব নয়। ছোট থেকেই যদি শিশু-কিশোররা ভুল শিখে বড় হয়, তবে মেধার বিকাশ ঘটাতে বাধা সৃষ্টি হবে। এর দায়ভার এনসিটিবির কর্মকর্তাদের। দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের ভুলের প্রভাব পুরো জাতির ওপর পড়ছে। এ কারণে শিশুদের ভুল দিয়ে শিক্ষাজীবন শুরু করতে হচ্ছে। ভুলে ভরা এসব পাঠ্যবই যত দ্রুত সম্ভব সংশোধন করা উচিত।

অন্যদিকে একই বিষয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশ (টিআইবি) সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এনসিটিবির পা-ুলিপি প্রণয়ন ও পাঠ্যপুস্তক প্রকাশনা এবং সরবরাহের ২০টি ধাপের মধ্যে ১৭টি ধাপে অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে তাদের প্রতিবেদনে জানায়, এ কাজে জাতীয় পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান থেকে পিয়ন পর্যন্ত জড়িত। সম্মানীর নামে এ বছরের পাঠ্যবইয়ের কাজ থেকে তারা ইতোমধ্যে অর্ধ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এসব কার্যক্রমের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতে ১৬ দফা সুপারিশ পেশ করেছে দুর্নীতিবিরোধী এ সংস্থা। আমরা আশা করব, এনসিটিবি দ্রুত পাঠ্যপুস্তকের ভুলগুলো সংশোধনের উদ্যোগ নেবে। ভবিষ্যতে যেন এর পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেদিকেও খেয়াল রাখবে। পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন ও প্রকাশে যোগ্য ও জ্ঞানী ব্যক্তিদের সুযোগ দিতে হবে। যাতে ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীদের হাতে নির্ভুল ও স্বচ্ছ পাঠপুস্তক তুলে

দেওয়া সম্ভব হয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist