আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আবেদন অগ্রাহ্য করে লিবিয়ার রাজধানীর দিকে এগিয়ে যাওয়া বিদ্রোহী বাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান ত্রিপোলির একমাত্র সচল বিমানবন্দরে বোমাবর্ষণ করেছে। গত সোমবারের এই হামলার পর ত্রিপোলির পূর্বাংশের শহরতলীতে অবস্থিত মিটিগা বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ, খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের। এই বিমান হামলাকে ‘মানবিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন’ বর্ণনা করে বিমান হামলার নিন্দা জানিয়েছেন লিবিয়ায় নিযুক্ত জাতিসংঘের দূত হাসান সালেমি। জেনারেল হাফতারের নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহী বাহিনী লিবিয়ান ন্যাশনাল আর্মির (এলএনএ) এক মুখপাত্র মিটিগা বিমানবন্দরে বিমান হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তাদের বাহিনী বিমানবন্দরটিতে শুধু পার্ক করে রাখা একটি মিগ বিমান লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে, কোনো বেসামরিক বিমানকে লক্ষ্যস্থল করেনি বলে দাবি করেছেন তিনি। মিটিগা বিমানবন্দরটি বন্ধ করে দেওয়ায় ত্রিপোলির বাসিন্দাদের একমাত্র বিকল্প এখন ২০০ কিলোমিটার পূর্বের মিসরাতা বিমানবন্দর।

ত্রিপোলিতে এলএনএ ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ত্রিপোলিভিত্তিক প্রধানমন্ত্রী ফায়েজ আল সেরাজের অনুগত বাহিনীগুলোর মধ্যে লড়াই আরেঅ তীব্র হয়েছে। লড়াই তীব্র হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হতাহতের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

পূর্ব-লিবিয়াভিত্তিক এলএনএ জানিয়েছে, গত কয়েক দিনের লড়াইয়ের তাদের ১৯ জন যোদ্ধা নিহত হয়েছেন এবং তারা ত্রিপোলির কেন্দ্রস্থলের আরো কাছে পৌঁছেছেন। ত্রিপোলির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, রাজধানীর দক্ষিণাংশে লড়াইয়ে তাদের যোদ্ধা ও বেসামরিকসহ অন্তত ২৫ জন নিহত ও ৮০ জন আহত হয়েছেন

প্রত্যক্ষদর্শীরা গত সোমবার বিকেলে জানিয়েছেন, ত্রিপোলির পুরোনো পরিত্যক্ত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে এলএনএ এবং নিয়ন্ত্রণ হারানোর পর তারা এয়ারপোর্ট রোড থেকে তাদের অবস্থান সরিয়ে নিয়েছে। ঘটনাস্থলে অবস্থান করা রয়টার্সের এক সাংবাদিক ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ত্রিপোলি সরকারের অনুগত বাহিনীগুলোকে পরিত্যক্ত ওই বিমানবন্দরটির ভেতরে দেখা গেছে। বিমানবন্দরটির দক্ষিণে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে এলএনএ’র লড়াই আরো তীব্র হয়ে উঠছে বলে জানিয়েছেন তারা।

পিছিয়ে যাওয়ার আগে এলএনএ বাহিনী বিমানবন্দর থেকে অগ্রসর হয়ে ত্রিপোলির কেন্দ্রস্থলের ১১ কিলোমিটারের মধ্যে পৌঁছে গিয়েছিল বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

নিউইয়র্কের সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টেফেন দুজারিক জানিয়েছেন, ত্রিপোলির ভেতরে ও আশপাশের ৩ হাজার ৪০০ বাসিন্দা বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, জরুরি সেবা সংস্থাগুলোকে হতাহত ও বেসামরিকদের কাছে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।

লড়াইয়ে শহরের বৈদ্যুতিক লাইনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

"