ড. মো. মাহমুদুল হাছান

  ০২ জুন, ২০১৯

মানসম্পন্ন শিক্ষায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল

কোন দেশের উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি সে দেশের শিক্ষা ও শিক্ষা কার্যক্রম। দেশের শিক্ষা কার্যক্রম উন্নত হলে সে দেশের সামগ্রিক ব্যবস্থাপনা আরো উন্নত ও গতিময় হয়। আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থাপনা উন্নয়নের জন্য সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে নানাবিধ কর্মসূচি গ্রহণ করার পাশাপাশি অনেক প্রতিষ্ঠানও স্থাপন করা হয়ে থাকে।

এদিক থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও দিনদিন বেড়েই চলেছে। রাজধানী ঢাকাতে এর সংখ্যা আরো বেশি হলেও গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করতে পারে এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেশ নগণ্য। গুটি কয়েক যেসব প্রতিষ্ঠান শিক্ষার মান নিশ্চিত করেছে তন্মদ্ধে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল (ডিআইএস) অন্যতম।

আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এবং একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মানসম্পন্ন শিক্ষা বাস্তবায়নে এ প্রতিষ্ঠান বহুলাংশে এগিয়ে। এটি ইংলিশ মিডিয়াম হওয়ার কারণে ছাত্রছাত্রীরা সফলভাবে তাদের মেধা ও মনন চর্চা করে এখান থেকে একটি আদর্শ শিক্ষা গ্রহণ করে থাকে।

মানসম্পন্ন শিক্ষা বলতে আমরা বুঝি এমন শিক্ষাকে যা শিক্ষার্থীরা গ্রহণের পর সে শিক্ষা ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের কল্যাণে ব্যবহৃত হয়। ডড়ষভংনঁৎম এর সংজ্ঞায় বলা হয়েছে অ মড়ড়ফ য়ঁধষরঃু বফঁপধঃরড়হ রং ঃযধঃ ঢ়ৎড়ারফবং ধষষ ষবধৎহবৎং রিঃয পধঢ়ধনরষরঃরবং ঃযবু ৎবয়ঁরৎব ঃড় নবপড়সব বপড়হড়সরপধষষু ঢ়ৎড়ফঁপঃরাব, ফবাবষড়ঢ় ংঁংঃধরহধনষব ষরাবষরযড়ড়ফ, পড়হঃৎরনঁঃব ঃড় ধ ঢ়বধপবভঁষ ধহফ ফবসড়পৎধঃরপ ংড়পরবঃরবং ধহফ বহযধহপব রহফরারফঁধষ বিষষনবরহম.”

অর্থাৎ যে শিক্ষা শিক্ষার্থীদের অর্থনৈতিকভাবে উৎপাদনশীল হতে শেখায়, টেকসই জীবিকা উন্নয়ন করে, শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক সমাজ গড়তে অবদান রাখে এবং ব্যক্তিসত্তাকে জাগ্রত করে তাই মানসম্পন্ন শিক্ষা। এক কথায়, যে শিক্ষা শিক্ষার্থীর ব্যক্তি চরিত্রকে সমুন্নত রেখে দেশ, জাতি ও সমাজকে আলোকিত করতে পারে তাকেই মানসম্পন্ন শিক্ষা বলা হয়।

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল মানসম্পন্ন শিক্ষা বাস্তবায়নে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। অত্র স্কুল শিক্ষার গুণগতমান নির্ধারণে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ছাত্রছাত্রীদের বিশেষ শিক্ষা প্রদান করে থাকে এবং বাস্তবে তার প্রতিফলন ঘটিয়ে তাদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করে। বিষয়গুলো নিম্নরূপ :

১। সমদর্শিতার গুণ : ডিআইএস সব ছাত্রছাত্রীদের বৈষম্যহীনতা, ন্যায়পরায়নতা ও সমদর্শিতার শিক্ষা প্রদান করে। শিক্ষাক্ষেত্রে অসাম্প্রদায়িকতা ও বিভাজন প্রক্রিয়া একটি প্রধান নেতিবাচক দিক বিধায় এখানে ধর্ম- বর্ণ ছেলেমেয়ে নির্বিশেষে সব ছাত্রছাত্রীদের সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করে তাদের মানবিক গুণাবলির শিক্ষা দেওয়া হয়।

২। সমসাময়িক ও সাম্প্রতিক বিষয়ে শিক্ষাদান : দেশ, জাতি, সমাজ ও পরিবারের প্রতি দায়িত্ববোধের শিক্ষা দেওয়া এ প্রতিষ্ঠানের আরেকটি বৈশিষ্ট্য। ছাত্রছাত্রীদের অতি সাম্প্রতিক বিষয়ের ওপর দৃষ্টি আকর্ষণ করে নিয়মিতভাবে জ্ঞান চর্চার জন্য অভিজ্ঞ শিক্ষকমন্ডলী সবসময় নিবেদিত থাকেন অত্র প্রতিষ্ঠানে। ফলে শিক্ষার্থীরা অল্প বয়সে তাদের দায়িত্ববোধের ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারে।

৩। শিক্ষার্থীবান্ধব শিক্ষা প্রদান : ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল শিক্ষার্থীবান্ধব শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করে তাদের অংশগ্রহণমূলক শিক্ষার প্রতি মনোনিবেশ তৈরি করে। ফলে শিক্ষার্থীরা মুক্ত জ্ঞান চর্চার মাধ্যমে তাদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ লাভ করে।

