আন্তর্জাতিক ডেস্ক
জাতিসংঘে ভারত-পাকিস্তানের কাদা ছোড়াছুড়ি চলছে
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে দোষারোপের কাদা ছোড়াছুড়ি চলছে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ গত শনিবার জাতিসংঘে দেওয়া এক ভাষণে তিনি বলেন, এই বিশ্বকে ইসলামাবাদ দিয়েছে ‘সন্ত্রাসী’, যেখানে ভারত উৎকৃষ্ট মানের চিকিৎসক আর প্রকৌশলীদের দিয়ে চলেছে। জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে পাকিস্তানকে আক্রমণ করে সুষমা আরো বলেন, ইসলামবাদ দুনিয়াকে দিয়েছে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আর এর সমান্তরালে ভারত তৈরি করে যাচ্ছে শীর্ষ পর্যায়ের চিকিৎসক ও প্রকৌশলী।
এর প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান জানায়, ভারত হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার সন্ত্রাসবাদের জন্মদাত্রী। তার সঙ্গে বর্ণবাদ আর ফ্যাসিবাদ চমৎকারভাবে জুড়ে দেওয়া হয়েছে।
জাতিসংঘে পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি মালিহা লোধির উদ্ধৃতি দিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, সবগুলো প্রতিবেশী দেশে ভারত সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়ে দিতে স্পন্সর করে।
পাকিস্তানকে উদ্দেশ করে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা তৈরি করেছি প-িত, চিকিৎসক আর প্রকৌশলী। আর তোমরা কী তৈরি করেছ? তোমরা বানিয়েছ সন্ত্রাসীদের।
প্রসঙ্গত, গত বছরের সেপ্টেম্বরে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের উরি সেনানিবাসে সন্ত্রাসী হামলায় ১৯ জন সেনাসদস্য নিহত হয়। ওই ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কূটনৈতিকভাবে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে উদ্যোগী হন। ওই হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং পাকিস্তানকে ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্র’ বলে মন্তব্য করেন। ওই ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করেন তিনি, যদিও ইসলামাবাদ তা অস্বীকার করেছে।
ওই হামলার ঘটনাকে ভিত্তি করেই গত বছর সুষমা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে দেওয়া ভাষণে বলেন, যেসব জাতি সন্ত্রাসবাদের পরিচর্যা, লালন ও রফতানি করে যাচ্ছে তাদের চিহ্নিত করার সময় এসেছে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে যে যুদ্ধ শুরু হয়েছে, তারা সেই যুদ্ধে অংশ না নিলে তাদের বিচ্ছিন্ন করে দিতে হবে।
গতকাল স্বরাজ অ্যাসেমব্লিতে উপস্থিত পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শহীদ খাকান আব্বাসির কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া আশা করেন। পাক প্রধানমন্ত্রী সেখানে ভারতকে কাশ্মীরে ব্যাপক সেনা মোতায়েনের সমালোচনা করেছেন। সেই সঙ্গে কাশ্মীরের ওই নৃশংস হামলার ঘটনায় আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি করেছেন।
বক্তব্যের পর আব্বাসি জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। গুতেরেসকে ভারতীয় সীমান্তে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ছয়জন নিহত এবং আরো ২০ জন আহত হওয়ার বিষয়ে অবহিত করেন আব্বাসি।
"