আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১৩ মার্চ, ২০১৯

ছয় দিনের বিদ্যুৎ বিভ্রাটে বিপর্যস্ত ভেনিজুয়েলা

ভেনিজুয়েলায় গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিভ্রাট অব্যাহত রয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার টানা ষষ্ঠ দিনের মতো বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ফলে জনগণের নাভিশ্বাস ওঠেছে। বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট, ব্যাংক, ক্রেডিট কার্ডের মতো বিষয়গুলোও ব্যবহার করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। অব্যাহত বিদ্যুৎ বিভ্রাটে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।

বিদ্যুৎবিহীন অন্ধকারে বাড়ছে লুটপাটের মতো ঘটনা। বন্ধ হয়ে গেছে সুপার মার্কেটগুলো। সংবাদমাধ্যমগুলোর কাছে নিজেদের হতাশার কথা জানিয়েছেন দেশটির নাগরিকরা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গত সোমবার দেশজুড়ে স্কুল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত ভেনিজুয়েলার স্বঘোষিত প্রেসিডেন্ট হুয়ান গুয়াইদোর দাবি, বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে এ পর্যন্ত অন্তত ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে দায়ী করেছেন গুয়াইদো।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, গত কয়েক দিনের অব্যাহত বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে ভেনিজুয়েলায় রাতের অন্ধকারে কী ঘটছে তা অনুমান করা খুব সহজ নয়। সমর্থিত ভেনিজুয়েলার স্বঘোষিত প্রেসিডেন্ট হুয়ান গুইদোর দাবি, টানা বিদ্যুৎ বিভ্রাটে দেশের ৪০০ মিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে।

নির্বাচনী কারচুপির অভিযোগ আর অর্থনৈতিক সংকট ভেনিজুয়েলার জনগণকে তাড়িত করেছে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে। বিক্ষোভের সুযোগে গত ২৩ জানুয়ারি নিজেকে অন্তর্র্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন বিরোধীদলীয় নেতা হুয়ান গুয়াইদো। এরপরই তাকে স্বীকৃতি দেয় যুক্তরাষ্ট্রসহ ৫০টিরও বেশি দেশ। এরপর দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি শোডাউনের মধ্যেই গত ৮ মার্চ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে ভেনিজুয়েলার অর্ধেকেরও বেশি এলাকা। দেশটির ২৩টির মধ্যে ১৮টি রাজ্যেই অন্ধকারে কাটাতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, সরকারবিরোধীরা এই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে।

কর্মকর্তারা জানান, এই বিদ্যুৎহীন অবস্থায় ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে হাসপাতালগুলো। গুয়াইদো বলেছেন, এই পরিস্থিতিতে প্রাণ হারানো ১৭ জনকে মূলত মাদুরো সরকার ‘হত্যা’ করেছে। তিনি বলেন, ভেনিজুয়েলা একদম ধসে পড়েছে। এর ফল হচ্ছে ব্লাকআউট।

গুয়াইদো বলেন, ‘হাসপাতালে কোনো সেবা নেই। দেশের সেরা হাসপাতালগুলোর এই অবস্থা। যদি রাজধানীতে এই অবস্থা হয়, তাহলে প্রত্যন্ত এলাকায় কী অবস্থা। সেখানে জ্বালানি নেই, মৌলিক জিনিস নেই, নেই যোগাযোগের ব্যবস্থা। তাই সজ্ঞানে আপনি বলতেই পারেন যে ভেনিজুয়েলা ভেঙে গেছে।’

সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি দাবি করেন, এখন পর্যন্ত ১৭টি হত্যাকা-ের খবর পাওয়া যায়। এটা নিঃসন্দেহে হত্যাকাণ্ড।

ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো এই বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের উসকানিকে দায়ী করেছেন। তার দাবি, গত শনিবার যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত সরকারবিরোধীরা রাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে তা-ব চালিয়ে সেটি বিনষ্ট করে দিয়েছে।

টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও বলেন, খাবার নেই, ওষুধ নেই, এখন বিদ্যুৎও নেই। তারপর মাদুরোও থাকবে না। আর হুয়ান গুয়াইদোর দাবি, মাদুরো ক্ষমতা থেকে অপসারিত হলে আলো ফিরবে। সূত্র: বিবিসি, সিএনএন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close