৪। টেকসই শিক্ষাব্যবস্থা : ‘পরিবর্তনই উন্নয়ন’ কথাটি মাথায় রেখে ডিআইএস ইতিবাচক পরিবর্তন সাধনের মাধ্যমে টেকসই যোগ্যতা ও ক্ষমতাধর্মী শিক্ষাদান করে থাকে। ফলে প্রতিটি শিক্ষার্থী নিজ নিজ যোগ্যতা অনুযায়ী সমাজ ও জাতির প্রতি কল্যাণকর ভূমিকা রাখতে পারে।

৫। ভারসাম্যপূর্ণ উপস্থাপন শক্তি অর্জন : অত্র প্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীদের দৈনন্দিন শিক্ষার পাশাপাশি নিজেদের অন্যের কাছে উপস্থাপন করার ভারসাম্যপূর্ণ যোগ্যতা অর্জনের শিক্ষা দেওয়া হয়। ফলে প্রতি শিক্ষার্থী তার মেধানুযায়ী নিজেকে সবার সামনে উপস্থাপন করে সমাজ ও দেশ গড়ার কাজে অংশগ্রহণ করতে পারে।

৬। শিখন ফল নিশ্চিত করা : ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল নির্দিষ্ট কেনো শিক্ষাপ্রদানের পর তার শিখন ফল নিশ্চিত করে শিক্ষার্থীকে উচ্চতর দক্ষতা অর্জন করতে সহযোগিতা করে। ফলে শিক্ষার্থীরা তাদের অর্জিত জ্ঞানের আলোকে জীবনের বাস্তবতায় প্রয়োগ করে আদর্শ জাতি গঠনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে।

৭। শ্রেণিবান্ধব পড়াশোনা : উচ্চতর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও অভিজ্ঞ শিক্ষকমন্ডলী দ্বারা পাঠদান করে শিক্ষার্থীকে শ্রেণিবান্ধব সুশিক্ষার প্রতি গুরুত্বারোপ করা এ প্রতিষ্ঠানের অন্যতম আরেকটি বৈশিষ্ট্য। শিক্ষকরা ছাত্রছাত্রীদের প্রতি এতটাই যতœশীল যে তারা স্কুলকেন্দ্রিক পাঠ গ্রহণে সদা উৎসাহী হয়ে থাকে।

৮। অংশগ্রহণমূলক শিক্ষা : শিক্ষকরা তাদের শ্রেণিকক্ষে অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতিতে পাঠদান করে থাকে। প্রত্যেক ছাত্রছাত্রী তাদের মুক্তচিন্তা চর্চা করে আনন্দচিত্তে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি শেয়ার করে থাকে। ফলে শিক্ষার্থীরা তাদের মেধা বিকাশের নিশ্চিত সুযোগ লাভ করতে পারে।

৯। শিক্ষক-শিক্ষিকার নিবিড় সম্পর্ক উন্নয়ন : শিক্ষক জ্ঞানদান করে আর শিক্ষার্থী তা গ্রহণ করে। প্রদান ও গ্রহণের মাঝে যদি নিবিড় সম্পর্ক না থাকে তবে সে শিক্ষা যেন অনেকটাই নিরর্থক হয়ে যায়। তাই ডিআইএসে শিক্ষক ও ছাত্রের মাঝে একটি নিবিড় সম্পর্ক তৈরির মাধ্যমে একটি আদর্শ শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করা হয়। ফলে শিক্ষার্থীরা তাদের জ্ঞানচর্চার মাধ্যমে আরো জ্ঞান অর্জনে ব্রতী হয়। শিক্ষার্থী-শিক্ষকের সম্পর্ক এ জাতীয় জ্ঞান আহরণের এক অবারিত সুযোগ অত্র স্কুলে নিশ্চিত হয়ে থাকে।

১০। নৈতিক মূল্যবোধের শিক্ষা : নীতিহীন শিক্ষা অশিক্ষা বা কুশিক্ষার নামান্তর। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিক মূল্যবোধের শিক্ষার প্রতি বেশ গুরুত্বারোপ করে থাকে। ব্যক্তি চরিত্র, মানবীয় গুণাবলি ও নৈতিক মূল্যবোধসহ উন্নত চরিত্র গঠনে এ প্রতিষ্ঠানটি নিয়মিত অ্যাসেম্বলি ও শ্রেণিতে বিশেষ আলোচনা করে থাকে। ফলে শিক্ষার্থী বিদ্যার্জনেই নয় বরং নৈতিক উন্নয়নেও অনেক শক্তিশালী হয়ে থাকে।

সুতরাং এ কথা দ্বিধাহীনভাবে বলা যায় যে, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রদান ও আদর্শ জাতি গঠনে এখন আলোকিত স্কুল। মনে রাখা দরকার শুধুমাত্র ভালো ফলাফল অর্জনই একজন শিক্ষার্থীর কাম্য হওয়া উচিত নয়, বরং ভালো মানুষ হওয়া প্রধান লক্ষ্য থাকা উচিত। আর এটি সম্ভব হয় ছাত্রছাত্রীদের মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে পারে এমন স্কুলে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার ব্যবস্থা করলে।

এসব বিবেচনায় এ কথা স্পষ্ট যে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল সর্ব সাধারণের জন্য এমন একটি মানসম্পন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, যাকে মা-বাবা তাদের সন্তানদের জন্য একটি আদর্শ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে বেছে নিতে পারে। আমরা আশা করি, অত্র স্কুলে পড়াশোনা করে যে কোনো শিক্ষার্থী বড় একজন সত্যিকারের মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close